রাবি শিক্ষার্থীকে মারধরকারীদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী সোহরাব মিয়াকে মারধরের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবনের সামনে ‘নিপীড়ন বিরোধী ছাত্র-শিক্ষক ঐক্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’র ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আরও আট দফা দাবি জানান।
অন্যান্য দাবিগুলো হলো- দায়িত্ব অবহেলার জন্য হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, ক্যাম্পাসে কোনো শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হলে মামলাসহ সকল ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহন করা, আবাসিক হলগুলো সিসিটিভির আওতায় আনা, হলগুলোতে বৈধ সিট বণ্টন করা ও হলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হলে সিট বণ্টন ও আবাসনে কোনো ছাত্র সংগঠনের হস্তক্ষেপের সুযোগ না দেওয়া, হলে অবৈধভাবে বসবাসরতদের বের করে দেওয়া, রাজনৈতিক মত ভিন্নতার কারণে কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে অসদাচরণ না করা এবং তাদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেওয়া।
কর্মসূচিতে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বীরত্ব দেখানোর অনেক জায়গা আছে। কে কতটুকু পড়তে পারে, পড়াতে পারে, গবেষণায় অবদান রাখতে পারে এগুলো নিয়ে বাহাদুরি করা যেতে পারে। কিন্তু আমরা আজকাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এসব বীরত্ব দেখতে পাই না। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা সন্ত্রাস এক সঙ্গে চলতে পারে না। আপনারা নিপীড়নের শিকার ব্যক্তির অভিশাপকে ভয় করুন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলো ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর জিম্মাদার। আপনারা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। আমরা এভাবে শিক্ষার্থীদের নিয়ে দাঁড়াতে চাই না। কিন্তু কোনো অন্যায় দেখলে আমরা এভাবে দাঁড়িয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাব, এটা আমাদের অঙ্গীকার।’
বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান উপকরণ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন সময় তাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে, মারধর করা হচ্ছে। কিন্তু যারা করছে তাদের কোনো বিচার হচ্ছে না। সরকারবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড ঘটলে প্রশাসন শক্ত হাতে তা দমন করে। কিন্তু কোনো শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করা হলে তখন আপনারা নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করেন।
আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসউদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দা আফরীনা মামুন, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আখতার বানু, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ শামস্ বিন তারিক, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আতিকুর রহমান পাটোয়ারী, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সিন্ডিকেট সদস্য মো. মনিরুর হক, ফিসারিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহা. ইয়ামিন হোসেন প্রমুখ।
এর আগে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) মধ্যরাতে শহীদ শামসুজ্জোহা হলে ফিন্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সোহরাব মিয়াকে বেধড়ক পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয় শাখা ছাত্রলীগের দুই কর্মী। তার মাথা ও শরীরে ১৫টি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।