নারীর সুরক্ষায় প্রস্তুত ‘অ্যালাই’
ঘরে কিংবা বাইরে—সব জায়গাতেই নারীকে সহিংসতার মুখে পড়তে হয় এবং তা ক্রমেই বাড়ছে। নারীরাও যে মানুষ মুহূর্তে সে কথা ভুলতে বসেন এক শ্রেণির ‘মানুষ’। মানুষ হিসেবে না দেখে মাংস পিণ্ড হিসেবে দেখতেই বরং ভালবাসেন তারা আর এর ফলেই দিন দিন বাড়ছে নারী নির্যাতন, হয়রানি, ধর্ষণ, এমনকি ধর্ষণ পরবর্তী খুন।
আর নারীর সাথে ঘটা নির্যাতন, হয়রানি, ধর্ষণ এমনকি ছিনতাই প্রতিরোধসহ যে কোন বিপজ্জনক মুহূর্তে সুরক্ষা দিতে কাজ করবে ‘ALLY’ নামের একটি অ্যাপস। যেটি তৈরি করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) তিন শিক্ষার্থী।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি আয়োজিত সফটওয়্যার প্রদর্শনীতে এই বিশেষ অ্যাপসটি প্রদর্শন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী। এমনকি বিশেষ এই অ্যাপসটির মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ‘আইআইটি অ্যাড্রয়েট’ নামক দলটি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (আই আই টি) শিক্ষার্থী শাহীন বাশার, মেহেদী হাসান রুম্মান এবং শাহরিয়ার ইসলাম হিমেল। যারা মূলত অ্যাপসটির নির্মাতা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও দেশের ২২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল এই প্রদর্শনীতে অংশ নেয়।
এ ব্যাপারে অ্যাপসটির নির্মাতা শাহীন বাশার বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমরা প্রতিযোগিতায় যে অ্যাপসটি প্রদর্শন করেছি তার নাম ‘ALLY’। এই অ্যাপসটির নারীদের ধর্ষণ রোধে কাজ করবে। এছাড়াও হ্যারেজম্যান্ট, ছিনতাই প্রতিরোধসহ যে কোন বিপজ্জনক মুহূর্তে সুরক্ষা দিতে কাজ করবে।’
কিভাবে এসব কাজ করবে অ্যাপস? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের অ্যাপসে অনেকগুলো ফিচার থাকবে। তার মধ্যে যদি একজন ব্যবহারকারী কোনো অপরিচিত জায়গা দিয়ে যায় অথবা কোনো বিপদের পড়ার আশংকা করে তবে অ্যাপসটির ‘ড্যানজার মুড’ অন করে রাখতে হবে। পরবর্তীতে কোন প্রকার ‘শ্যাকিং’ কিংবা হেল্প সাউন্ড শুনলে এপস থেকে অটোমেটিক্যালি তার বিশ্বস্ত নাম্বারে কল, ম্যাসেজ ও ইমেইল (কারেন্ট লোকেশন সহ) চলে যাবে।’
এছাড়া ব্যবহারকারীর মোবাইল থেকে সয়ংক্রিয়ভাবে লোকেশন শেয়ার হবে, যা তার বিশ্বস্ত ব্যক্তি অ্যাপসের মাধ্যমে সরাসরি দেখে ভিক্টিমের অবস্থান জানতে পারবে। এছাড়া অ্যাপসে গোপনে রেকর্ড করা, ছবি তোলার অপশন রয়েছে বলেও জানান শাহীন বাশার।
অ্যাপসটির সহনির্মাতা মেহেদী হাসান রুম্মান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ভিক্টিম খুব সহজেই এই অ্যাপসের মাধ্যমে নিকটবর্তী পুলিশ অথবা র্যাব স্টেশনে যোগাযোগ করতে পারবে। মুহূর্তে পার্শ্ববর্তী পুলিশ ও র্যাবের মোবাইল নম্বর ও লোকেশন জানতে পারবে। এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ এ কল দেয়া ও অ্যাম্বুলেন্স এবং ব্লাড ডোনার খুঁজতে পারবে।’
আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে অ্যাপসটি গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।