২ মাসেও উদ্ধার হয়নি বেনাপোলে চুরি যাওয়া স্বর্ণ
বেনাপোল কাস্টমসের লকার খুলে ১৯ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনার প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক বা চুরি হওয়া স্বর্ণ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কাস্টমসসহ ব্যবসায়ীরা।
এদিকে কাস্টমসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে এখনও বহিরাগতদের দাপট থাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আবারও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, স্বর্ণ চুরির বিষয়টি সিআইডি তদন্ত করছে।
জানা যায়, বেনাপোল বন্দরে চোরাকারবারিদের কাছ থেকে জব্দ করা স্বর্ণসহ মূল্যবান সম্পদ জমা রাখা হয় কাস্টমস হাউজের লকারে। গত ৯ নভেম্বর সকালে লকার থেকে চুরি হয় ১৯ কেজি স্বর্ণ। তবে লকারে থাকা আরও স্বর্ণ, বৈদেশিক মুদ্রা ও অন্যান্য সম্পদ অক্ষত অবস্থায় ছিল। চুরির রহস্য ও জড়িতদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, সিসি ক্যামেরার নিরাপত্তার মধ্যে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এখন তথ্য-প্রযুক্তির সময় প্রশাসন যদি আন্তরিক হয়ে কাজ করে চোর ধরা কোন কঠিন কাজ হবে না।
ভারত-বাংলা ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট সাব কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, কাস্টমসে অবৈধ প্রবেশ রোধ করতে হবে। প্রয়োজনে রেজিস্টার ও ফিঙ্গার প্রিন্ট সিস্টেম চালু করা যেতে পারে।
শার্শা উপজেলা শাখা দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জান লিটু বলেন, কাস্টমসের অবহেলার কারণে সরকারের এ সম্পদ চুরির ঘটনা ঘটেছে।
মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক আলতাফ চৌধুরী বলেন, নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সরকারের এত বড় সম্পদ যারা অবহেলায় রেখেছিলেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
ব্যবসায়ী আজিম উদ্দীন গাজী বলেন, অপরাধীকে শনাক্ত করতে ব্যর্থ হলে আগামীতে এমন ঘটনা আবারও ঘটবে।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী বলেন, স্বর্ণ চুরির ঘটনা কাস্টমসের সব অর্জনকে যেন ম্লান করে দিয়েছে। চোরকে দ্রুত ধরা দরকার যেন আর কেউ ভবিষ্যতে সরকারের কোন সম্পদ চুরি করতে সাহস না পায়।
বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান বার্তা২৪.কমকে বলেন, এখন পর্যন্ত স্বর্ণ উদ্ধার বা ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে মামলাটি পোর্টথানা থেকে সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন তারা বিষয়টি দেখছে।
গত ৮ নভেম্বর সকালে বেনাপোল কাস্টমস অফিসে এসে কর্মকর্তারা দেখেন কে বা কারা কাস্টমসের লকার খুলে ১৯ কেজি স্বর্ণ চুরি করে নিয়ে গেছে। তবে সেখানে আরো স্বর্ণ, ডলার ও মূল্যবান সম্পদ ছিল, সেগুলো অক্ষত ছিল।
এ নিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পোর্ট থানায় মামলা করে। পুলিশ চোর সন্দেহে প্রথমে কাস্টমসের ৬ জনকে ধরলেও পরে তাদের ছেড়ে দেয়। মামলার কোন অগ্রগতি না হওয়ায় ২৭ নভেম্বরে মামলা চলে যায় সিআইডিতে। প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হলেও স্বর্ণ চুরির রহস্য উন্মোচন হয়নি।