দাবি আদায়ের অপর নাম সন্ত্রাস রাজু ভাস্কর্য



আরিফ জাওয়াদ, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
দাবি আদায়ের অপর নাম সন্ত্রাস রাজু ভাস্কর্য

দাবি আদায়ের অপর নাম সন্ত্রাস রাজু ভাস্কর্য

  • Font increase
  • Font Decrease

ন্যায়ের সঙ্গে আপোস না, নিজেদের অধিকার কিংবা দাবি আদায়ে একটি ভাস্কর্যের পাদদেশ নির্ভরতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ যেখানে দাঁড়িয়ে নিজের অধিকারের কথা বলে, ন্যায্য দাবির কথা বলে, কেউবা অনশনেও বসে তাঁদের দাবি আদায়ের আগ মুহূর্তে।

বলছিলাম দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস রাজু ভাস্কর্যের কথা। আন্দোলন সংগ্রামের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেমনটা জড়িত, তেমনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ১৯৯৭ পরবর্তী একটি নতুন নাম যুক্ত হয়েছে সন্ত্রাস রাজু ভাস্কর্য। ১৯৯৭ এর শেষভাগে তৈরি হওয়ার পর এ ভাস্কর্য যেম প্রতি নিপিড়ীত মানুষের কথা বলার এক আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে।

আজকের এ সন্ত্রাস রাজু ভাস্কর্যের পেছনে রয়েছে একটি লম্বা গল্প। যার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা মঈন হোসেন রাজুর নাম। জানা যায়, ১৯৬৮ সালের ২৯ শে জুলাই মঈন হোসেন রাজুর জন্ম। জন্ম বরিশালে হলেও বেড়ে ওঠেন চট্টগ্রাম ও ঢাকায়। ১৯৮৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মইন হোসেন রাজু ছিলন তৎকালীন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা। রাজুর নিয়মানুবর্তিতা ছিল চোখে পড়ার মতো। ক্লাস-পড়া-সংগঠনের কাজ সব কিছুতেই সে ছিল কর্তব্যনিষ্ঠ। সবার চেয়ে শান্ত রাজু ছিলেন বেশ দৃঢ় মনোবলের।

রাজধানীর শ্যামলীতে, যেখানে তার মা, বড়ভাই ও বোন থাকতেন। এই পরিবারের স্নেহধন্য জেদি ছেলে রাজুকে তাই পরিবারের টানে ও মায়ের অনুরোধে নিয়মিত বাসায় যেতে হতো। রাজু বাসায় যেত ঠিক, কিন্তু আবার ফিরেও আসত। বাসার চেয়ে ক্যাম্পাসে শহীদুল্লাহ হলের ১২২ নম্বর রুমে। রাজুর মন জুড়ে ছিল ক্যাম্পাস, বন্ধু-বান্ধব, সংগঠন, ছাত্রদের দাবি-দাওয়া-আন্দোলন। কিন্তু এ ক্যাম্পাস দাবি-দাওয়াই যেন তাঁর জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায় ; উৎসর্গ করতে হয় জীবন।

সালটি ১৯৯২, দেশে স্বৈরতন্ত্রের অবসানের পর কেবল এক বছর অতিবাহিত হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শুরু হয়ে গেছে তথাকথিত গণতান্ত্রিক দলগুলোর ক্ষমতা প্রদর্শন ও দখলদারিত্বের রাজনীতি। ১৯৯২ সালের ১৩ই মার্চ সকালে ছাত্রদল কর্মী, মতান্তরে ছাত্রশিবির কর্মীকে পেটাই করার মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাস উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এ ঘটনায় পুলিশের সাথে সাধারণ ছাত্রদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। দুপুরে সংঘর্ষ চলাকালীন কনুইয়ে ব্যথা অনুভব করলে চলে যান শহিদুল্লাহ হলের হলের ১২২ নাম্বার রুমে। সেদিন পড়ন্ত বিকেলে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের অস্ত্রধারীরা টিএসসিতে বন্দুকযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়, সঙ্গে পুলিশও জড়িয়ে পড়ে। পুরোপুরি বিশৃঙ্খলার চিত্র দেখা যায় পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে।

এর প্রতিবাদে রাজুর নেতৃত্বে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রঐক্য ভুক্ত’ বাম ছাত্রসংগঠনের কর্মীরা প্রতিবাদ মিছিল বের করে। মিছিলটি টিএসসির সড়কদ্বীপ প্রদক্ষিণ করার সময় ডাসের সামনে ‘অস্ত্র শিক্ষা একসাথে চলবে না’, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ এক হও’ এ স্লোগানে হাকিম চত্বরের দিকে এগোতে থাকলে একঝাঁক বুলেট মিছিল লক্ষ্য করে ছুটে আসে। এর একটি গুলি কপালে লাগে মিছিলের সামনে থাকা রাজুর। স্লোগান মুখে নিয়েই সে লুটিয়ে পড়ে টিএসসির স্বোপার্জিত স্বাধীনতা ভাস্কর্যের সামনে সড়ক দ্বীপের পাশের রাস্তায়।

১৯৯২ সালের ১৩ই মার্চের রাজুর আত্মত্যাগ স্মরণে এবং সন্ত্রাসবিরোধী চেতনা ধরে রাখার প্রত্যয়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু স্মারক ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়।

নানামুখী বাধা-বিপত্তির চড়াই-উৎরাই পেড়িয়ে অবশেষে ভাস্কর শ্যামল চৌধুরীর নকশায় ভাস্কর্যটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এতে সহযোগী হিসেবে কাজ করেন গোপাল পাল। আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক আতাউদ্দিন খান (আতা খান) ও মুন্সিগঞ্জ-বিক্রমপুর সমিতির সভাপতি লায়ন নজরুল ইসলাম খান বাদল। নির্মাণ কাজ শেষে ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১৭ তারিখে ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন উপাচার্য এ. কে. আজাদ চৌধুরী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র টিএসসি’র মোড়ে ভাস্কর্যটি নির্মিত এ ভাস্কর্য ১৬ ফুট দীর্ঘ, ১৪ ফুট প্রশস্ত এবং ১০ ফুট উঁচু। এই ভাস্কর্যে ৮ জনের অবয়ব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যাদের প্রতিকৃতি ব্যবহার করা হয়েছে তারা হলেন মুনীম হোসেন রানা, শাহানা আক্তার শিলু, সাঈদ হাসান তুহিন, আবদুল্লাহ মাহমুদ খান, তাসফির সিদ্দিক, হাসান হাফিজুর রহমান সোহেল, উৎপল চন্দ্র রায় ও গোলাম কিবরিয়া রনি।

মঈন হোসেন রাজু নেই, নেই তার দরাজ কণ্ঠ কিন্তু হাজারো প্রতিবাদী নিপিড়ীত কণ্ঠের ধ্বনি ধ্বনিত হওয়ার মাধ্যমে মুখরিত থাকবে সন্ত্রাস রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ, হাজারো প্রতিবাদীর ভিড়ে এভাবেই আজীবন বেঁচে থাকবে রাজু।

   

ঢাবি উপাচার্যকে কানাডা সফরে আমন্ত্রণ জানালেন লিলি নিকোলস



ঢাবি করেস্পন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম ঢাকা
ঢাবি উপাচার্যকে কানাডা সফরে আমন্ত্রণ জানালেন লিলি নিকোলস

ঢাবি উপাচার্যকে কানাডা সফরে আমন্ত্রণ জানালেন লিলি নিকোলস

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানকে কানাডা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস। 

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে এসে এ আমন্ত্রণ জানান ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

এতে বলা হয়, কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কানাডার রিজাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এবং রিজাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জেফ কেশেন নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে এই সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। এ সময় ঢাবি উপাচার্যকে কানাডা সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়। 

কানাডার হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ এবং কানাডার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। দুদেশের মধ্যে চলমান শিক্ষা, গবেষণা, সাংস্কৃতিক ও উন্নয়ন কার্যক্রম ভবিষ্যতে আরও জোরদার হবে বলে  আশা প্রকাশ করেন তিনি।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা এবং এর শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের প্রতি গভীর আগ্রহ প্রকাশের জন্য কানাডার হাইকমিশনারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

প্রসংগত, গত ১৯ জুলাই ভিসা না পাওয়ায় কানাডায় যেতে পারেননি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। ‘এসোসিয়েশন অব কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটিজ (এসিইউ)’র কাউন্সিল কনফারেন্সে যোগ দিতে কানাডায় যাওয়ার কথা ছিল তার। গত ১৫ জুন ভিসার জন্য ঢাকাস্থ কানাডিয়ান হাইকমিশনে আবেদন করেন তিনি। কিন্তু এক মাস পার হলেও ভিসা পাননি ভিসি। তাই কানাডায় যাওয়ার উদ্যোগ বাতিল করতে হয়। 

জানা যায়, হাইকমিশনার জানিয়েছেন, ভিসার বিষয়টি ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট দেখে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তখন উপাচার্যের কানাডা যাওয়ার ব্যাপারে সমস্যাটি হতো না। 

;

ইবিতে র‍্যাগিং ও ভাঙচুরের ঘটনায় ৬ শিক্ষার্থী বহিষ্কার



ইবি করেসপন্ডেন্ট বার্তা ২৪.কম কুষ্টিয়া
ইবিতে র‍্যাগিং ও ভাঙচুরের ঘটনায় ৬ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ইবিতে র‍্যাগিং ও ভাঙচুরের ঘটনায় ৬ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেডিকেল সেন্টারে ভাঙচুর ও র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় তিন শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া বাকি তিনজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় উাপাচার্যের কার্যালয়ে ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়য়ের মেডিকেল সেন্টারে ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত আইন বিভাগের ছাত্র রেজোয়ান সিদ্দিক কাব্য, র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী হিশাম নাজির শুভ এবং একই বিভাগের মিজানুর রহমান ইমন

এছাড়া র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার পুলক, শেখ সালাউদ্দীন সাকিব ও সাদমান সাকিব আকিবকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে

ভুক্তভোগী তাহমিন ওসমান বহিষ্কারারের বিষয়ে বলেন, ‘আমি মনে করি প্রশাসন সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। যে দুইজনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে তারা এগ্রেসিভভাবে র‍্যাগ দিয়েছিলো। বাকিরাও জড়িত ছিলো, কিন্তু তারা এক্সট্রিম পর্যায়ের না। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া পরিবেশ থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা সহাবস্থানে একে অপরের সহযোগিতা করবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা শিক্ষাবান্ধব এবং র‍্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি

প্রসঙ্গত গত ১০ জুলাই আইন বিভাগের ছাত্র রেজোয়ান সিদ্দিক কাব্য, সালমান আজিজ, আতিক আরমানের বিরুদ্ধে মেডিকেল সেন্টারে ভাঙচুর, কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ও অ্যাম্বুলেন্স চালকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ ওঠে। এরপর মেডিকেল সেন্টার কর্তৃপক্ষ ও ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। 

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ জুলাই ওই তিন ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার করে তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। কমিটিতে ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিনকে আহ্বায়ক করা হয়

এদিকে গত ৯ সেপ্টেম্বর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক নবীন শিক্ষার্থী লিখিতভাবে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ করেন তারই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে। পরেরদিন ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে কর্তৃপক্ষ। তদন্ত করতে গিয়ে উভয় কমিটি ঘটনার সত্যতা পায়

;

কুবিতে ফুটবলের ফাইনাল শেষে প্রক্টর-খেলোয়াড়দের মধ্যে হাতাহাতি



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রেফারির সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তঃ বিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতার ফাইনাল ম্যাচ শেষে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই সময় শিক্ষার্থী ও উপস্থিত প্রক্টরিয়াল বডির মধ্যে পরিস্থিতি বাগবিতণ্ডা থেকে হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়।

সোমবার (২ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতার ফাইনাল ম্যাচে ২-০ গোলে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাছে হারার পর ম্যাচ রেফারির দিকে তেড়ে যায়। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডি তাদের বাধা দিতে এগিয়ে আসে এবং তাদেরকে ঘটনাস্থল থেকে সরাতে থাকে।

তবে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবি তারা রেফারির সঙ্গে ‘সেল্ফি’ তুলে স্লেজিং করার উদ্দেশ্যে রেফারির দিকে একযোগে যাচ্ছিল। অন্যদিকে প্রক্টরিয়াল বডি তাদের বাধা দিতে এগিয়ে আসলে কিছুক্ষণের জন্য পরিস্থিতির অবনতি ঘটে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত আইন বিভাগের ফুটবল দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ সাকিব হাসান বলেন, বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। রেফারির আচরণ অন্যরকম মনে হয়েছে এবং দর্শকদের চোখেও এটি লেগেছে। এজন্য সবার মন খারাপ ছিল। এর মধ্যে হঠাৎ করে কথা কাটাকাটির মধ্যে সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত স্যার এসে হয়তো থামানোর চেষ্টা করেছেন। তবে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কেমন যেনো বিষয়টি উলটপালট হয়ে গেছে।

প্রক্টরদের কেউ শিক্ষার্থীদের মারধর করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রক্টর স্যার ঘটনাটি সমাধানের জন্য চেষ্টা করছিলেন। যেন ঝামেলা না লাগে। প্রক্টর স্যার শিক্ষার্থীর গায়ে হাত দিয়েছে এমন ঘটনা দেখিনি। বরং তিনি চেষ্টা করেছেন থামানোর জন্য।

এ ব্যাপারে আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মু. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আজকে যে অনভিপ্রেত ঘটনার উদ্ভূত হয়েছে তা নিয়ে ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যে যেন সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকে সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে। ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যে আমরা কোনো ভেদাভেদ চাই না। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখে প্রশাসন যেভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার সেভাবেই নিচ্ছে। প্রক্টর স্যার ছাত্রদের ওপর হাত তুলেছেন তা আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি। প্রক্টর স্যার ছাত্রদের মারধর করেছেন এখনো কেউ আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। যারা এসব ছড়াচ্ছেন তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রক্টরিয়াল বডি তাদের দায়িত্ব পালনে যথেষ্ট সচেষ্ট ছিল।

এ ব্যাপারে সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত বলেন, ‘প্রক্টরিয়াল টিমের দায়িত্ব পালন করতে মাঠে গিয়েছিলাম। আইন বিভাগ হেরে যাওয়ার পর তারা উত্তেজিত হয়ে রেফারির দিকে তেড়ে যায়। আমরা যারা প্রক্টরিয়াল টিমের দায়িত্বে ছিলাম তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি। এরমধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আমি দুইবার পড়ে গিয়েছি। কেউ হয়তো ধাক্কা দিয়েছিল আমাকে। সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের যা করার প্রয়োজন ছিল আমরা তাই করেছি।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের মধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সকলে কাজ করেছেন। এখানে মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি।’

;

চবি অধ্যাপক ড. রফিকের ইন্তেকাল



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
চবি অধ্যাপক ড. রফিকের ইন্তেকাল

চবি অধ্যাপক ড. রফিকের ইন্তেকাল

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আরবি বিভাগের অধ্যাপক এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কৃতি সন্তান ড. এস এম রফিকুল আলম সোমবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭:৫০ মিনিটের ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে কুমিল্লায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বলে নিশ্চিত করেছেন চবি আরবি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নেয়ামত উল্ল্যাহ।

অধ্যাপক ড. এস এম রফিকুল আলম রোববার (১ অক্টোবর) রাতে স্ট্রোক করলে চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লায় তিনি মারা যান।

অধ্যাপক নেয়ামত বলেন, রোববার (১ অক্টোবর) তিনি পরীক্ষার হলে পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করেন। হাসিখুশিভাবে সবার সাথে কথা বলেন। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে চবি পরিবার গভীরভাবে শোকাহত।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপুর ২ টায় মরহুমের গ্রামের বাড়ী বাঁশখালী উপজেলার শিলকোপ-এ জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছে। রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সেকশন অফিসার নাফিজ মিনহাজ বাশঁখালীবাসীর পক্ষে মরহুমের মাগফেরাতের জন্য সবার দোয়া কামনা করেছেন।

চবি আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. এস. এম. রফিকুল আলমের আকস্মিক মৃত্যুতে চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে, চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. আবদুল হক, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মাহবুবুল হক, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর সিরাজউদৌলাসহ অনেকে
গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

চট্টগ্রাম সেন্টার ফর রিজিওনাল স্টাডিজ বাংলাদেশ (সিসিআরবিডি)-এর নির্বাহী পরিচালক, চবি রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ শোক প্রকাশ করে বলেন, ড. এস.এম. রফিকুল আলম ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী, বিনয়ী, সহজ-সরল, জ্ঞানপিপাসু ও প্রচারবিমুখ একজন শিক্ষক। শিক্ষকতা জীবনে তিনি যে মেধা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার দৃষ্টান্ত রেখেছেন, তা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে চবি পরিবার।

;