বিজয় দিবসে ‘মেডট্রনিক বাংলাদেশ’র আলোচনা



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
‘মেডট্রনিক বাংলাদেশ’র আলোচনা।

‘মেডট্রনিক বাংলাদেশ’র আলোচনা।

  • Font increase
  • Font Decrease

‘বিজয়ের পথে, মেডট্রনিক এর সাথে’ শ্লোগানে বিজয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হল কার্ডিয়াক ও ডায়াবেটিক বিষয়ক অনলাইন স্বাস্থ্য আলোচনা। বিশ্বের অন্যতম মেডটেক প্রতিষ্ঠান ‘মেডট্রনিক বাংলাদেশ’ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে, কালারস এফ এম ১০১ দশমিক ৬ এর সহযোগী হয়ে, বিজয়ের আনন্দঘন দিনটাকে উদযাপন করল এক অনন্য মাত্রায়। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার পথ পরিক্রমা শীর্ষক রেডিও আলাপনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশের প্রথিতযশা চিকিৎসক জাতীয় অধ্যাপক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন বিগ্রেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক এবং বাংলাদেশ ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি প্রফেসর একে আজাদ খান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এর মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এবং মেডট্রনিক এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারুখ আলম।

সম্প্রতি আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি তুলে ধরা হয়। এরপর জাতীয় অধ্যাপক বিগ্রেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিকের নিকট থেকে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. আব্দুল মালিক ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান এবং পাশাপাশি যাদের আত্মত্যাগে ও রক্তের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে সেসকল বীরদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন এবং তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সার্বিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন সবখাতেই পূর্ব পাকিস্তান ছিলো অনেক পিছিয়ে কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাত অনেক দেশের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের কার্ডিওলজি সেবা বর্তমানে আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়েছে। আর কার্ডিওলজি সেবার এ অগ্রগতির সূচনা হয় বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই। ১৯৭৩ সালে তৎকালীন পিজি হাসপাতালে ৮টি করোনারী কেয়ার ইউনিট চালুর মাধ্যমে আধুনিক কার্ডিওলজি সেবার সূত্রপাত ঘটে। পাকিস্তান আমলে কার্ডিওলজি সেবা স্টেথোস্কোপ, ইসিজি ও রেডিওলজি পরীক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো। ডা. আব্দুল মালিকের প্রচেষ্টায় এবং বঙ্গবন্ধুর তত্ত্বাবধানে কার্ডিওলজি সেবার নতুন দ্বার উন্মোচন করা হয়। সম্প্রতি ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব ইভারকেশনের এনজিওপ্লাস্টি প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি দল প্রথম স্থান অধিকার বলে উল্লেখ করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ডা. আব্দুল মালিক।

ডা. আব্দুল মালিক আরও উল্লেখ করেন, মেডট্রনিক বিশ্বজুড়ে কার্ডিওলজি ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন যন্ত্রের উদ্ভাবন করে মানব সেবার জন্য বিশাল অবদান রেখে যাচ্ছে। বিশেষত কার্ডিওলজি সেবার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র তৈরী এবং যন্ত্রের ব্যবহারের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিচ্ছে চিকিৎসকদের। তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ জনবল তৈরির এই উদ্যোগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, চাহিদার তুলনায় এখনও সেবা প্রাপ্তির অপ্রতুলতা রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে কার্ডিওলজি সেবার সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। এছাড়াও হৃদরোগের বিষয়ে আরও জনসচেতনা তৈরি করতে হবে কেননা এই রোগগুলো বেশিরভাগই আমাদের প্রাত্যহিক জীবনাচারের সাথে সম্পৃক্ত।

ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি প্রফেসর এ কে আজাদ খান বলেন, বারডেমই পৃথিবীর একমাত্র ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন যারা এত বৃহত্তর পরিবেশে ডায়াবেটিস সেবা প্রদান করে আসছে। বর্তমানে বারডেম টাইপ-১ ডেডিকেটেড ইনসুলিন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছে। তিনি বলেন, ইনসুলিন বাঁচার জন্য অপরিহার্য উপাদান। কোন প্রাণিই ইনসুলিন ছাড়া বাঁচতে পারে না। তিনি জানান, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টাইপ-১ ডায়বেটিস এর জন্য বিনা মূল্যে ইনসুলিন সরবরাহ করার ঘোষণা প্রদান করেন। তিনি জানান টাইপ-১ ইনসুলিন প্রয়োগের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান করার জন্যই মূলত এই সেন্টারটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

ডা. আজাদ খান বাংলাদেশে ডায়াবেটিস চিকিৎসায় মেডট্রনিক এর অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি উল্লেখ করেন, মেডট্রনিক সর্বপ্রথম ইনসুলিন পাম্প উদ্ভাবন করে। বর্তমানে অনেক কোম্পানি এই পাম্প উৎপাদন করছে। কিন্তু পৃথিবীতে মেডট্রনিক কর্তৃক উদ্ভাবিত পাম্পটিই সবচেয়ে বেশি কার্যকরী এবং সবচেয়ে আনন্দের খবর হলো মেডট্রনিক বাংলাদেশে বিশেষ দামে এই পাম্পের সরবরাহ করে আসছে। বিজয়ের ৪৯তম লগ্নে এসে মেডট্রনিক ডায়াবেটিস চিকিৎসায় বাংলাদেশের পাশে থেকে এদেশের অগ্রগতিতে বিশাল ভূমিকা রাখছে। ডায়বেটিস চিকিৎসায় বারডেমের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে তিনি জানান সকল রোগীকে চিকিৎসার আওতায় আনার লক্ষ্যে বারডেম কাজ করছে। বর্তমানে ৭০ শতাংশ রোগী বারডেমের চিকিৎসা সেবার আওতায় রয়েছে। উন্নত দেশগুলোতে এই হার মাত্র ৫০ শতাংশ। সেদিক থেকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। আর এক্ষেত্রে বারডেম প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের জনগনের প্রত্যক্ষ ভূমিকা এবং মেডট্রনিক এর কারিগরি সহায়তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এছাড়াও মেডট্রনিক এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারুখ আলম লাইভ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে মেডট্রনিক এর অবদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেডট্রনিক পৃথিবীর বড় বড় মেডিকেল মেশিনারীজ উৎপাদকের মধ্যে প্রথম সারির একটি প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৩ সাল থেকেই মেডট্রনিক বাংলাদেশে বিভিন্ন মেডিকেল যন্ত্র সাপ্লাই করে আসছে। ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশে সরাসরি কাজ করছে। শুরুতেই ফারুখ আলম উল্লেখ করেনÑ কার্ডিওলজি, ডায়াবেটিস, নিউরোসার্জারির মত অসংক্রামক রোগের কারণে ৬৭ শতাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। দিনে দিনে এর সংখ্যা বাড়ছে। সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকলে এর প্রভাব দিন দিন বাড়তেই থাকবে। আর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মেডট্রনিক সবসময় থাকবে বাংলাদেশের পাশে।

তিনি উল্লেখ করেন, চিকিৎসা ক্ষেত্রে মেশিন এবং দক্ষ জনবল খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মেডট্রনিক বিশ্বমানের মেডিকেল ইকুইপমেন্ট তৈরি করছে। ইউরোপ, আমেরিকা তথা উন্নত বিশ্বে যে মানের মেশিনারিজ সরবরাহ করা হয় বাংলাদেশেও ঠিক একই মানের মেশিন সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু এই মেশিনগুলোর সর্বোচ্চ কার্যকারিতা পাওয়ার জন্য প্রয়োজন দক্ষ জনবল, যারা যন্ত্রগুলোর সঠিক ও কার্যকর প্রয়োগ করতে পারে। আর এ লক্ষ্যে মেডট্রনিক একটি ডেডিকেটেড ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছে যেখানে ডাক্তারদের বিনামূল্যে বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অনেক দক্ষ ও অভিজ্ঞ মানুষজন কাজ করছে। যার ফলে বাংলাদেশেও আজ বিশ্বমানের কার্ডিওলজি সেবা পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি উল্লেখ করেন, অনেকেই চিকিৎসার জন্য বিদেশ যায়। কিন্তু বর্তমান হার্ট ফাউন্ডেশন ও বারডেমে যে বিশ্বমানের চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে তা এখনও অনেকের কাছেই অজানা। মানুষের কাছে এই তথ্যগুলো পৌছাঁনো দরকার। আর এইক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করবে বিভিন্ন গনমাধ্যম। তিনি গনমাধ্যমগুলোকে আহ্বান জানান চিকিৎসা সেবার এই সাফল্যগুলো তুলে ধরতে এবং জনগনের নিকট প্রচার করতে।

‘বিজয়ের পথে, মেডট্রনিক এর সাথে’ স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক এই অনুষ্ঠানে ধারনকৃত বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। শুরুতেই বিজয়ের ৪৯ তম বছরের শুভেচ্ছা জানান তিনি। মেয়র করোনা মহামারীর প্রেক্ষাপটে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিদ্যমান কার্যক্রমগুলো তুলে ধরেন। তিনি জানান, বৈশ্বিক করোনা বিশ্ববাসীর জন্য প্রতিকূল। করোনা বিস্তারের সময়কালীন ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ যাতে না বাড়ে সেজন্য দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কঠোর পদেক্ষপগুলো তিনি উল্লেখ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে একটি দুর্নীতিমুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও করোনা মোকাবেলায় তিনি জনগনকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান। মেডট্রনিক এর কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি জানান বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধনে মেডট্রনিক এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। করপোরেট সোস্যাল রেসপনসিবিলিটির আওতায় স্বাস্থ্যখাতে মেডট্রনিক এর কার্যক্রমকে আরও এগিয়ে নেয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানটি কালারস এফ এম- এর ফেসবুক পেইজ এ সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আর জে আশা আমান এবং পরিকল্পনা সহায়ক ছিলেন, ব্র্যান্ড কনসালটেন্সী প্রতিষ্ঠান রূপ আর সামগ্রিক অনুষ্ঠানের সমন্বয় করেন মেডট্রনিক এর কম্যুনিকেশন স্পেশালিস্ট তুহিনূর সুলতানা। মেডট্রনিক বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড এর সৌজন্যে এ অনুষ্ঠানটিতে অফলাইন ও অনলাইন শ্রোতাকে, রূপান্তরিত স্বাস্থ্যসেবার পালাবদলের চিত্র পরিবেশন করা হয়।

 

   

বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল



রাকিব হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল

বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ভোজ্য তেলের ওপর থেকে মূল্য সংযোজন কর (মূসক-ভ্যাট) প্রত্যাহারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে সয়াবিন তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু, ভোজ্য তেলের ‘যৌক্তিক মূল্য’ নির্ধারণ করে দিলেও তা মানার ব্যাপারে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

বাজারে গিয়ে দেখা যায় নির্ধারিত মূল্যের চাইতেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। দাম নেবার কারণ জানতে চাইলে দায়সারা উত্তর ব্যবসায়ীদের।

গতকাল (১৮ এপ্রিল) দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্য তেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন দাম ঘোষণা করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

সংবাদ সম্মেলনে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৪ টাকা বাড়িয়ে ১৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতলের দাম ১৮ টাকা বাড়িয়ে ৮১৮ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেলের দাম দুই টাকা কমিয়ে ১৪৭ টাকা করা হয়েছে।

তবে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাজারে গিয়ে দেখা গেছে সরকার নির্ধারিত মূল্যের কোন তোয়াক্কা করছে না দোকানীরা।

প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হলেও লিটার প্রতি ১৮ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা করে। আর বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৭ টাকা বিক্রি করার কথা থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা দরে। তবে ভিন্ন চিত্র ছিলো ৫ লিটারের বোতলজাত তেলের দামে। সরকারের বেঁধে দামের চাইতেও প্রতি ৫ লিটারের বোতলে ১৮ টাকা কম মূল্যে ৮০০ টাকা করে বিক্রি করছেন দোকানীরা।

সরকারের বেঁধে দামে তেল বিক্রি না করার কারণ জানতে চাইলে রাব্বি ফ্লাওয়ার মিলের স্বত্বাধিকারী লুতফুর রহমান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, গতকাল কি ঘোষণা হইছে তেলের দাম কমছে নাকি বাড়ছে তা ভালো করে জানিনা। তবে শুনছি ফেছবুকে টিভিতে। আমাদের দোকানে যে তেল আছে তা আগের দামে কেনা। তাই আগের দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুন তেল আসলে আবার নতুম দামে বিক্রি করবো। খোলা তেলে ১৮ টাকা বেশি নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ যে বললাম আগের দামে কেনা। আমি তো নতুন দামের চাইতে ৫ লিটারের বোতলে ১৮ টাকা কম নিচ্ছি এখনো। কিন্তু খোলা তেল আমার আগের দামে কেনা তাই ১৮ টাকা বেশি নিতেছি। দাম বৃদ্ধির ঘোষণা এলে যতো দ্রুত দাম বাড়ে কিন্তু দাম কমানোর ঘোষণা এলে কমেনা কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বড় বড় পাইকারদের কাজ। তারা সিন্ডিকেট করে। কিন্তু আমাদের এমন সুযোগ নেই। আমরা এক দুই টন মাল সর্বোচ্চ কিনি। কখনো আরও কম কিনি।

আরেক ব্যবসায়ী খাদিজা এন্টারপ্রাইজের মালিক মোসলে উদ্দিন বলেন, ৫ লিটারের তেলের বোতলে যে দাম ৮০০ টাকা দেয়া সেই দামে বিক্রি করছি। এছাড়া এক লিটারের বোতলের দাম ১৬৩ টাকা দামে বিক্রি করছি। তবে খোলা তেল আমার কেনা ছিলো ১৬৩ টাকা করে তাই আমি ১৬৪/১৬৫ টাকা দামে বিক্রি করতেছি। খোলা তেল ১৪৭ টাকা সরকার নির্ধারণ করছে কিন্তু সেটা কি ভালো নাকি মন্দা জানিনা। যে দামে কিনি তার থেকে এক দুই টাকা বেশি দামে বিক্রি করি।

একটি সিকিউরিটি গার্ডের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আলতাফ হোসেন। তার কাছে খোলা তেল কতো নিলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৬৫ টাকা নিলো। খোলা তেলে দুই টাকা কমে ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে জানেন কিনা প্রশ্ন করলে আলতাফ হোসেন বলেন, ভাই এসব খবর দিয়ে তো কোন কাজ হয়না। দাম বাড়লে তখন ব্যবসায়ীরা পারলে আরও বাড়িয়ে নেয়। অথচ কমলে তিন মাসেও দাম কমার খবর থাকেনা। আপনার সামনেই তো বেশি নিলো কিছু করার আছে বলেন? আমি এক লিটার তেল নিতে আসছি। এখন এদের সাথে কি দাম নিয়ে ঝগড়া করবো।

আরেকজন ক্রেতা সজিব মোল্লা বলেন, বাজারে সব কিছুর দাম বাড়ে তবে খোলা তেলের দাম কমাইছে শুনে ভালো লাগলো। তবে দুই টাকা দাম কমায় তার প্রভাব আসলে বাজারে পরেনি। তাছাড়া লোক দেখানো বাজার মনিটরিং করে বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণ করা কখনো সম্ভব না। একদিকে ব্যবসায়ীদের উপর ট্যাক্স বসাইবেন। জরিমানা করবেন আবার বলবেন দাম কমাইতে তারা কিভাবে দাম কমাবে। জীবনে শুনছেন কোনকিছুর দাম বাড়লে তা আবার কমে সহজে।

;

শিশুখাদ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রায় চিনি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নেসলের শিশুখাদ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রার চিনির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা পাবলিক আই ও ইন্টারন্যাশনাল বেবি ফুড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের করা গবেষণায় এ তথ্য মিলেছে। শিশুদের খাবারে যাতে চিনি যুক্ত করা না হয় এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সুপারিশ রয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মানদণ্ড পরীক্ষায় কোনো ধরনের ক্ষতিকারক বিষয় সামনে আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া বিএসটিআই’র পক্ষ থেকেও একই কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্য কোম্পানি নেসলে বেশ কয়েকটি দেশে শিশুদের জন্য তৈরি করা দুধ ও সিরিয়াল পণ্যগুলোতে বাড়তি চিনি ও মধু যুক্ত করে, যা স্থূলতা এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধের আন্তর্জাতিক নীতিমালার লঙ্ঘন। নেসলের শিশুখাদ্যে বাড়তি চিনি যুক্ত করার আইন লঙ্ঘনের এই ঘটনা কেবল এশিয়ান, আফ্রিকান এবং লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে নেসলের শিশুখাদ্য সেরেলাক থেকে একজন শিশুকে একবার যে পরিমাণ খাবার পরিবেশন করা হয়, তাতে প্রায় ৩ দশমিক ৩ গ্রাম বাড়তি চিনি উপস্থিতি আছে।

পাবলিক আই বলছে, নেসলে সুইজারল্যান্ডে বাজারজাত করা তাদের পণ্য সেরেলাকে বাড়তি কোনও চিনি ব্যবহার করে না। কিন্তু বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোতে সেরেলাকে বাড়তি চিনি যুক্ত করে তারা।

এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ভারতে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। নেসলের শিশুখাদ্য পণ্যের বিষয়ে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গবেষণায় পাওয়া ফল একটি বৈজ্ঞানিক প্যানেলের সামনে উপস্থাপন করা হবে।

এদিকে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশেও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কথা বলা হয়েছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া যুগান্তরকে বলেন, খাদ্যে ভেজাল কিংবা দূষণের কারণে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সব সময় ব্যবস্থা নিয়ে আসছে। এক গবেষণায় নেসলের দুটি পণ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রার চিনির উপস্থিতির কথা বলা হচ্ছে। এটা আমরা পরীক্ষাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব। বিএসটিআই’র মানদণ্ডে পরিমাপ করব। সেক্ষেত্রে কোনো ধরনের সমস্যা সামনে এলে বা অভিযোগ প্রমাণিত হলে পণ্য দুটি বাজার থেকে তুলে নেওয়ার সুপারিশ করব। এছাড়া মামলা করারও সুযোগ আছে।

এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি নেসলে ইন্ডিয়ার একজন মুখপাত্রর সঙ্গে কথা বলেছে। ওই মুখপাত্র বলেছেন, তারা গত পাঁচ বছরে নেসলের শিশুখাদ্যে যোগ করা চিনির পরিমাণ প্রায় ৩০ শতাংশ কমিয়েছে। এছাড়া আরও কমিয়ে আনার বিষয়ে তারা পণ্যগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করছেন।

গবেষণায় দেখা যায়, ভারতে নেসলের ১৫টি সেরেলাক শিশুখাদ্য থেকে একটি শিশুকে একবার যে পরিমাণ খাবার দেওয়া হয় তাতে গড়ে প্রায় ৩ গ্রাম চিনি থাকে। একই পণ্য জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যে বিক্রি করা হচ্ছে বাড়তি চিনি ছাড়াই। অন্যদিকে ইথিওপিয়া ও থাইল্যান্ডে এই চিনির পরিমাণ প্রায় ৬ গ্রাম।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পণ্যের মান প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআই সূত্র জানায়, এটি অন্য দেশের তৈরিকৃত পণ্য। তবে এগুলো আমাদের দেশের মানদণ্ড অনুযায়ী এক নাও হতে পারে। সেরেলাক ও নিডো যদি দেশের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী মান ঠিক রেখে পণ্য তৈরি করে তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু যেহেতু একটি প্রতিবেদনে ক্ষতির বিষয়টি এসেছে, তাই এই বিষয়ে সংস্থার পক্ষ থেকে দেখা হবে। যদি কোনো ক্ষতিকারক কিছু থাকে, তাহলে পদক্ষেপ নেব।

;

সরবরাহ স্বাভাবিক তবুও বাজার চড়া



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সরবরাহ স্বাভাবিক তবুও বাজার চড়া

সরবরাহ স্বাভাবিক তবুও বাজার চড়া

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ঈদ পরবর্তীত বাজারে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও নিত্য পণ্যের দাম চড়া। ক্রেতাদের আনাগোনা কম থাকলেও ঊর্ধ্বমুখী শাক সবজি ও মাছের দাম। বিশেষ করে ৫০ টাকার নিচে কোন সবজি নেই বাজারে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কাওরান কাওরান বাজার ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।

কাওরান বাজারের খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আজকে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০টাকা কেজি, পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকা কেজি, রসুন ২০০-২২০ টাকা কেজি, আদা ২০০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ৮০-১২০ টাকা কেজি, ধনেপাতা কেজি ১০০টাকা আর আটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা করে। লেবুর হালি ৩০-৪০ টাকা।

এছাড়া শবজির বাজারে ক্রেতাদের আনাগোনা কম থাকলেও দাম আগের মতোই চড়া ৫০ টাকার নিচে কোন সবজি নাই। মিষ্টি কুমড়া ৪০, মুলা ৫০-৬০, পটল ৭০ _১২০, বেগুন ৬০ টাকা,বরবটি ৮০,  জালি প্রতি পিছ ৬০ টাকা, ভেন্ডি ৬০ টাকা কেজি, টমেটো ৫০ শশা ৫০, লাউ প্রতি পিস ৭০-৮০ করলা ১২০ টাকা, করলা ৬০-৭০, বাধাকপি ৫০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, গাজর ৬০, ক্যাপসিকাম ৪৫০ টাকা।

তবে মাছ মাংসের বাজারে দাম এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানায় ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ক্রেতারা বলছে মাছের গায়ে হাত দেয়া যায় না। বাজারে আজকে দেশি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা কেজি, মলা মাছ ৭০০ টাকা কেজি, নদীর চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা কেজি, এবং চাষের চিংড়ি ৭০০টাকা কেজি, আইর মাছ ৮০০টাকা কেজি,কাতল ৭০০ টাকা, দেশি বড় বোয়াল ১২০০ টাকা, কোরাল মাছ ১০০০ টাকা। আর ৫০০গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ টাকা কেজি।মুরগী ২১০ টাকা, গরু ৭৫০-৭৮০ টাকা,

কল্যাণপুর থেকে কাওরান বাজারে সপ্তাহের বাজার করতে এসেছেন সুফিয়া বেগম। তিনি জানান ৫ হাজার টাকা নিয়ে এসেছি বাজারে। মাত্র ৫ জনের সংসারের বাজার করতে ইতিমধ্যে বাজারের প্রায় অর্ধেক টাকা শেষ হয়েছে শুধু মাছ কিনতে। এখনো সবজি ও ঘরের অন্যান্য বাজার করা বাকি। আগে যেখানে মাত্র ৩ হাজার টাকায় সপ্তাহের পুরো বাজার শেষ হয়ে যেতো সেখানে এখন ৫ হাজার টাকা দিয়ে কোনমতে টেনেটুনে সংসার চালাতে হচ্ছে তাকে। কাওরান বাজারে কিছুটা কম দামে কিনতে আসলে দামের পার্থক্য এলাকার বাজারের চাইতে খুব একটা কম না। তবে টাটকা পণ্য পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায় বলে তিনি জানান। বাজারের  ভয়াবহ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দুইজনে মিলে কামাই করেও এখন অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে সংসারের চাহিদা মেটাতে।

কাওরান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী লতিফ বার্তা২৪.কম’কে জানান, বাজারে সরবরাহ আছে কিন্তু চাহিদার তুলনায় কম। তাই বেড়েছে সকল মাছের দাম। দেশি মাছের চাহিদা বেশি থাকায় তার দাম একটু বেশি। তবে চাষের মাছের দাম আগের মতোই আছে।

;

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম

  • Font increase
  • Font Decrease

ভরিতে ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে একভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জানিয়েছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

;