‘মেহুলী বুটিক’ ও এক নারীর গল্প

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,গাইবান্ধা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নারী উদ্যোক্তা মীর শারমিন আকতার শিমু/ ছবি: বার্তা২৪.কম

নারী উদ্যোক্তা মীর শারমিন আকতার শিমু/ ছবি: বার্তা২৪.কম

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের পগইল গ্রামের নারী উদ্যোক্তা মীর শারমিন আকতার শিমু। তার পিতা মীর মোমিন হোসেন একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার এবং মাতা শাহিনুর বেগম একজন গৃহিণী। এক ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শিমু সবার ছোট।

ছাত্রজীবন থেকে শিমু স্বপ্ন দেখতেন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত এবং অন্যকেও কিভাবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া যায়। মা শাহিনুর বেগম ও বোন রোজি এবং বেবী তাদের নিজস্ব চাহিদা মেটাতে বাড়িতে জামা-কাপড়ের নানা ডিজাইন তৈরিতে সুই সুতা ও ব্লক বুটিকের কাজ করতেন। তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখাপড়ার পাশিপাশি মা-বোনদের হাতের ওই কাজটি শিখে ফেলেন শিমু।

বিজ্ঞাপন

এখান থেকেই স্বপ্নের শুরু। হস্তশিল্পের ডিজাইনের কাজটি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে তুলতে বায়না ধরেন পিতা-মাতার নিকট। এতে উৎসাহ দেন তার বাড়ির লোকজন সবাই।

বিজ্ঞাপন

২০০৭ সালে অনার্স পড়ার সময় ৪-৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে এই যাত্রা শুরু। তার হাতের তৈরি ওয়ান পিস, থ্রি পিস, শাড়ী, বেডশিট, রেডিড্রেস, পাঞ্জাবী, ফতুয়া নকশী কাঁথা মানুষকে আকৃষ্ট করতে শুরু করে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি শিমুকে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘মেহুলী বুটিক’। স্থানীয় হাট-বাজারের কাপড়ের দোকানে পৌঁছে যায় ‘মেহুলী বুটিক’র বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক।

বিয়ের পর শিমুকে ব্যবসার কাজে সাহায্য করেন তার স্বামী। দিন দিন মেহুলী বুটিক হাউজের ব্যবসা প্রসার ঘটতে থাকে। মেহুলী বুটিক হাউজে আরও ৩০ জন নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া হয়। শিমুর ‘মেহুলী বুটিক’র পোশাক অনলাইন ও কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বাজারজাত শুরু হয়েছে। এখানকার কর্মীরা মাসে মাসে ৫-৬ হাজার টাকা আয় করছেন। প্রতিষ্ঠানের সকল খরচ বাদে প্রতিমাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করছেন শিমু।

মেহুলী বুটিকের কারিগর মিশু আক্তার বলেন, নারী উদ্যোক্তা মীর শারমিন শিমু আপা হস্তশিল্পের এই বুটিকের কাজ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করায় মাসে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা আয় করতে পারছি। দিন দিন এ কাজের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মেহুলী বুটিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর শারমিন শিমু বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই চিন্তা চেতনা ছিল যে, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করাসহ অন্য নারীদেরও কিভাবে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা যায়। স্বপ্ন এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে এই ব্যবসাকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) রামকৃষ্ণ বর্মণ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, মেহুলী বুটিকের পরিচালক মীর শারমিন শিমুকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। তার প্রতিষ্ঠানের পোশাকাদি বিক্রির জন্য সহযোগিতা করা হবে।