চাকরিতে ৩৫ প্রত্যাশীদের সমাবেশ, পদযাত্রায় আটক ১০

  • ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে সমাবেশ করছেন একদল শিক্ষার্থী। সমাবেশ থেকে চাকরি প্রত্যাশীরা গণভবন অভিমুখে পদযাত্রা করলে শাহবাগে পুলিশের বাধায় পদযাত্রা থামাতে বাধ্য হন তারা। এ সময় ১০ জন শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (১১ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘চাকরির বয়স ৩৫ প্রত্যাশী সমন্বয় পরিষদ’ এর ব্যানারে এই সমাবেশ ও পদযাত্রা আরম্ভ করেন তারা। সমাবেশ শেষে পদযাত্রাকালে শাহবাগ থানার সামনে পুলিশ তাদেরকে বাধা দিলে শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের সাথে হাতাহাতি হয়, এক পর্যায়ে ১০ জন শিক্ষার্থীকে আটক করেন পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

চাকরির বয়স ৩৫ প্রত্যাশীদের পরিষদের সমন্বয়ক শরিফুল ইসলাম শুভ এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা আবার রাজু ভাষ্কর্যের পাদদেশে প্রতিবাদ জানাতে একত্র হবো এখন। যতোক্ষণ ওরা ছাড়া না পায় ততক্ষণ অবস্থান করব।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার দায়িত্বরত ওসি মো .মোস্তাজিজুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, সমাবেশে ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্বের প্রায় ১৬২টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা কমপক্ষে ৩৫ বছর, তার মধ্যে কিছু দেশে তা উন্মুক্ত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল হয়েও বিভিন্ন রাজ্যভেদে চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ বছর, মালদ্বীপে ৪৫ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৪৫ বছর, নেপালে ৩৫ বছর, আফগানিস্তানে ৩৫ বছর। ভারতসহ বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলো অনেক গবেষণা করেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে ন্যূনতম ৩৫ বছর করেছে। কিন্তু আমাদের মাত্র ৩০ বছর। পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল, এক নম্বর অর্থনীতি ও উদীয়মান পরাশক্তি রাষ্ট্র চীনেও চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৪০ বছর পর্যন্ত।

তারা আরো বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে প্রায় আড়াই বছর যাবত তেমন কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়নি বা নিয়োগ পরীক্ষা হয়নি। বাংলাদেশ থেকে লকডাউন উঠিয়ে নেওয়ার পর থেকে প্রতি সপ্তাহান্তে ১০-১৫টি বা ততোধিক পরীক্ষা একই দিনে, একই সময়ে হয়েছে। ফলে পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছে অনেক চাকরি প্রত্যাশী। কোভিড-১৯ এর শুরুতে যাদের বয়স ২৭-২৯ বছর ছিল তাদের বয়স এখন ৩০ বা ততোধিক। ফলে চাকরি প্রার্থীরা বাস্তবিক অর্থে প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় ৩০ বছরের পরিবর্তে সাড়ে ২৭ বছর পেয়েছে। আমরা সার্টিফিকেটধারী শিক্ষার্থীরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারিনি।

চাকরির বয়স ৩৫ প্রত্যাশীদের পরিষদের সমন্বয়ক শরিফুল ইসলাম শুভ বলেন, আমরা চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বৃদ্ধি চাই। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ৩৫ চাই। তারই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৩০ আগস্ট থেকে লাগাতার কর্মসূচি পালন করছি। সরকারি-বেসরকারি, আধা সরকারি, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্তশাসিতসহ দেশে বিদ্যমান সব ধরনের চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করতে হবে। বিষয়টি উপলব্ধি করে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’ বলে উল্লেখ করেছিল। কিন্তু এখনো এটা বাস্তবায়ন করা হয়নি।