আমের মুকুলে দোল খাচ্ছে চাষির স্বপ্ন

  • এসএম শহীদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, সাতক্ষীরা, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আমের মুকুলে দোল খাচ্ছে চাষির স্বপ্ন। ছবি: বার্তা২৪.কম

আমের মুকুলে দোল খাচ্ছে চাষির স্বপ্ন। ছবি: বার্তা২৪.কম

ফুটেছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে সুবাসিত ঘ্রাণ। কবির ভাষায়, ‘ফাল্গুনে বিকশিত কাঞ্চন ফুল, ডালে ডালে পুঞ্জিত আম্রমুকুল। বনে বনে ফুল ফুটেছে, দোলে নবীন পাতা।’ এ যেন বসন্ত জাগ্রত দ্বারে।

সাতক্ষীরা জেলার আম গাছগুলোতে এর মধ্যেই মুকুল আসতে শুরু করেছে। নানা ফুলের সঙ্গে সৌরভ ছড়াচ্ছে আমের মুকুলও। আমের মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি।

বিজ্ঞাপন

আমের মুকুলে তাই এখন মৌমাছির গুঞ্জন। মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ যেন জাদুর মতো কাছে টানছে তাদের। গাছের প্রতিটি শাখা-প্রশাখায় তাই চলছে ভ্রমরের সুর ব্যঞ্জনা। শীতে স্নিগ্ধতার মধ্যেই শোভা ছড়াচ্ছে সোনালি মুকুল। বছর ঘুরে আবারো তাই ব্যাকুল হয়ে উঠেছে আম প্রেমীদের মন।

এবার সময়ের আগেই সোনালি মুকুলে ভরে গেছে জেলার আম বাগান। তাই দখিনা বাতাসে দোল খাচ্ছে চাষির স্বপ্ন। গাছে গাছে ঝুলছে আমের মুকুল। পৌষের আমন্ত্রণে আসা আগাম মুকুল মাঘকে স্বাগত জানিয়ে আম চাষিদের মনে আশার আলো জ্বালিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তবে আগাম মুকুল দেখে আম চাষিরা খুশি হলেও কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, শীত বিদায় নেওয়ার আগেই আমের মুকুল আসা ভালো নয়। এখন ঘন কুয়াশা পড়লে বা বৃষ্টি হলে গাছে আগেভাগে আসা মুকুল চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যা ফলনেও প্রভাব ফেলবে।

এদিকে এ জেলার আমের স্বাদের প্রশংসা বিদেশেও। এবার বাম্পার ফলন ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রচুর আম রপ্তানির আশা চাষিদের। সেই লক্ষ্যে সনাতন পদ্ধতির বদলে আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত আম চাষিরা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/11/1549888573705.jpg

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১১৯৫ হেক্টর জমিতে, কলারোয়া উপজেলায় ৬০২ হেক্টর, তালা উপজেলায় ৭০৫ হেক্টর, দেবহাটা উপজেলায় ৩৬৮ হেক্টর, কালিগঞ্জ উপজেলায় ৮০৫ হেক্টর, আশাশুনি উপজেলায় ১২৫ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছিল।

এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদরে আমের বাগান ছিল ১৫৩০টি, কলারোয়ায় ১৩১০টি, তালায় ১৪৫০টি, দেবহাটায় ৪৭৫টি, কালিগঞ্জে ১৪২টি, আশাশুনিতে ১৯০টি ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৫০টি ।

রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের তুলনায় একটু আগেই বাজারে আসে সাতক্ষীরার আম। মাটি, আবহাওয়া ও পরিবেশগত কারণে এ জেলার আমের স্বাদও আলাদা। হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোবিন্দভোগ, আম্রপালি, ফজলির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও।

কলারোয়া এলাকার আম চাষি বাহাদুর রহমান জানান, আগাম মুকুল দেখে ভালো লাগছে। তবে এ মুকুল টিকে থাকলে এবার বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অরবিন্দু বিশ্বাস জানান, মাঘে আম গাছে মুকুল আসার সঙ্গে সঙ্গে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। মুকুল ধরার পর বালাইনাশক ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।