হোগলার বেড়া তৈরিই যার কাজ!
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার বর্তমান পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে রয়েছে সিরাজুল ইসলামের ঘর। সেখানে তার কাছে প্রতিদিনই লোকজন আসে হোগলার বেড়া তৈরি করে নিতে। প্রায় ৩০ বছর যাবৎ এই হোগলা দিয়ে বেড়া তৈরি করছেন তিনি। আর এ থেকে উপার্জিত অর্থেই চলে তার সংসার।
সিরাজুল ইসলাম জানান, নড়াইল অঞ্চলে হোগলার আবাদ হয় না। বরিশাল থেকে এই হোগলা কিনে আনতে হয়। প্রতি আঁটি হোগলা কেনা হয় ২০০ টাকা করে। আর হাত হিসাবে হোগলার বেড়া তৈরি করা হয়। প্রতি হাত হোগলার বেড়া ১৬০ টাকা করে তৈরি করা হয়ে থাকে। প্রতিদিন এই বেড়া তৈরি করে ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেন তিনি।
তিনি জানান, প্রথমে তল্লা বাঁশ (চিকন এক প্রকার বাঁশ) দিয়ে চিকন করে কেটে চটা তৈরি করা হয়। তার উপর হোগলা পাতা সারি সারি করে বেঁধে তৈরি করা হয় এ বেড়া। বেড়ার কাঠামো তৈরিতে অনেক সময় লেগে যায়। তাই দিনে ৮ থেকে ১০ হাত বেড়া তৈরি করা সম্ভব হয়।
সিরাজুল ইসলাম আরও জানান, অনেকে ঘরের বেড়া অথবা টিনের ঘরের ওপরের সিলিং দেয়ার জন্য এটি ব্যবহার করে থাকেন। হোগলার বেড়ায় ঘুনে ধরে না।
উপজেলার রায়গা-কলাগাছি গ্রামের অমিত বিশ্বাস বলেন, ‘হোগলার বেড়া একবার দিলে অনেক বছর থাকে। এতে ঘুন ধরে নষ্ট হয় না। তাই আমার ঘরের জন্য হোগলার বেড়া তৈরির অর্ডার দিতে এসেছি।’
সদর উপজেলার পাইকমারি গ্রামের জালাল মিয়া বলেন, ‘এক সময় আমাদের আশপাশের অনেক বাড়িতে হোগলার বেড়া ছিল। বর্তমানে তেমন একটা চোখে পড়ে না।’