নিজের তৈরি ৬০০ মাস্ক দুস্থদের বিতরণ করছেন শিক্ষিকা

অসহায়দের মাঝে মাস্ক বিতরণ করছেন এই শিক্ষিকা, ছবি: বার্তা২৪.কম
বগুড়ার ধুনট উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা ফৌজিয়া বিথী। তিনি উপজেলার বেলকুচি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সচেতনতায় মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে মাস্ক বিতরণ করছেন তিনি।
ব্যক্তিগত খরচে বাড়িতে নিজ হাতে সেলাই মেশিনে তৈরি করেছেন ছয় শতাধিক মাস্ক। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবার কখনো রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে দাঁড়িয়ে বিতরণ করছেন তৈরিকৃত এসব মাস্ক। ভ্যান-রিকশা চালক থেকে শুরু করে দিনমজুর এমনকি যারা ভিক্ষাবৃত্তি করেন তাদের হাতেও মাস্ক তুলে দিচ্ছেন ফৌজিয়া বিথী। পাশাপাশি করোনা সম্পর্কে তাদের সচেতন করছেন।
গত দুই সপ্তাহ ধরে তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন এই কার্যক্রম। শুধু তাই নয়, অবসর সময়ে এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে বিনা পারিশ্রমিকে মাস্ক তৈরি করে দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। একইসঙ্গে নিজের সাধ্যমত অর্থ দিয়েও সহযোগিতা করেছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী কয়েকটি সংগঠনকে। তার দেওয়া টাকায় করোনা সংক্রান্ত লিফলেট এবং জীবাণুনাশক বিতরণ করা হয়েছে এলাকায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফৌজিয়া বিথী মানুষের কাছে ‘মানবতাবাদী বিথী আপা’ নামে পরিচিত। গ্রামের অসহায় গরীব ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষ যেকোনো বিপদে পড়লে শরণাপন্ন হন বিথী আপার কাছে। গভীর রাতে গ্রামের কোনো নারী অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক পড়ে বিথী আপার। এ পর্যন্ত শতাধিক অসুস্থ নারীকে রাতে স্থানীয় এবং শহরের হাসপাতালে নিয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করেছেন তিনি। সমাজে কোনো অপরাধ দেখলে প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন ফৌজিয়া বিথী।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ফৌজিয়া বিথী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমার সাধ্যের মধ্যে যেটুকু পারি করে যাচ্ছি। মানুষ হিসেবে দেশের এই কঠিন সময়ে আমার কায়িক শ্রম দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছি, এটাই আমার বেঁচে থাকার আনন্দ।’