গ্রাম্য সালিশে জোর করেই জামাতার সঙ্গে শাশুড়ির বিয়ে!



অভিজিৎ ঘোষ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, টাঙ্গাইল
সালিশে জোর করেই জামাতার সঙ্গে শাশুড়িকে বিয়ে দেওয়া হয়, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

সালিশে জোর করেই জামাতার সঙ্গে শাশুড়িকে বিয়ে দেওয়া হয়, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

শাশুড়ির সঙ্গে জামাতার বিয়ে নিয়ে তোলপাড় হওয়া ঘটনার পরই বাড়ি ছাড়া শাশুড়ি ও জামাতা। ঘটনার শিকার মেয়েটিকে পাওয়া গেল না নিজ বাড়িতে। ঘটনার পর মেয়েও রয়েছে অন্যের বাড়িতে। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এলাকাবাসীর দাবি, ঘটনায় প্রভাবশালী মহল জড়িত থাকায় কথা বলতে নারাজ অনেকেই। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় বিব্রতবোধ করছেন তারাও। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কাদের তালুকদারসহ গ্রাম্য মাতব্বররা অবৈধ সালিশ বৈঠক করে জোর পূর্বক মেয়ের জামাতার সঙ্গে শাশুড়ির বিয়ে দেয়। তার আগে শাশুড়ি ও জামাতার অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে মর্মে অভিযোগ তুলে সালিশে মারধরও করা হয় তাদের। তবে ভুক্তভোগী দুইপক্ষই হতদরিদ্র হওয়ায় এবং প্রভাবশালীরা বিচার করায় কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। তবে সালিশে শাশুড়ি ও জামাতাকে নির্যাতনের সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।

তবে টাঙ্গাইলের কওমি ওলামা পরিষদের সহ-সভাপতি মুফতি মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, আইন অনুযায়ী ৯০ দিন অতিবাহিত না হলে কোনোভাবেই তালাক বা বিয়ে কার্যকর হয় না। তাই ধর্মীয় বিচারে এ বিয়ে অনাচার। যারা এটা লঙ্ঘন করেছে তারা ধর্মকে অবমাননা করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

টাঙ্গাইল কোর্টের সরকারি কৌশুলি বলেন, শাশুড়ি আর জামাতার সঙ্গে বিয়ে নিয়ে যা করা হয়েছে তা চরমভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ।

জানা গেছে, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হাদিরা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার গ্রাম কড়িয়াটা। এ গ্রামের নিতান্তই দরিদ্র নরু মিয়ার মেয়ে নূরন্নাহারের সঙ্গে চলতি বছরের আগস্টের ৯ তারিখে এক লাখ টাকার দেন মোহরে বিয়ে দেয়া হয় আরেক হতদরিদ্র পার্শ্ববর্তী ধনবাড়ি উপজেলার হাজরাবাড়ীর পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে মোনছের আলীর। বিয়ের কিছুদিন সংসার জীবন ভাল কাটলেও কয়েকদিন পরই দেখা দেয় দাম্পত্য কলহ। বিয়ের মাত্র দেড় মাসের মাথায় (চলতি মাসে) মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান শাশুড়ি। চলতি মাসের ৮ অক্টোবর সকালে স্ত্রী, শাশুড়িকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি কড়িয়াটাতে আসেন মোনছের। এ সময় স্ত্রী নূরন্নাহার তার অভিভাবকদের স্বামীর সংসার আর করবেন না বলে জানায়।

আর তা নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যসহ গ্রামবাসী সালিশ বৈঠক করেন। পরে বৈঠকে স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে অস্বীকার করলে রাগ ও ক্ষোভে মেয়ের মা বলে উঠেন, তুই না করলে আমি করবো। আর এতেই মেয়ের জামাইয়ের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলে শাশুড়ি ও মেয়ের জামাইকে বেদম প্রহার করার আদেশ দেন বৈঠকে উপস্থিত চেয়ারম্যান, মেম্বার ও স্থানীয় মাতব্বররা। এরপর শ্বশুরকে দিয়ে জোরপূর্বক তার স্ত্রীকে (মেয়ের মা) তালাক দিতে বাধ্য করেন সালিশে উপস্থিত চেয়ারম্যান, মেম্বার ও স্থানীয় মাতব্বররা। পরে একই বৈঠকে কাজী ডেকে জোরপূর্বক শাশুড়ির সঙ্গে মেয়ের জামাইয়ের বিবাহ রেজিস্ট্রি করানো হয়।

সালিশ বৈঠকে বিয়ে পড়ানো কাজী গোলাম মওলা জিন্না বলেন, সালিশে ইউপি চেয়ারম্যান ও উপস্থিত লোকজন শাশুড়ির সঙ্গে জামাতার বিয়ে পড়ানোর জন্য বললে আমি শাশুড়ি আর জামাতার বিয়ে সম্পন্ন করে বিবাহ রেজিস্ট্রি করি। তবে এ ধরনের বিয়ে হয়না বললেও তারা মানেননি। পরে বাধ্য হয়েই বিয়ে পড়ানোর কাজ শেষ করি।

সালিশে উপস্থিত চেয়ারম্যান

 

নুরুন্নাহারের মা বলেন, ব্যাপক মারধর করে জামাতার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক আছে এমন কথা স্বীকার করতে বাধ্য করা হয়েছে। স্বামীকে তালাক দিতেও বাধ্য করা হয়। পরে কাজী ডেকে জামাতার সঙ্গে আমার বিয়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয় নিয়ে আদালতে মামলা করবো।

মোনছের আলীর মা জানান, ঘটনার পর থেকেই সমালোচনা ও লোক লজ্জার ভয়ে এলাকা ছাড়া রয়েছেন মোনছের ও তার শাশুড়ি। তাদের মারপিট করে বিয়ে পড়ানোর ঘটনায় জড়িতদের বিচার চান তিনি।

মোনছের আলীর স্ত্রী নুরুন্নাহার জানান, বিয়ের পর স্বামী (মোনছের) শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। সে কারণে তার বাবা মায়ের কাছে স্বামীর সঙ্গে সংসার করবে না বলে জানিয়ে দেন। কিন্তু এটা নিয়ে পরে গ্রাম্য সালিশ হয়। তারপরই এমন ঘটনা ঘটে। তবে মায়ের সঙ্গে তার স্বামীর সম্পর্ক নিয়ে তিনি কিছু বলেননি।

হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, সালিশে এমন পরিস্থিতি হয়েছিল তাতে বিয়ে ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল না। বৈঠকে হাজারও লোকজন সমাবেত হয়েছিল। চেয়ারম্যানের নির্দেশে শাশুড়ি ও জামাতার বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে ঘটনা জানতে পেরেছি। তবে আইনের বাধ্যবাধকতা এবং কোনো পক্ষের অভিযোগ না থাকায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায়নি।

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;