জাবিতে সর্বাত্মক ধর্মঘটে বন্ধ উইকেন্ডের শিক্ষা কার্যক্রম
দুর্নীতির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে লাগাতার অবরোধ-ধর্মঘট কর্মসূচি চলছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উইকেন্ড কোর্সের সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) সকাল থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে রাখেন আন্দোলনকারীরা। ফলে উইকেন্ড কোর্সের পূর্বনির্ধারিত কোনো ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) আন্দোলনকারীরা শুক্র ও শনিবারের উইকেন্ড কোর্সের শিক্ষা কার্যক্রমকে ধর্মঘটের আওতায় আনার ঘোষণা দেন।
এদিকে, আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাসা-বাড়িতে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা গিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে কী কারণে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা গিয়েছেন তা জানাতে পারেননি আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতারা। ফলে 'উৎকণ্ঠায়' সময় পার করছেন তারা।
শুক্রবার বিকেলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে 'উপাচার্য অপসারণ মঞ্চে' আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এ অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, 'গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খবির উদ্দিনের বাসায় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা গিয়েছিলেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আমির হোসেন ও আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদারের মুঠোফোন সংযোগ সাময়িকভাবে বিচ্ছিন্ন ছিল। আন্দোলনের এক সংগঠকের গ্রামের বাড়িতে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা খোঁজ খবর নিয়েছেন। এ অবস্থায় আমরা আন্দোলনকারী শিক্ষক শিক্ষার্থীরা উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় পার করছি।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি ন্যায়সঙ্গত দাবি নিয়ে আমাদের এ অবরোধ-ধর্মঘটের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এতে শিক্ষার্থীদের সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘমেয়াদী মঙ্গলের জন্য সবাইকে এ আন্দোলনে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানাব। ভয়ভীতি দেখিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।'
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারেক রেজা, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক খন্দকার হাসান মাহমুদ, ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সহসভাপতি নাঈমুল আলম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক শাকিল উজ্জামান প্রমুখ।