ঘুষের টাকার জন্য দফতরির কানের পর্দা ফাটালেন এসআই

  • আল মামুন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ভুক্তভোগী দফতরি উবায়দুল্লা ও এসআই মো. জামিরুল

ভুক্তভোগী দফতরি উবায়দুল্লা ও এসআই মো. জামিরুল

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার একটি স্কুলের দফতরি কাম নৈশ প্রহরীর কাছে ঘুষের দুই হাজার ৫০০ টাকা চেয়ে না পাওয়ায় থাপ্পর মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার (৩ আগষ্ট) রাতে সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের খাকচাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জামিরুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় কর্মরত আছেন। এ ঘটনায় সোমবার (৫ আগষ্ট) দুপুরে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আহত দফতরি মো. উবায়দুল্লা।

বিজ্ঞাপন

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (৩ আগষ্ট) রাত ১০টার দিকে এসআই জামিরুলের নেতৃত্বে সদর মডেল থানার ছয় পুলিশ সদস্য খাকচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। সেখানে তারা বিদ্যালয়ের দফতরি উবায়দুল্লার কক্ষের দরজায় গিয়ে ডাক দেন। দরজা খোলার পর বশির নামে কেউ আছে কিনা জানতে চান জামিরুল। এ নামে কেউ নেই বলার পরও তারা উবায়দুল্লার পকেটে হাত দেন। পকেট হাতিয়ে কিছু না পেয়ে আবার বাচ্চু মিয়া নামে কেউ আছেন কি না জানতে চান। এরপর উবায়দুল্লাকে স্কুলের সব শ্রেণি কক্ষের দরজা খুলতে বলেন এসআই জামিরুল।

পরে আবার তারা উবায়দুল্লার পকেট চেক করার নামে কয়েকটি ইয়াবা ট্যাবেলট ঢুকিয়ে দেন। এরপরই জামিরুল তাকে বলেন তুই ইয়াবা ব্যবসা করিস, আর কোথায় কোথায় ইয়াবা আছে বল। এসব বলার পরই উবায়দুল্লাকে বেদম পেটাতে থাকেন জামিরুল ও অন্য পুলিশ সদস্যরা। দুই কানে এবং মাথায় এলোপাথাড়ি কিলঘুষি মারা হয় উবায়দুল্লাকে। এতে তার কানের পর্দা ফেটে যায়। খবর পেয়ে উবায়দুল্লার বাবা নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসলে তাকে আটক করে সাদা কাগজে জোর করে স্বাক্ষর নেন জামিরুল। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু তালেব আসার পর ২৫০০ টাকা নিয়ে উবায়দুল্লা ও তার বাবাকে ছাড়া হয়। তবে এ ঘটনা সম্পর্কে কাউকে জানালে মাদক মামলা ফাঁসানোরও হুমকি দিয়ে যান জামিরুল। ঘটনার পরদিন রোববার উবায়দুল্লাকে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতাল ও পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নাক কান গলা রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানো হয়।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগকারী মো. ওবায়দুল্লাহ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, জামিরুলের মারধরের কারণে আমার কানের পর্দা ফেটে গেছে। আমি এখন এককানে কিছুই শুনি না। আমি প্রশাসনের কাছে জামিরুলের দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি জানাই।

এসব বিষয়ে সদর মডেল থানায় কর্মরত এসআই জামিরুলের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, অভিযোগের কপি আমরা পেয়েছি। এই বিষয়ে তদন্ত করে দেখার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল কবিরকে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে  ব্যবস্থা নেয়া হবে।