২২ বিভাগে ২৩ জন অধ্যাপক নিয়েই চলছে বেরোবি

  • বেরোবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

২২ বিভাগে ২৩ জন অধ্যাপক নিয়েই চলছে বেরোবি

২২ বিভাগে ২৩ জন অধ্যাপক নিয়েই চলছে বেরোবি

২২ বিভাগে ২৩ জন অধ্যাপক নিয়েই চলছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষা কার্যক্রম। রয়েছে চরম শিক্ষক সংকট।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সময় প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক নিয়োগ দেওয়া হলেও অধ্যাপক পদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছেনা। ফলে অভিজ্ঞ শিক্ষকের কৌশলী পাঠদান, ভালো মানের গবেষণা শেখাসহ নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট বিভাগ রয়েছে ২২টি। এর মধ্যে ৯টি বিভাগে অধ্যাপক রয়েছে ২৩ জন। যেখানে বাংলা বিভাগে ৬ জন, গণিত বিভাগে ৩ জন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৩ জন, মার্কেটিং বিভাগের ৩ জন, পদার্থবিজ্ঞান ৩ জন, কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ২ জন অধ্যাপক রয়েছেন।

এছাড়া ১ জন করে অধ্যাপক রয়েছে অর্থনীতি, ফাইন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগ এবং রসায়ন বিভাগে।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্থাপন শাখার সূত্র জানায়, ২৩ জন অধ্যাপকের মধ্যে আবার শিক্ষা ছুটিতে আছে ১ জন।

এদিকে অধ্যাপক ছাড়াই চলছে ইংরেজি, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, লোক প্রশাসন, পরিসংখ্যান, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ভূগোল ও পরিবেশ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস ও ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ।

গবেষকদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে অধ্যাপকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। গবেষণা কাজে অধ্যাপকদের অভিজ্ঞতা বেশি থাকায় শিক্ষার্থীদের গবেষণা সম্পর্কে নতুন জ্ঞানের ক্ষেত্র তৈরি হয় এবং শিক্ষার্থীরা ভালো মানের জার্নাল বের করতে পারে।

জানা গেছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষক সংকটে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। সেখানে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ২০৪ জন। অর্থাৎ প্রতি ৪২ শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক। অথচ ইউজিসির শিক্ষক শিক্ষার্থীর মানদণ্ড অনুযায়ী প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি ২০ শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকার কথা রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককেই গড়ে ৮ থেকে ১০টি কোর্স নিতে হচ্ছে। অতিরিক্ত ক্লাস-পরীক্ষার চাপে গবেষণা কার্যক্রমে যথেষ্ট সময় দিতেন পারছেন না শিক্ষকরা। ফলে কার্যত ঝিমিয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষণা কার্যক্রম।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, এক বছর মেয়াদের দুই সেমিস্টারের স্নাতকোত্তরে পড়ানো হয় ১২ থেকে ১৪টি কোর্স। সে হিসেবে চার বছর মেয়াদের আট সেমিস্টারের স্নাতকে পড়ানো হচ্ছে ন্যূনতম ৪৮ থেকে ৫৬টি কোর্স। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় এক শিক্ষককে নিতে হচ্ছে ৯ থেকে ১০টি কোর্স। কিছু বিভাগে তারও বেশি।

জানা যায়, প্রতিষ্ঠাকালীন ১৫ বছরের জন্য অনুমোদিত পরিকল্পনায় (অর্গানোগ্রাম) ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে এখানে আটটি অনুষদে ৪৭টি বিভাগ চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত ছয়টি অনুষদের অধীনে খোলা হয়েছে মাত্র ২২টি বিভাগ। আইন অনুষদ এবং কৃষি অনুষদ খোলাই হয়নি। এছাড়াও আরও অনেক যুগোপযোগী বিভাগ খোলা হয়নি।

এই ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো.শওকাত আলী বলেন, পদ সৃষ্টি করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। যখন এই বিভাগগুলো চালু হয় তখন তো ১ জন করে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষক নিয়োগ দেওয়ার কথা। তখন কেনো অধ্যাপক নিয়োগ হয়নি আমার জানা নেই। তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তুলনায় শিক্ষক অনেক কম। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক মান উন্নয়নের জন্য আমি ইউজিসিকে জানিয়েছি। আশা করি সমস্যাগুলো কেটে যাবে।