উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে 'শিবির' সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান
দুর্নীতির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলামকে অপসারণের দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে 'শিবিরের সংশ্লিষ্টতা' আছে বলে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এ দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কলা ও মানবিকী অনুষদে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেন 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' ব্যানারের আন্দোলনকারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমান বলেন, উপাচার্যের সার্বিক আচরণ আমাদের মধ্যে আস্থাহীনতার সৃষ্টি করেছে। গত মঙ্গলবারের মশাল মিছিল চলাকালে শিবির ধরার নামে একটি 'জজ মিয়া' নাটক মঞ্চস্থ করার চেষ্টা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং পুলিশের বক্তব্যে সামঞ্জস্য খুঁজে পায়নি। এছাড়া যেদিন তাদেরকে ধরা হয় সেদিনও প্রক্টরিয়াল বডির একেকজন সদস্য একেকরকম বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, শিবির ধরার বিষয়টি ষড়যন্ত্র। যাদেরকে আটক করা হয়েছে তারা কারা এ সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। এটি একটি সাজানো ষড়যন্ত্র। এটি আসলে আন্দোলন বানচালের অপচেষ্টা। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এর আগে বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের সঙ্গে 'শিবির সংশ্লিষ্টতার' অভিযোগ তোলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
লিখিত বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেছিলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প ঘিরে গড়ে ওঠা আন্দোলনে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয় বরং দেশকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আটক ওই দুই যুবকের স্বীকারোক্তিতে জানা গেছে যে, মশাল মিছিল কর্মসূচিকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। ওই দুই যুবকের স্বীকারোক্তি ও তাদের মোবাইল থেকে প্রাপ্ত তথ্যে চলমান উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে আরও যারা সম্পৃক্ত সে সম্পর্কে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। যা তদন্তের স্বার্থে এখনই প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়, সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাতে শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন সাবেক ছাত্রকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন।
আটকৃতরা হলেন- সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪১ তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী সাদ শরীফ এবং প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নূরুল আমিন।
এর মধ্যে আটককৃত সাদ শরীফের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন আশুলিয়া থানায় এ মামলা করেন।
আটক অন্য শিক্ষার্থী নূরুল আমিনকে আশুলিয়া থানা পুলিশের হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (গোয়েন্দা) তসলিম উদ্দিন।