অগ্রণী ব্যাংকের ভবিষ্যৎ কি!



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি অগ্রণী ব্যাংক কি বিপদের মুখোমুখি! বড় ঋণ গ্রহীতাদের বেশিরভাগ বেসরকারি খাতের। এই বেসরকারি খাতের কোম্পানীগুলির মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ওরিয়ন গ্রুপ। এদের ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৯৯ কোটি টাকা। দ্বিতীয় হচ্ছে ইউনিক গ্রুপ। এদের পরিমাণ ১ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা।

অগ্রণী ব্যাংকের বেসরকারি খাতের ঋণ পরিস্থিতি রোববার প্রকাশ করেছে দৈনিক বণিক বার্তা। প্রথম পাতায় প্রধান শিরোনাম হিসাবে প্রকাশিত এই রিপোর্টে বলা হয়েছে:

দেশের বড় কিছু করপোরেটের হাতে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়েছে অগ্রণী ব্যাংকের ঋণ। ব্যাংকটির বিতরণকৃত মোট ঋণের প্রায় ৪০ শতাংশই গিয়েছে ৩৬ গ্রাহকের কাছে, যার সিংহভাগই বেসরকারি খাতের। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে সাত ও ২৯টি। এসব বড় গ্রাহকের মধ্যে মূলত বেসরকারি খাতের কোম্পানিগুলোর ভালোমন্দ বা সদিচ্ছার ওপরই এখন নির্ভর করছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির ভবিষ্যৎ।

গত বছরের শেষে ব্যাংকটির মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৯ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩৬ কোম্পানিকে দেয়া হয়েছে ২৩ হাজার ৭৩ কোটি টাকারও বেশি। এসব কোম্পানির একেকটি ২৮৪ কোটি থেকে শুরু করে ২ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নিয়েছে।

অগ্রণী ব্যাংকের ঋণের সবচেয়ে বড় গ্রাহক ওরিয়ন গ্রুপ। ২০২১ সাল শেষে ওরিয়নের কাছে ব্যাংকটির ঋণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৯৯ কোটি টাকা। ব্যাংকটি থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঋণ গিয়েছে ইউনিক গ্রুপের কাছে। গত বছর শেষে এ গ্রুপের কাছে অগ্রণী ব্যাংকের ঋণ ছিল ১ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। তৃতীয় স্থানে রয়েছে এ নিট স্পিন লিমিটেড। কোম্পানিটি অগ্রণী ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছে ১ হাজার ২৬১ কোটি টাকা।

ঋণের অন্য বড় গ্রাহকদের মধ্যে ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে জাকিয়া গ্রুপের কাছে। এছাড়া জজ ভূঞা গ্রুপের কাছে ৯২৯ কোটি, বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের কাছে ৯০০ কোটি, থার্মেক্স গ্রুপের কাছে ৭৬৯ কোটি, তানাকা গ্রুপের কাছে ৭৩৭ কোটি, ম্যাগপাই গ্রুপের কাছে ৭৩০ কোটি ও নাইস স্পান মিলস লিমিটেডের কাছে ৬৮৩ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে অগ্রণী ব্যাংকের। এসব গ্রাহক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির শীর্ষ ১০ ঋণগ্রহীতা হিসেবে স্বীকৃত।

বড়দের কাছে ঋণ কেন্দ্রীভূত হয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করছেন অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, বড় ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু রীতিনীতি আছে। সেসব রীতিনীতি মেনেই আমরা বড় গ্রহকদের ঋণ দিয়েছি। তবে অগ্রণী ব্যাংকের ঋণ বড়দের কাছে কেন্দ্রীভূত হয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমি স্বীকার করছি। যেকোনো ব্যাংকের ক্ষেত্রেই এ ধরনের ঋণ কিছুটা ঝুঁকি তৈরি করে। আশার কথা হলো অগ্রণী ব্যাংকের বড় গ্রহকদের ঋণ নিয়মিত আছে। যেসব ঋণ এরই মধ্যে বিতরণ হয়ে গিয়েছে, সেগুলো আদায়ে জোর দেয়া হচ্ছে।

জায়েদ বখত বলেন, সম্প্রতি বড়দের ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু বিধিনিষেধ দিয়েছে। আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিধিনিষেধ মেনে বড়দের ঋণ নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হয়েছি। ঋণের ঝুঁকি কমাতে আমরা সিন্ডিকেশনের পদ্ধতিতে বড় ঋণ বিতরণ করছি। পাশাপাশি এসএমই খাতে ঋণ বিতরণে জোর দেয়া হচ্ছে।

অগ্রণী ব্যাংকের সরকারি-বেসরকারি বড় ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে আরো রয়েছে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (৬৬২ কোটি টাকা), প্যাসিফিক গ্রুপ (৬৫৮ কোটি), যমুনা গ্রুপ (৬৩০ কোটি), প্রাইম গ্রুপ (৬০৮ কোটি), ঢাকা হাইড অ্যান্ড স্কিন্স লিমিটেড (৫৬৬ কোটি), নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন (৫৫৩ কোটি), প্যারামাউন্ট বিট্র্যাক এনার্জি লিমিটেড (৫৩১ কোটি), নোমান গ্রুপ (৫২৭ কোটি), মুন গ্রুপ (৫২১ কোটি), বসুন্ধরা গ্রুপ (৫১৪ কোটি), বিএসআরএম স্টিল (৫১১ কোটি), নোমান উইভিং মিলস লিমিটেড (৫১১ কোটি), বেক্সিমকো গ্রুপ (৫০৯ কোটি), সোনালী গ্রুপ (৫০৩ কোটি), বাংলাদেশ সুগার অ্যান্ড ফুড অর্গানাইজেশন (৪৯০ কোটি), আরপিসিএল (৪৬৭ কোটি), বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (৪৪০ কোটি), সিকদার গ্রুপ (৪৪০ কোটি), অগ্রণী ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (৪০১ কোটি), অ্যারিস্টোক্র্যাট গ্রুপ (৩৯৪ কোটি), নিটল মটরস লিমিটেড (৩৪৩ কোটি), আবদুল মোনেম লিমিটেড (৩০৯ কোটি), লাবিব গ্রুপ (৩০১ কোটি), প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ (২৯২ কোটি), সাদ মুসা ফ্যাব্রিকস লিমিটেড (২৮৫ কোটি) ও সিটি গ্রুপ (২৮৪ কোটি টাকা)। অগ্রণী ব্যাংকের এ শীর্ষ ৩৬ গ্রাহকের মধ্যে সাতটি কোম্পানি সরকারি খাতের। এসব কোম্পানির কাছে ব্যাংকটির ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা।

অগ্রণী ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১ সাল শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৯ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা। এ ঋণের ৩২ দশমিক ২৮ শতাংশই বিতরণ করা হয়েছে একটিমাত্র শাখা থেকে। অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের নিচে অবস্থিত প্রিন্সিপাল শাখা থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ২৯৮ কোটি টাকার ঋণ। অভিযোগ রয়েছে, শাখাটিকে ঘিরে অনিয়ম-দুর্নীতির একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। ব্যাংকটির প্রায় সব বড় গ্রাহকই প্রিন্সিপাল শাখা থেকে ঋণ নিয়েছেন।

২০২১ সাল শেষে অগ্রণী ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ৪০ শতাংশ গিয়েছে মাত্র ৩৬ গ্রাহকের কাছে। তবে আগের বছর বড় এসব গ্রাহকের কাছে ঋণ কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ার হার ছিল আরো বেশি। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর অগ্রণী ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৫১ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। এ ঋণের অর্ধেকের বেশি তথা ২৬ হাজার ৬১৯ কোটি টাকাই পেয়েছিল মাত্র ৩৬ গ্রাহক। বড় কয়েকটি করপোরেটের ঋণ কিছুটা কমে আসায় গত বছর কেন্দ্রীভূত ঋণের পরিমাণ কমেছে।

২০১৬ সাল থেকে অগ্রণী ব্যাংকের এমডি পদে দায়িত্ব পালন করছেন শামস-উল ইসলাম। প্রথম মেয়াদে তিন বছরের দায়িত্ব পালন শেষ হলে ২০১৯ সালে তাকে দ্বিতীয় মেয়াদে এমডি নিয়োগ দেয়া হয়। আগামী আগস্টে এমডি পদে তার দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংক কোম্পানিতে নির্ধারিত এমডি পদের বয়সসীমা ৬৫ পূর্ণ হবে শামস-উল ইসলামের। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই শামস-উল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

শামস-উল ইসলাম অগ্রণী ব্যাংকের এমডি পদে দায়িত্ব নেয়ার সময় ২০১৬ সালে অগ্রণী ব্যাংকে ২০০ কোটি টাকার বেশি এমন ঋণগ্রহীতার সংখ্যা ছিল ১৩। এসব গ্রাহকের কাছে ব্যাংকটির মোট ঋণের পরিমাণ সীমাবদ্ধ ছিল ৬ হাজার ১১২ কোটি টাকায়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৯২৯ কোটি টাকা ঋণ ছিল ওরিয়ন গ্রুপের। কিন্তু গত পাঁচ বছরে অগ্রণী ব্যাংকের মূলধনের ১০ শতাংশের বেশি ঋণ নেয়া বড় গ্রাহকের সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে। একই সঙ্গে বড় গ্রাহকদের কাছে ব্যাংকের কেন্দ্রীভূত ঋণের পরিমাণ বেড়েছে চার গুণ।

গত পাঁচ বছরে অগ্রণী ব্যাংকের আমানত, বিতরণকৃত ঋণসহ ব্যবসায়িক পরিধিও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু এ সময়ে ব্যাংকটির আর্থিক স্বাস্থ্য সুদৃঢ় না হয়ে আরো ভঙ্গুর হয়েছে। ২০২১ সালে সুদ খাতে ব্যাংকটি লোকসান দিয়েছে ৭৪৪ কোটি টাকা। গত বছর অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা বেড়েছে। ২০২১ সাল শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৯৯২ কোটি টাকায়, যা মোট ঋণের ১৬ দশমিক ৭১ শতাংশ। খেলাপি ঋণের বিপরীতে পর্যাপ্ত সঞ্চিতিও রাখতে পারেনি অগ্রণী ব্যাংক। ২০২১ সাল শেষে ৪ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা সঞ্চিতি ঘাটতি ছিল ব্যাংকটির।

আইএমএফের পরামর্শ মেনে বাজেট করেনি সরকার: অর্থমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শ শুনলে বাংলাদেশ সফল হবে। তবে আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে বাজেট প্রণয়ন করিনি বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেছেন, আইএমএফ লোনের (ঋণ) পাশাপাশি বাংলাদেশকে সার্বিক পরামর্শ দেয়। আমি মনে করি, তাদের পরামর্শ শুনলে সফল হবো। তাদের ওভারঅল প্রেসক্রিপশন থাকে। তবে সেখান থেকে যেটুকু গ্রহণ করা যায় করব। বাকি সব আমরা আমাদের মতো করব।

শুক্রবার (২ জুন) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

কর্মসংস্থান বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত যেসব কমিটমেন্ট আমি দিয়েছি, সবগুলো পূরণ করেছি। বলেছিলাম ২ কোটি মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করব, কিন্তু আমরা ২ কোটি ৪৫ লাখ মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করেছি। দেশের জনসংখ্যা বাড়ছে, চাকরি প্রার্থীও বেড়েছে। তবে এখন কর্মসংস্থানও বেড়েছে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, কর্মসংস্থান শুধু সরকারি সেক্টরে নয় বেসরকারি সেক্টরেও আছে। আগে মানুষের ঘরে খাবার থাকত না। আগে শুধু খাবার দিলে কাজ করত, এখন সেটি নেই। বেসরকারি খাতেও অনেক কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সেটিসহ বলেছিলেন ৩ কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের কথা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত রয়েছেন, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, এনবিআর চেয়ারম্যান রহমাতুল মুনিম, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বাজেটের আকার চূড়ান্ত করা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা।

নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ব্যতীত) ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫০৭ টাকা।

মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছর ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ।

প্রস্তাবিত বাজেট ২৬ জুন অনুমোদন হবে। আর ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে।

;

বাজেটে কৃষিকে আমরা সর্বোচ্চ গুরত্ব দিয়েছি: কৃষিমন্ত্রী



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এই বছরের বাজেটে কৃষিকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। বিনামূল্যে না হলেও অনেক সহযোগিতা দিয়ে কৃষির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কম্বাইন হারভেস্টার আমরা দিচ্ছি। গ্রামীণ ও পল্লী বাংলাদেশের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করার জন্য এই বাজেটকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২ জুন) দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুর রাণী ভবানী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্পে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাজেট বিষয়ে বিএনপির নেতা কর্মীরা গত ১৪ বছর যাবতই বলেন এটা উচ্চ বিলাসী বাজেট, অবাস্তব বাজেট, কল্পনা ভিত্তিক বাজেট। কল্পনা ভিত্তিক বাজেট হলে পঁাচ লাখেরও কম চার লাখ ৮৪ হাজার কোটি টাকা জাতীয় আয় ৪৪ লাখ হতো না। এটাই প্রমাণ প্রতি বছরই আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ ও আধুনিক বাংলাদেশ করার লক্ষ্য নিয়ে বাজেট দিয়েছি। সেই লক্ষ্যে অদম্য গতিতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বিদেশি বিভিন্ন পত্র পত্রিকা বলে অদম্য বাংলাদেশ। সেই অদম্য বাংলাদেশে অপ্রতিরোধ্য গতি। আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে। এই গতিকে আমরা আরও বেগবান করবো। এই বাজেটের মাধ্যমে উন্নয়নকে আর গতিময় করবো।

বিরোধী দলকে উদ্দেশ্য করে কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিরোধী দল বলে উচ্চ বিলাসী, শেখ হাসিনা উচ্চ বিলাসী। বাংলাদেশের মানুষকে আরও উন্নত করতে চায়। আমরা বলছি, এই বাজেট বাস্তব সম্মত। অতিতেও আমরা সফল হয়েছি। আগামী দিনেও এই বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সফল হবো। আগে বাংলাদেশ চার লাখ ৮৪ কোটি টাকা ছিলো মোট আয়। সেটা বেড়ে হয়েছে ৪৪ লাখ। আগামী বছর আরও বেশি হবে। বাংলাদেশের আয় আমরা নয় গুণ বৃদ্ধি করেছি। এই বাজেট প্রণয়ন হলে এটি আরও বৃদ্ধি হবে।

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ মোটেই বিচলিত নয়, কোন স্যাংশন দিয়ে এ উন্নয়ন ব্যাহত করতে পারেব না। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ব্যাহত করতে পারবে না। আপনারা যত ধরনের স্যাংশনই দেন তা মোকাবেলা করার মতো যোগ্যতা বাংলাদেশের আছে।

 মধুপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার শফি উদ্দিন মনি, সাবেক পৌর মেয়র মাসুদ পারভেজ প্রমুখ।

ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্পে ১০০ জন ডাক্তার দিন ব্যাপী প্রায় ১০  সহস্রাধিক রোগীদেরকে সেবা প্রদান করবেন।

;

ন্যূনতম ২০০০ টাকা কর মানুষের জন্য বোঝা: সিপিডি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রস্তাবিত বাজেটে আয়কর রিটার্নের বাধ্যতামূলক ২০০০ টাকা ন্যূনতম কর নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বোঝা হবে, এই দুই হাজার টাকা কর তুলে দেওয়া উচিত বলে মনে করছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

শুক্রবার (২ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে বাজেট পরবর্তী ব্রিফিংয়ে এমন সুপারিশ করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড, মোস্তাফিজুর রহমান।

ব্রিফিংয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন কালে তিনি বলেন, করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর কথা বলেছিলাম। সীমারেখা তিন লাখ থেকে সাড়ে তিন লাখ করা হয়েছে, যা একটি ভালো দিক।

তিনি আরও বলেন, তবে ৩৮ সরকারি-বেসরকারি সেবা নিতে গেলে সেবাগ্রহীতার ট্যাক্স রিটার্ন সাবমিট করতে হবে এবং আয় যাই হোক, দুই হাজার টাকা কর দিতে হবে, সেটা অবিবেচনা প্রসূত। এ ধরনের কর নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বোঝা হয়ে যাবে। এই দুই হাজার টাকা ন্যূনতম কর তুলে দেওয়া উচিত।

ফাহমিদা বলেন, চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বাজেটে স্বীকৃতি ও সমাধান দুটোই অপ্রতুল। সামষ্টিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রস্তাবিত বাজেটে যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তা বাস্তবতা বিবর্জিত।

এবারের বাজেটের মূল দর্শন হলো- ২০৪১ সালের মধ্যে সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। স্মার্ট বাংলাদেশ চারটি মূল স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি ও স্মার্ট ইকোনমি।

এর আগে বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন। অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় প্রস্তাব করেন ৩৮ ধরনের সরকারি-বেসরকারি সেবা নিতে আয়কর সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আয়কর সনদ না হলে এসব সেবা পাওয়া যাবে না। আয়কর সনদ নেওয়ার ক্ষেত্রে করযোগ্য আয় না থাকলেও কর দিতে হবে দুই হাজার টাকা।

 

;

থাকছে না পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার সুযোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বাইরে পাচার হওয়া অর্থ বিনা প্রশ্নে আয়কর বিবরণীতে প্রদর্শনের সুযোগের বিধান থাকছে না ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে। একইসঙ্গে বিদেশে রক্ষিত স্থাবর সম্পদ রিটার্নে প্রদর্শনের সুযোগও বাতিল হচ্ছে।

এ দুটো বিশেষ সুবিধার মেয়াদ আগামী ৩০ জুন শেষ হচ্ছে। কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ায় প্রস্তাবিত বাজেটে এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল নির্দেশনা দেননি।

চলতি অর্থবছরের বাজেটের অর্থ আইন-২০২২ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশে অফশোর ট্যাক্স অ্যামনেস্টির বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ বিধানের ফলে কোনো করদাতা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৭ শতাংশ হারে কর পরিশোধ করে তার অপ্রদর্শিত বৈদেশিক সম্পদ প্রদর্শন করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে বৈদেশিক সম্পদের উৎস নিয়ে বাংলাদেশের কোনো কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন তুলতে পারবে না। নীতিনির্ধারকেরা মনে করেছিলেন সুযোগের সদ্ব্যবহার করে অনেকেই টাকা দেশে ফেরত আনবেন। কিন্তু তা আর হয়নি। যে কারণে প্রস্তাবিত বাজেটে এমন কোনো সুযোগ রাখা হয়নি।

ওই বিধানের আওতায় যে কোনো পরিমাণ নগদ বা নগদ সমতুল্য, ব্যাংক জমা, ব্যাংক নোটস, ব্যাংক হিসাব, কনভারটেবল সিকিউরিটিজ এবং আর্থিক দলিলাদি ৭ শতাংশ কর পরিশোধ করে ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে আনতে পারতেন যে কেউ।

তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) সরকারের এ সহজ সুযোগ কেউ গ্রহণ করেনি বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, এখন পর্যন্ত বিদেশ থেকে দেশে অর্থ ফেরত আনার সুযোগ দিয়েছে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৭টি দেশ। এর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া ছাড়া অন্য কোনো দেশ তেমন সফল হয়নি।

;