হবিগঞ্জে পতিত ৪০ হাজার হেক্টর জমি



কাজল সরকার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জে খালি পড়ে আছে ধানের জমি

হবিগঞ্জে খালি পড়ে আছে ধানের জমি

  • Font increase
  • Font Decrease

ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় গেল কয়েক বছর ধরে বোরো চাষ করে লোকসানের মুখে পড়েছেন হবিগঞ্জের কৃষকরা। অব্যাহত এই লোকসানের কারণে বোরো আবাদে আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা। ফলে চলতি বোরো মৌসুমে অনেক জমি খালি রেখেছেন অভিমানী কৃষকরা। বোরো আবাদের মৌসুম শেষের দিকে আসলেও জেলায় এখনো প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমি খালি পড়ে আছে।

তবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বলছে, স্থায়ী হবে না তাদের অভিমান। অনাবাদ কমাতে বিকল্প শস্য চাষে আগ্রহী করা হচ্ছে কৃষকদের।

জানা যায়- গেল কয়েক বছর ধরে হবিগঞ্জে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও বন্যার কারণে মাথায় হাত পড়ে কৃষকদের। একই সঙ্গে ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন কৃষকরা। অব্যাহত লোকসানের কারণে বোরো চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না তারা। বিকল্প পেশা নিয়ে অনেকে আবার এলাকা ছেড়ে ভিড় জমাচ্ছেন শহরে। ফলে দেখা দিচ্ছে শ্রমিক সংকটও। সব মিলিয়ে হতাশাগ্রস্ত কৃষক পতিত রেখে দিচ্ছেন অনেক জমি।

অল্প জমিতে রোপণ করা হচ্ছে বরো ধানের চারা

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়- চলতি মৌসুমে ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু বোরো আবাদের মৌসুম প্রায় শেষ হতে চলেছে। অথচ এখন পর্যন্ত আবাদ হয়েছে মাত্র ৮০ হাজার হেক্টর জমি। বাঁকি প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিই অনাবাদী রয়ে গেছে।

বোরো আবাদ কমে যাওয়ার প্রমাণ তুলে ধরেছেন সার-বীজ বিক্রেতা ও বিদ্যুৎ অফিস। ব্যবসায়ীদের মতে অন্য বছরের তুলনায় এ বছর সার-বীজ বিক্রি কমেছে অর্ধেক। ফলে টন টন বীজ কোম্পানিতে ফেরত পাঠিয়েছেন ডিলাররা। আর বিদ্যুৎ অফিস বলছে সেচ পাম্পের জন্য গত বছর জেলায় ৩৩টি সংযোগ দেওয়া হলেও চাহিদা না থাকায় এ বছর সংযোগ দেওয়া হয়েছে মাত্র আটটি।

কৃষকরা বলছেন- সার-বীজের দাম, শ্রমিকের মজুরি, সেচ-হালের ব্যয় দিনদিন বাড়ছে। কিন্তু সেই তুলনায় ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতো দূরের কথা, উল্টো দিনদিন কমছে। সরকারের পক্ষ থেকে ধান কেনা হলেও তা যথেষ্ট নয়। আবার সরকারি ধান সংগ্রহে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হয় না। এসব কারণে বোরো চাষ করে প্রতি বছরই বিপুল পরিমাণ লোকসান গুণতে হয় কৃষকদের। ফলে এ বছর অনেক কৃষকই বোরো চাষ না করে ফাঁকা রেখে দিয়েছেন ধানী জমিগুলো।

সরেজমিনে বানিয়াচং, লাখাই, মাধবপুর, সদর ও নবীগঞ্জ উপজেলার বেশ কিছু হাওর ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ হাওর এখনো ফাঁকা পড়ে আছে। জমিগুলো ফেটে চৌচির হয়ে গেলেও চাষের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না কৃষকরা। কেউ কেউ আবার ধানি জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি ফলিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলার লুকড়া এলাকার কৃষক আল আমীন বলেন, ‘বোরো চাষ সব চেয়ে কষ্টকর ও ব্যয়বহুল। বোরো আবাদ করতে বীজতলা তৈরি, সার প্রয়োগ, বীজ তলা থেকে চারা উত্তোলন, ধানি জমি প্রস্তুত, চারা রোপণ, আবার সার প্রয়োগ, কীটনাশক প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার, ধান কাটা, মাড়াই করা ও ধান শুকিয়ে ঘরে তুলা পর্যন্ত শুধু খরচ আর খরচ। অথচ এতো খরচ আর পরিশ্রমের পরও ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া যায় না। তাই এ বছর ধান চাষ কমিয়ে দিয়েছি।’

একই উপজেলার দল গ্রামের কৃষক তালেব মিয়া বলেন, ‘অন্য বছর কয়েক একর জমিতে বোরো চাষ করতাম। কিন্তু এ বছর শুধুমাত্র পরিবারের জন্য কিছু জমি চাষ করেছি। বাকি জমিগুলো এ বছর চাষ করব না।’

হাওরের পানি কমে গেলেও পড়ে ধান চাষ

তিনি আরও বলেন, ‘রোপণের সময় একজন শ্রমিকের মজুরি সাড়ে ৩০০ টাকা, আর ধান কাটার সময় ৫০০ টাকা লাগে। একই সঙ্গে আরও অন্যসব খরচতো আছেই। অথচ এক মণ ধানের দাম মাত্র ৪০০ টাকা। তাহলে জমি করে কী লাভ? উল্টো প্রতি বছরই অনেক টাকা লোকসান গুণতে হয় আমাদের।’

একই এলাকার আব্দুর রহিম বলেন, ‘কিছু জমি বর্গা দিয়েছি। বোরো চাষ করে লোকসানের কারণে চাষিরা বর্গাও নিতে চায় না। তাই আমার অনেক জমি এ বছর খালি পড়ে রয়েছে। আর কিছু জমিতে সবজি ফলিয়েছি।’

সার ও ধানের বীজের ডিলাররা জানান, এ বছর বোরো মৌসুমে বিপুল পরিমাণ বীজ ফেরত পাঠানো হয়েছে কোম্পানির কাছে। আর গোডাউনে আটকা পড়ে আছে প্রচুর পরিমাণ সার।

এ ব্যাপারে মেসার্স রনি ও নয়ন ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক সুবীর দাশ বলেন, ‘চাহিদা না থাকার কারণে এ বছর অবিক্রীত প্রায় ২০ টনের মতো বীজ কোম্পানির কাছে ফেরত পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ৩২ মেট্রিক টনের মতো সার গোডাউনে মজুদ রয়েছে। এগুলো বিক্রি হবে বলেও আশা নেই।’

অলস সময় পার করছেন সার ও ধানের বীজের ডিলাররা

হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. তমিজ উদ্দিন খান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘ধানের ন্যায্যমূল্য না থাকার কারণে বোরো আবাদে কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা গেলে কৃষকের আগ্রহ ফিরিয়ে আনা সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরইমধ্যে ধানের উৎপাদন ব্যয় কমানোর জন্য কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষকরা যাতে লাভবান হয় তার জন্য বিকল্প ফসল হিসেবে ভুট্টা, সরিষা ও সূর্যমুখী আবাদের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ বছর হাওর এলাকায় ৫০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা, তিন হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা ও প্রায় ৫০০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী আবাদ হয়েছে। এভাবে বিকল্প ফসলের দিকে কৃষকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;