দাম নেই, হতাশ বগুড়ার সবজি চাষিরা
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মেঘা খর্দ গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম নিজের জমিতে চাষ করা ৫ মণ বেগুন বিক্রি করতে এসেছেন মহাস্থান হাটে। সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত রোদে দাঁড়িয়ে আছেন ক্রেতার আশায়। কিন্তু এই চার ঘণ্টায় বিক্রি করতে পারেননি এক কেজি বেগুন।
গাবতলী উপজেলার দাড়াইল গ্রামের কৃষক আব্দুল কাফী নিয়ে এসেছেন ৯ মণ টমেটো। ৫ টাকা কেজি দরেও বিক্রি করতে পারছেন না কষ্টে ফলানো টমেটো।
শনিবার (২৮ মার্চ) সরজমিনে বগুড়ার মহাস্থান হাট ঘুরে এসব দৃশ্য দেখা গেছে।
হাটে পর্যাপ্ত সবজি থাকলেও ক্রেতা একেবারেই কম। করোনাভাইরাসের প্রভাবে সব কিছুতে স্থবিরতা দেখা দেওয়ায় সবজির বাজারে এমন দরপতন। কৃষক হাটে সবজি বিক্রি করে উৎপাদন খরচ তো দুরের কথা ভ্যান ভাড়াই তুলতে পারছেন না। সব ধরনের সবজির দাম কম হলেও মুলা কেউ টাকা দিয়ে কিনছেন না। ফলে কৃষক হাটে মুলা বিক্রি করতে না পেরে ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছেন।
মহাস্থান পাইকারি হাট ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচামরিচ ৬ টাকা কেজি, বেগুন ২ থেকে ৪ টাকা, পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা পিস, বাঁধাকপি ১ টাকা পিচ, করলা ২০ টাকা কেজি, লাউ ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা পিচ, গাজর ৮ টাকা কেজি, টমেটো ৫টাকা থেকে কেজি, সজনা ডাটা ১০০ টাকা কেজি, ঢেঁড়স ৩০ টাকা কেজি, পটল ৩০ টাকা কেজি, লাল শাক ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রি করতে আসা কৃষকরা জানান, বাইরের জেলার কোনো ব্যাপারী সবজি কিনতে না আসায় সবজির দিন দিন কমে যাচ্ছে। অনেকের জমিতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বেগুন, টমেটো, মুলাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি।
শিবগঞ্জ উপজেলার খামারপাড়া গ্রামের কৃষক আজাদুর রহমান বার্তা ২৪.কম-কে বলেন চৈত্র মাসে বগুড়া অঞ্চলের মানুষ মুলা খেতে চায় না। তবে চট্টগ্রাম ও সিলেটে এসময় মুলার ব্যাপক চাহিদা থাকে। গতবছর চৈত্র মাসে ১১শ' টাকা মন দরে মুলা বিক্রি করেছিলেন। এ কারণে এবারও কয়েক বিঘা জমিতে মুলা চাষ করেছেন। কিন্তু, করোনাভাইরাসের প্রভাবে মুলা বিক্রি করতে পারছেন না। আজাদুর রহমান মুলা বিক্রি করতে পারলেও অনেকেই বিক্রি করতে না পেরে রাস্তার পার্শ্বে ফেলে দিয়ে বাড়ি ফিরছেন।
এদিকে পাইকারি বাজারে সবজির দাম একে বারে কম হলে শহরের খুচরা বাজার গুলোতে ৫-৬ গুণ বেশি দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে আমদানি কমের অজুহাতে তারা বেশি দামে সবজি বিক্রি করছেন।