জাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমৃত্যু গণঅনশনে ৮ শিক্ষার্থী

  • জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ৮ শিক্ষার্থী আমৃত্যু গণঅনশন পালন করছেন।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অনশনকারীরা। সর্বশেষ এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অনশনরত আছেন।

বিজ্ঞাপন

অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানান, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে লড়াইয়ের মূলমন্ত্র ছিল বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি বাতিল ও যৌক্তিক সংস্কার করা। সেজন্য অনেককে রক্ত দিতে হয়েছে। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পর সেই কোটা নিয়ে আবারও অনশনে বসতে হচ্ছে, যা হতাশা ও লজ্জার বিষয়। ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক পোষ্য কোটার জন্য বঞ্চিত হচ্ছে গরীব কৃষক ও শ্রমিকের সন্তান। তাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে চিরতরে অযৌক্তিক পোষ্য কোটার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করার জন্য আমাদের আমৃত্যু অনশনে বসা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আমৃত্যু গণঅনশন পালনকারী ৮ জন শিক্ষার্থী হলেন-

বিজ্ঞাপন

ভূগোল পরিবেশ ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী মুয়িদ মুহম্মদ ফাহিম, সরকার ও রাজনীতি ৪৯ ব্যাচের নাহিদ হোসেন ইমন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৫০ ব্যাচের নাজমুল ইসলাম লিমন, মার্কেটিং ৫০ ব্যাচের মোহাম্মদ রায়হান, গণিত ৫০ ব্যাচের গালিব হোসেন, ম্যানেজমেন্ট ৫১ ব্যাচের নাদিয়া রহমান অন্বেষা, ম্যানেজমেন্ট ৫১ ব্যাচের মেহরাব তূর্য, আইন ও বিচার ৫১ ব্যাচের জাইবা জাফরিন এবং ইংরেজি ৫৩ ব্যাচের মোহাম্মদ আলী চিশতি৷

অনশনে বসা নৃবিজ্ঞান ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, পৌষ্য কোটার মত বৈষম্য আর নেই। আমরা বৈষম্যহীন এক নতুন বাংলাদেশের জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছি। অথচ মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য গলার কাঁটা নামক পোষ্য কোটা চালু রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। যা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণের অন্তরায়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদ হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি রয়েছে, তা গোড়া থেকে উপড়ে দিতে আমরা অনশনে বসেছি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে আমাদের প্রাণের দাবি ছিল- মেধা দিয়েই আমাদের মূল্য যাচাই হবে, কোন কোটা দিয়ে নয়। কিন্তু অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এমন অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি জাবিতে বিদ্যমান থাকা আমাদের জন্য লজ্জার। এমনকি আমাদের ভাইবোনদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে থাকা প্রশাসনের জন্যেও লজ্জার। অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিল না হলে আমাদের কর্মসূচি চলবে।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার সদস্য সচিব তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বিদ্যমান। আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কাছে এই পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছি। যেহেতু এই কোটার কোনো যৌক্তিকতা নেই, সেহেতু এটি সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। এটা সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে হবে।’