চমেকে ঠাঁই হলো বিষধর রাসেল ভাইপার সাপটির
চাঁদপুর সদর উপজেলা থেকে রাসেল ভাইপার নামের একটি বিষধর সাপ উদ্ধারের পর মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের কর্মকর্তাদের কাছে সাপটি হস্তান্তর করা হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইমরান হোসাইন সজীব।
জানা যায় এর আগে সোমবার দুপুরে শহরের কোড়ালিয়া এলাকায় একটি পুকুর থেকে সাপটি ধরা হয়। বিষধর সাপটিকে ধরাশায়ী করা স্থানীয় যুবক সবুজ বলেন, ‘আমি বন্ধুদের সাথে সোমবার খেলা করছিলাম বাড়ির পাশে। এসময় হঠাৎ পুকুরের পাশে বিরল প্রজাতির এই সাপটি দেখতে পাই। পরে আমি সাপটি কৌশলে ধরে নিয়ে আসি। আমার বন্ধুরা সাপটি মেরে ফেলতে চাইলেও অপু ভাই সাপটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়। তাই সাপটিকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।’
অপু পাটোয়ারী বলেন, ‘গত এক মাস আগে এলাকার ছেলেরা একটি সাপ মেরে মোবাইলে ছবি তোলে দেখায়। সাপটি আমার কাছে ব্যতিক্রম মনে হয়। পরবর্তীতে আমি তাদেরকে বলি এরকম সাপ দেখতে পেলে যাতে না মেরে ফেলে। সোমবার একটি সাপ ধরার খবর পেয়ে আমি সাপটি দেখতে যাই। সাপটি দেখে আমার কাছে বিরল প্রজাতির মনে হয়। তাই আমি সাপটি রক্ষা করে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিই।’
তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে আমার বোন সাপটির ছবি ফেসবুকে দিলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ভ্যানম রিসার্চ সেন্টারের লোকজন আমার সাথে যোগাযোগ করে এবং মঙ্গলবার বিকেলে তারা আমাদের এখানে এসে সাপটি নিয়ে যায়।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের সহকারী গবেষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাসেল ভাইপার একটি দুর্লভ সাপ। দেশের রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, দিনাজপুর, ফরিদপুর, শরীয়তপুর জেলায় এই ধরনের সাপ দেখতে পাওয়া গেলেও চাঁদপুরে এটি দেখা যাওয়ার কথা নয়। হয়তো বন্যার পানির সাথে ভেসে সাপটি এখানে এসে থাকতে পারে।’
তিনি আরো জানান, রাসেল ভাইপারের কামড়ে বাংলাদেশে প্রথম ১৯৯৫ সালে এক সাওতাল নারী মারা যায়। তখনও বোঝা যায়নি কোন সাপ তাকে কামড়েছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে রাজশাহীতে ১৮ বছর বয়সী একটি ছেলে মারা গেলে এই সাপের অস্তিত্বের কথা প্রথম জানতে পারা যায়। বাংলাদেশে সাপের কামড়ে যত মানুষ মারা যায় তার মধ্যে রাসেল ভাইপারের কামড়েই অধিকাংশ মানুষ মারা যায়।
চাঁদপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, ‘সাপটি গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের রিসার্চ সেন্টারে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যারা সাপটি না মেরে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি এধরনের বিষধর সাপ দেখতে পেলে বিশেষজ্ঞদের জানানোর পরামর্শ দিচ্ছি। সাধারণ মানুষদের সাপের কাছাকাছি না যাওয়ার অনুরোধ রইল।’