সোহার দাফন সম্পন্ন, শেষবার দেখতে পারলেন না বাবা-মা

  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবাতে ট্রেন দুর্ঘটনা


কাজল সরকার, ডিস্ট্রিক্ট করেরসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, হবিগঞ্জ
সড়ক দুর্ঘটনায় কসবা, ছবি: সংগৃহীত

সড়ক দুর্ঘটনায় কসবা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অভাব-অনটনের সংসার, আছে ঋণের চাপও। তবু দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সুখেই ছিলেন মহিন আহমেদ সোহেল ও নাজমা আক্তার দম্পতি। দুই ছেলে মেয়েকে প্রচণ্ড ভালোবাসতেন। তাইতো তাদের সুখের কথা চিন্তা করে গ্রামের বাড়ি বানিয়াচং ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন চট্টগ্রামে।

সংসারে যতই অভাব-অনটন থাক-না কেন, কখনো ছেলে-মেয়েদের ইচ্ছা অপূর্ণ রাখেননি। কিন্তু কে জানত এত আদরের মেয়েকে এভাবে হারাতে হবে, ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে সাজানো সংসার।

মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) রাত ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা কেড়ে নেয় মহিন আহমেদ সোহেল ও নাজমা আক্তার দম্পতির দুই বছর দুই মাস বয়সী একমাত্র মেয়ে আদিবা আক্তার সোহাকে। এ ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সোহেল ও নাজমা।

পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- অভাবের তাড়নায় ছেলে-মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের বানিয়াচং ছেড়ে চট্টগ্রামে গার্মেন্টসে চাকরি করতেন সোহেল ও নাজমা। সেখানে একটি ভাড়া বাসায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করতে। সঙ্গে থাকতেন নাজমার মা রেনু আক্তার (৪৫)। তাদের অনুপস্থিতিতে দুই সন্তানকে দেখাশোনা করতেন তিনি।

দুর্ঘটনার রাতে দেশের বাড়ি বানিয়াচং থেকে কর্মস্থল চট্টগ্রাম ফেরার পথে দুই ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী ও শাশুড়ি রেনু আক্তারকে নিয়ে রাত সাড়ে ১২টায় শায়েস্তাগঞ্জ থেকে ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ ট্রেনে ওঠেন সোহেল। রাত ৩টার দিকে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হয় তাদের একমাত্র আদরের মেয়ে সোহা। এ ঘটনায় আহত হন সোহেল ও নাজমা। তবে তাদের ছেলে ও শাশুড়ির তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।

সকালে সোহামণির মৃত্যুর খবর আসে বাড়িতে। সঙ্গে সঙ্গে শোকে স্তব্ধ হয়ে যায় চারপাশ। বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে। এরই মধ্যে গুরুত্বর আহত সোহেল ও নাজমাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সারাদিন সোহার মরদেহ পড়ে থাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ফ্লোরে। এমন একটি ছবিও ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। যে ছবিটি নাড়া দেয় দেশবাসীর হৃদয়কে।

পরে ওই দিন বিকেলে বাড়ি থেকে লোকজন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সোহার মরদেহ বাড়িতে এনে দাফন করা হয়। নিয়তির নির্মম পরিহাস, এত আদরের মেয়েকে শেষবারের মতো দেখা হলো না মা-বাবার। তাদের অনুপস্থিতিতেই মাটি চাপা দেওয়া হলো সন্তানকে।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে বানিয়াচং উপজেলার তাম্মলিটুলা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়- শোকে স্তব্ধ চারপাশ। শুনসান নীরবতা বিরাজ করছে সোহার বাড়িতে। বাড়িতে ছিলেন সোহার দাদি সামছুন্নাহার বেগম, ফুফু জাহানারা বেগমসহ কয়েকজন আত্মীয়। সোহার বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলেই হাওমাও করে কেঁদে উঠেন তাঁরা। তাদের কান্নায় চোখে পানি ধরে রাখতে পারেননি সেখানে উপস্থিত কেউই। এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয় সেখানে।

বুক ভরা আর্তনাদ নিয়ে শিশু সোহার দাদি সামছুন্নাহার বেগম বলেন- ‘আমার নাতনি যখনই বাড়িতে আসত আমার কত ভালো লাগত। সারাক্ষণ আমার সাথে থাকত। মিষ্টি মিষ্টি কথা বলত। খাবার খাওয়ার পর আমাকে পানের বাটি এনে দিয়ে বলত ‘দাদি আমি তুমাকে পান বানিয়ে দেই?’

তিনি বলেন- ‘আজ আমার নাতনি এই পৃথিবীতে নেই ভাবতেই পারছি না। এই বলেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।’

সোহার ফুফু জাহানারা বেগম বলেন- ‘সোহামণি অনেক মিষ্টি মেয়ে ছিল। মিষ্টি মিষ্টি কথা বলত বলে আমরা ইচ্ছে করেই তাকে শুধু শুধু কথা বলাতাম। কিন্তু এখন আর আমাদের সোহামণি কোনো কথা বলবে না।’

তিনি বলেন- ‘আমি আমার সোহামণির মৃত্যুর বিচার চাই। এছাড়া সোহামণির বাবা-মা খুব দরিদ্র। তারা ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। ভালো চিকিৎসা করার সামর্থ্য তাদের নেই। তাই আমি সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি তাদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য।’

এদিকে, বাড়ি থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরের একটি করবস্থানে চিরনিন্দ্রায় শায়িত করা হয়েছে সোহাকে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় কবরের উপরে সবুজ কলাপাতা দিয়ে কবরটি ডেকে রাখা হয়েছে। এ সময় সেখানে উপস্থিত অনেকেই দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলছিল- ‘যে মেয়েটিকে এতো ভালোবাসতেন তারা, সেই মেয়েটিকে শেষ দেখার ভাগ্য হলো না তাদের।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবাতে ট্রেন দুর্ঘটনা

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবাতে ট্রেন দুর্ঘটনা

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবাতে ট্রেন দুর্ঘটনা

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবাতে ট্রেন দুর্ঘটনা

;