শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হারুনের নামে সড়কের দাবি

  • সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদের কবর। ছবি: বার্তা২৪.কম

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদের কবর। ছবি: বার্তা২৪.কম

১৯৭১ সালে যারা নিজের জীবন দিয়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করেছিলেন তাদেরই একজন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির জামালপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাহাতিমোহন গ্রামের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদ। স্বাধীনতার মহান স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে মহান মুক্তিযুদ্ধে সেদিন ঝাঁপিয়ে পড়ে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুলিতে নিহত হন তিনি।

তারপর তার সহযোদ্ধারা তাকে সমাহিত করেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের জান্নাতুল মাউয়া গোরস্থানে। এরপর কেটে গেছে বহু বছর। স্বাধীনতার এতগুলো বছর কেটে গেলেও আজ পর্যন্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদের নামে এলাকায় কোনো প্রতিষ্ঠান নির্মাণ বা সড়কের নামকরণ করা হয়নি।

বিজ্ঞাপন

শুধু মাত্র ১৪ ডিসেম্বর বছরের একটি দিন স্থানীয় প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধারা কবরস্থানে গিয়ে ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তাছাড়া শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদের কবরটিও অযত্নে পড়ে আছে। এলাকার শিক্ষার্থীরা জানে না হারুন অর রশিদের বীরত্ব গাঁথা সম্মুখ যুদ্ধের কথা।

এখন এলাকাবাসী ও হারুন অর রশিদের স্বজনরা দাবি তুলেছেন তার নামে একটি সড়কের নামকরণের জন্য এবং তার সমাধিস্থলে প্রবেশের গেটে নামফলক স্থাপন করার।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জামালপুর জান্নাতুল মাউয়া গোরস্থানের একপাশে হারুন অর রশিদের কবর। গোরস্থানটি সার্বজনীন হওয়ায় বোঝার উপায় নেই কোনটি তার সমাধিস্থল। তার সমাধিস্থলে নেই কোনো নামফলক। তাছাড়া কবরস্থানটি জামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বালিকা বিদ্যালয়ের পেছনে হওয়ায় কেউ বুঝতে পারে না এখানে কোনো মুক্তিযোদ্ধার কবর রয়েছে।

জামালপুর কলেজের প্রভাষক মীর মনিরুজ্জামান বাবু বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে হারুন অর রশিদ সম্পর্কে এলাকাবাসী তেমন একটা জানে না। আমরা এলাকাবাসী চাই জামালপুর শহীদ মিনার থেকে কোলারহাটের সড়কটি তার নামে নামকরণ করা হোক।’

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদের ছেলে কওছার শেখ বলেন, ‘স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন তার কবরটি ভাঙা অবস্থায় পড়ে থাকলে বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ এটি পাকা করে দেন। পাকা করে দিলেও বাবার কবরটি চেনার কোনো উপায় নেই। কারণ এখানে অনেক কবর রয়েছে। বাবার কবরে কোনো নামফলক নেই। বাবার নামে একটি সড়কের নামকরণ এবং তার সমাধিস্থলে প্রবেশের গেটে নামফলক স্থাপন করার দাবি জানাচ্ছি।’

বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এলাকাবাসীর এ দাবি যৌক্তিক। এলাকাবাসী যদি আমাদের কাছে আবেদন করে তাহলে আমরা হারুন অর রশিদের নামে একটি সড়কের নামকরণের জন্য সুপারিশ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেব।’