জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না ইলিশ

  • মনিরুজ্জামান বাবলু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, চাঁদপুর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

চাঁদপুর থেকে ধরা ইলিশ। ছবি: বার্তা২৪.কম

চাঁদপুর থেকে ধরা ইলিশ। ছবি: বার্তা২৪.কম

চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনা নদীর উপকূলীয় এলাকায় জাল ফেলে ইলিশ না পেয়ে খালি হাতে ফিরে আসছে জেলেরা। জেলায় ৫১ হাজার ১৯০টি নিবন্ধিত জেলে পরিবার রয়েছে। বছরের অধিকাংশ সময় নদী থেকে মাছ ধরে তারা জীবিকা নির্বাহ করে।

জানা গেছে, জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় মার্চ-এপ্রিল দু’মাস মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেন সরকার। ফের সেপ্টেম্বরের শেষ ও অক্টোবর মাসের শুরুতে ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে। এছাড়া বাকি সময়ে নদীতে মাছ আহরণে কোনো বিধি নিষেধ নেই। কিন্তু এ বছর মার্চ-এপ্রিলের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা ইলিশ না পেয়ে হতাশ। কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাওয়ার অপেক্ষায় থাকতে হবে আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। তবে অনেকের আশা জুলাই মাসে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে পাওয়া যেতে পারে ইলিশ।

বিজ্ঞাপন

চাঁদপুরের হাইমচর ও সদর উপজেলায় জেলেপাড়াগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, নদীতে পর্যাপ্ত ইলিশ না পাওয়ায় অধিকাংশ জেলে বেকার সময় পার করছে। কেউ নৌকা মেরামত করছে, আবার কেউ জাল মেরামত করছে। অনেকে আবার চায়ের দোকান অথবা আড্ডা দিয়ে বেকার সময় কাটাচ্ছে।

হাইমচরে মাছ ধরতে আসা শরীয়তপুরের জেলে কাশেম বলেন, ‘শরীয়তপুরে পদ্মায় চর পড়ে যাওয়ায় আমরা ১৪ জন জেলে বর্ষার শুরুতে হাইমচরে মাছ ধরতে এসেছি। এখান থেকেই দাদন নিয়েছি। মাছের যে অবস্থা, এখন দাদন কীভাবে শোধ করব তা নিয়েই চিন্তায় আছি।’

বিজ্ঞাপন

হাইমচর উপজেলার মোহনপুর এলাকার জেলে মিজানুর রহমান বলেন, ‘সাগর থেকে মেঘনা নদীতে ইলিশ আসার পথে বিভিন্ন বাধার সৃষ্টি হয়। চর জেগে ওঠা, পানি দূষণের কারণে আমরা আগের মতো ইলিশ পাচ্ছি না। এ কারণে আমাদের উপজেলার অনেক জেলে এখন বেকার সময় পার করছে।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/18/1560857293310.jpg

সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের জেলে শাহজাহান বলেন, ‘ইলিশ পাওয়ার আশায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে নতুন জাল তৈরি করেছি। কিন্তু ইলিশের দেখা মিলছে না।’

সদরের হানারচর ইউনিয়নের মৎস্য ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান সৈয়াল বলেন, ‘আমাদের এলাকার প্রায় ১শ জেলে প্রতিদিন ইলিশ পাওয়ার আশায় নদীতে নামেন। এক নৌকায় কমপক্ষে ৭ থেকে ৯ জন জেলে থাকেন। জ্বালানিসহ যে পরিমাণ খরচ হয়, তাতে ইলিশ বিক্রি করে জনপ্রতি ২শ টাকা করেও পায় না। বৃষ্টি ও পাহাড়ি পানি নামলে ইলিশের দেখা মিলবে বলে আশা করছি।’

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী জানান, মে ও জুন মাসে নদীতে ইলিশ কম থাকে। কারণ মিঠা পানিতে আসা ছোট ইলিশগুলো এ সময় সাগরের দিকে চলে যায়। আবার জুলাই-আগস্ট মাসের দিকে ডিম ছাড়ার জন্য মিঠা পানিতে আসে। ওই সময়ে জেলেরা ইলিশ পাবে।