ইয়াসফার হত্যাকারীর ফাঁসির দাবিতে মানবন্ধন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদের ছোট বোন ইয়াসফাকে ধর্ষণের চেষ্টা এবং নির্মমভাবে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত এনামুলের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা নিজেদের চোখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ জানায়।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে ইয়াসফার বড় ভাই ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, 'আমার ছোট বোনকে যেভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে আমি প্রশাসন এবং সরকারের কাছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। আমি আরও বলতে চাই, আমার মায়ের মত আর কোনো মায়ের যেনো কোল খালি হতে না হয়। আজ আমার বোনকে হত্যা করা হয়েছে কাল হয়তো আপনার বোনকে হত্যা করা হবে। তাই সবাইকে বলি আপনারা সচেতন হন।
মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসুর সদস্য রকিবুল হাসান ঐতিহ্য।
তিনি বলেন, আজকে আমার ভাইয়ের বোনকে ধর্ষণের চেষ্টা করে হত্যা করা হয়েছে। মানববন্ধন ডাকসুর পক্ষ থেকে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে প্রশাসন এবং সরকারকে বলতে চাই এই হত্যার সুষ্ঠু বিচার অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে করতে হবে৷ এই হত্যার প্রধান আসামি এনামুলকে অনতিবিলম্বে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা না হলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
হত্যার ঘটনাটি ঘটে ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বাড্ডার নতুন বাজার এলাকার বারো বিঘা নামক জায়গায়। বিকেল থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল না ৬ বছরের শিশু ইয়াসফাকে। এসময় ইয়াসফার মা তাদের বাসার ভাড়াটিয়ার ছেলে এনামুলকে সাথে নিয়ে খোঁজাখুঁজি করছিলো। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও যখন পাওয়া যাচ্ছিল না তখন এনামুলের বাসায় খুঁজতে বললে দরজা খুলতেই এনামুল ইয়াসফার মায়ের সামনে থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। দুই হাত গামছা দিয়া বাঁধা এবং মুখে কাপড় দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শিশু ইয়াসফাকে।
এনামুল ইয়াসফাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে এবং তা করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এবং হাত-পা মুখ বেঁধে রেখে খাটের নিচে ফেলে রাখে। এই অবস্থায় ইয়াসফাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত পৌনে আটটার দিকে ইয়াসফাকে মৃত ঘোষণা করে।
উক্ত ঘটনায় এনামুলকে প্রধান আসামী করে ভাটারা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
উল্লেখ্য, নিহত ইয়াসফার বয়স ছিলো ৬ বছর এবং সে শিশু শ্রেণিতে পড়তো। তারা দুই ভাই-বোন, ইয়াসফা ছিলো ছোট। বড় ভাই ইসতিয়াক আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।