বাংলাদেশ থেকে অপসারিত হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম মজুদ 'ডিডিটি'



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
বাংলাদেশ থেকে অপসারিত হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম মজুদ 'ডিডিটি'

বাংলাদেশ থেকে অপসারিত হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম মজুদ 'ডিডিটি'

  • Font increase
  • Font Decrease

গত সাড়ে তিন দশক ধরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বন্দর নগরী চট্টগ্রামের কেন্দ্রস্থলে মজুদ করে রাখা হয়েছিল বর্তমানে নিষিদ্ধ কীটনাশক ডিডিটি (ডাইক্লোরোডিফেনাইলট্রিক্লোরোইথেন)। ক্ষতিকর বিষাক্ত ডিডিটির এটি বিশ্বের বৃহত্তম মজুদ।

৫২০ মেট্রিকটন ওজনের এসব ডিডিটি বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে বিশেষজ্ঞ তত্ত্বাবধানে বিনষ্ট করতে ফ্রান্সে পাঠানো হচ্ছে।

শুক্রবার এসব ডিডিটি ২৪ টি কন্টেইনারে করে ফ্রান্সের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ছেড়ে যাবে বহনকারী জাহাজ।

১৯৮৫ সালে ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহনকারী মশা নিধনের উদ্দেশ্যে পাকিস্তান থেকে ৫০০ মেট্রিক টন ডিডিটি আমদানি করে সরকার। সেসব ডিডিটি নিন্মমানের হওয়ায় সেসময় ব্যবহার করা যায়নি। এরপর থেকেই এসব রাসায়নিক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে কেন্দ্রীয় ওষাধাগারের গুদামে রাখা হয়। এরমধ্যে জীববৈচিত্র্যের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হওয়ায় ১৯৯১ সালে দেশে ডিডিটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।২০০১ সালে স্টকহোম সম্মেলনের চুক্তি অনুযায়ীও সারাবিশ্বে নিষিদ্ধ এই রাসায়নিক।

ক্ষতিকর এই রাসায়নিক অবিরাম দূষক বা প্রেসিসটেন্ট অর্গানিক পলিউটেন্ট (পপস) প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধন করে থাকে। ক্ষতিকর এই রাসায়নিকের ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি, আয়ুষ্কাল কমে যাওয়া, বংশবৃদ্ধিতে অস্বাভাবিকতা, স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি, শিশুর বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত, প্রজননতন্ত্রের ক্ষতি সাধন সহ নানা ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে।

আমদানির ৩৭ বছর পর অবশেষে এই ক্ষতিকর রাসায়নিকটি বাংলাদেশ থেকে ধ্বংসের জন্য ফ্রান্সে পাঠানো হচ্ছে। সম্প্রতি ৩ দফায় ২৪ টি কন্টেইনারে এসব রাসায়নিক শিপিংয়ের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (৩০ নভেম্বর) নগরীর পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লু’র মোহনা হলে এই ডিডিটি অপসারণ প্রকল্পের সমাপ্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব (সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব) মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘উপকূলীয় অঞ্চলে ক্যান্সার বেড়ে যাওয়া সরকারের উদ্ধেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই এলাকায় ক্যান্সার নিয়ে যে চিকিৎসক কাজ করতেন তিনিও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আমরা এ ও জেনেছি যে, মায়ের দুধেরও এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এই ডিডিটি এত বছর এখানে কেন পড়েছিল এটা একটা প্রশ্ন। আমি পরিবেশ সচিব থাকাকালীন যখন শুনেছি, মনে হয়েছে এটি এক মুহূর্তও এখানের রাখা যাবে না। আমরা সবাই একটা কাজে সফল হয়েছি। বাংলাদেশের মুক্তি যদি মুক্তিযোদ্ধ হয়, তাহলে এটাও আমাদের ডিডিটিমুক্তি যুদ্ধ।'

ডিউটি অপসারণ কাজে শুরু থেকে জড়িত এই সচিব বলন, ‘যারা কাজ করেছেন আমি তাদেরকে সালাম জানাই, অভিনন্দন জানাই। আপনারা বিশাল কাজ করেছেন। পরিবেশ অধিদপ্তরে যে কোনো অনুষ্টানে আপনাদের স্মরণ করা হবে, আপনাদের তালিকা তাদের কাছে থাকবে। এটার যে ইতিহাস লিখা হবে, সেখানে যারা যারা কাজ করেছেন তাদের নামও থাকা উচিত। কারণ তাদের ক্ষতি হতে পারে, যদি তাদের নামের তালিকা থাকে তাহলে কাজের কারণে কোন রোগে আক্রান্ত হলে সরকার ও রাষ্ট্র তাদের দায়িত্ব নেবে। সীমান্ত দিয়ে যে কোন কিছুই দেশে আসতে পারে। সীমান্তে যারা প্রহরী, বিজিবি অর্থাৎ জননিরাপত্তা বিভাগ। সেখানে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিবেন যে, বাংলাদেশ ডিডিটি মুক্ত, সেখা ডিডিটি নিষিদ্ধ। কোনভাবেই যেন সীমান্ত দিয়ে এই জিনিস আসতে না পারে।’

উপকূলীয় অঞ্চলে একটি স্বাস্থ্য জরিপ জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিকারের এখানে যারা আছেন, আপনার শুটকি নিয়ে একটি কাজ করেন প্লিজ। এখান থেকে ৫০০ মেট্রিকটন ডিডিটি নিয়ে মিছিল করলে হবে না। শুটকিতে কি দেয়া হচ্ছে দেখুন। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে বলব, আপনারা মাঠে আসুন। শুধু ডিডিটি ক্যান্সারের কারণ না। এখানে প্রচুর ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার হচ্ছে। আর কী কী নিষিদ্ধ করতে হবে আপনারা বলেন। আপনারা এই ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করেন, আমাদের অনেক ল্যাব আছে কিন্তু খুব একটা একটিভিটিজ নেই, খুব দরকার না হলে কেউ টেস্ট করে না। কেউ কোন পরীক্ষা করতে যায় না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি এখানে কে আছেন জানি না, মন্ত্রনালয় এবং পরিবেশ অধিদপ্তরকে বলব এই এলাকার আশাপাশে একটা হেলথ সার্ভে করা উচিত। এটা একটা জনবহুল এলাকা, যদি কোন বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হয়, অবশ্যই নেয়া উচিত। এগুলো বংশপরম্পরায় বিস্তার করে।’

তিনি বলেন, ‘একটু আগে অবিরাম দূষক অর্থাৎ পপস (POPs) সম্পর্কে পড়ছিলাম। এটার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এগুলো অবিরাম চলতে থাকে। এটা রক্তে থেকে রক্তে ছড়াতে পারে। এটা নিয়ে গবেষণারও কাজ করা উচিত। মার্ক ডেবিস ২০০৭ সাল থেকে লেগেছিল। এটা শুরু হয়েছিল ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন থেকে। তারা সারাবিশ্ব থেকে এটা খোঁজে বের করেছিল যে, পৃথিবী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ডেবিস একটা কথা বলেছিল, যে আমরা কেন এটা এখানে শেষ করতে পারি না। ডিডিটি পুড়ে যে ছাইটা হবে তারা সেটি সংরক্ষণ করবে। পুড়িয়ে পেলার পর যে গ্যাস বের হবে সেটিও তারা সংরক্ষণ করবে। কত নিরাপদ উপায়ে এটি ধ্বংস করা যায়।’

 

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ১৩টি বন্দরের অনুমতি নিতে হয়েছে যে, জাহাজটি সেসব বন্দর দিয়ে যাবে। করেকটা দেশ আপত্তি জানিয়েছে যে, এসব দূষিত জিনিস তাদের বন্দর দিয়ে যেতে দেয়া হবে না। পরে অবশ্যই রাজি হয়েছে। এই দেশে এরক আরও অনেককিছু আছে যেগুলো খুঁজে বের করতে হবে।

ডিডিটির মত অন্যান্য ক্ষতিক্ষর রাসায়নিক নিয়ে কাজ হচ্ছে উল্লেক করে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে এরকম রাসায়নিক অনেককিছু দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে এসব নিয়ে একটা কমিটি কাজ করছে। এগুলো সরকার খোঁজে খোঁজে কেন বের করছে, আমরা মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে উন্নত হচ্ছি। শুধু অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি হলে হবে না, পরিবেশটাকেও ভাল রাখতে হবে। আমাদের পানিকে ভাল রাখতে হবে, আমাদের মাটিকেও ভাল রাখতে হবে। আমাদের সবকিছুকেি মানসম্মত করতে হবে।’

এফএও’র কীটনাশক বিশেষজ্ঞ মার্ক ডেভিস ডিডিটির এই মজুদ কে 'অত্যন্ত অস্বাভাবিক' হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে আর কোথাও একটি নির্দিষ্ট এলাকা থেকে এই পরিমাণ কীটনাশক অপসারণের এমন ঘটনা আর নেই । টি অত্যন্ত অস্বাভাবিক যে একটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে এসব এত দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা ছিল।’

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, ‘গ্লোবাল এ্যানভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ) এটি জলবায়ু ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের অধীনে ডিডিটি মুক্ত করা হয়েছে। আমরা জাতিসংঘের অনেক সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ। বায়ু ডাইভারসিটি ও বায়ু সেফটি এই বিষয়গুলো নিশ্চিত করার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দায়বদ্ধ।’

‘ক্ষতিকর ডিডিটির কারণে মানষ এবং পরিবেশ প্রতিবেশের যে বিপদসংকুল অবস্থা। এটাতে উদ্বিগ্ন না হওয়ার কোন কারণ নাই। শুধু আমরা নয়, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে যাবে। এফএও এর সহযোগিতায় আমরা কাজটি শেষ করতে পেরেছি। এ কাজটি সফলভাবে শেষ হওয়ায় আমরা সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানায়।’

তিনি বলেন, এই প্রকল্পের আরও কম্পোনেন্ট আছে, আমারদের সক্ষমতা বাড়ানো। এটা ফ্রান্সের পাঠিয়ে ধ্বংস করতে হয়েছে, কারণ আমারদের সক্ষমতা নেই। আমাদের ল্যাবরেটরী, আমাদের বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান আছে, আমাদের গবেষণা প্রতিষ্ঠান, আমাদের মানবসম্পদ, তারা যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের ক্ষতিকর কীটনাশক, জৈব বিনাশকারী পদার্থ যে গুলো আমাদের ক্ষতি করতে পারে, সেগুলো চিহ্নিত করে আমরা যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারি সে ধরণের সক্ষমতা তৈরি এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে আছে। আশা করছি এফএও সঠিক সময় এটি বাস্তবায়ন করবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফএও’র জ্যেষ্ঠ প্রযুক্তিগত কর্মকর্তা সাসো মার্টিনোভ, প্রকল্প পরিচালক ফরিদ আহমেদ, এফএও রিপ্রেজেনটেটিভ নূর আহমেদ খন্দকার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল হামিদ প্রমুখ।

   

বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল



রাকিব হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল

বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ভোজ্য তেলের ওপর থেকে মূল্য সংযোজন কর (মূসক-ভ্যাট) প্রত্যাহারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে সয়াবিন তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু, ভোজ্য তেলের ‘যৌক্তিক মূল্য’ নির্ধারণ করে দিলেও তা মানার ব্যাপারে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

বাজারে গিয়ে দেখা যায় নির্ধারিত মূল্যের চাইতেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। দাম নেবার কারণ জানতে চাইলে দায়সারা উত্তর ব্যবসায়ীদের।

গতকাল (১৮ এপ্রিল) দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্য তেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন দাম ঘোষণা করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

সংবাদ সম্মেলনে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৪ টাকা বাড়িয়ে ১৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতলের দাম ১৮ টাকা বাড়িয়ে ৮১৮ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেলের দাম দুই টাকা কমিয়ে ১৪৭ টাকা করা হয়েছে।

তবে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাজারে গিয়ে দেখা গেছে সরকার নির্ধারিত মূল্যের কোন তোয়াক্কা করছে না দোকানীরা।

প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হলেও লিটার প্রতি ১৮ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা করে। আর বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৭ টাকা বিক্রি করার কথা থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা দরে। তবে ভিন্ন চিত্র ছিলো ৫ লিটারের বোতলজাত তেলের দামে। সরকারের বেঁধে দামের চাইতেও প্রতি ৫ লিটারের বোতলে ১৮ টাকা কম মূল্যে ৮০০ টাকা করে বিক্রি করছেন দোকানীরা।

সরকারের বেঁধে দামে তেল বিক্রি না করার কারণ জানতে চাইলে রাব্বি ফ্লাওয়ার মিলের স্বত্বাধিকারী লুতফুর রহমান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, গতকাল কি ঘোষণা হইছে তেলের দাম কমছে নাকি বাড়ছে তা ভালো করে জানিনা। তবে শুনছি ফেছবুকে টিভিতে। আমাদের দোকানে যে তেল আছে তা আগের দামে কেনা। তাই আগের দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুন তেল আসলে আবার নতুম দামে বিক্রি করবো। খোলা তেলে ১৮ টাকা বেশি নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ যে বললাম আগের দামে কেনা। আমি তো নতুন দামের চাইতে ৫ লিটারের বোতলে ১৮ টাকা কম নিচ্ছি এখনো। কিন্তু খোলা তেল আমার আগের দামে কেনা তাই ১৮ টাকা বেশি নিতেছি। দাম বৃদ্ধির ঘোষণা এলে যতো দ্রুত দাম বাড়ে কিন্তু দাম কমানোর ঘোষণা এলে কমেনা কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বড় বড় পাইকারদের কাজ। তারা সিন্ডিকেট করে। কিন্তু আমাদের এমন সুযোগ নেই। আমরা এক দুই টন মাল সর্বোচ্চ কিনি। কখনো আরও কম কিনি।

আরেক ব্যবসায়ী খাদিজা এন্টারপ্রাইজের মালিক মোসলে উদ্দিন বলেন, ৫ লিটারের তেলের বোতলে যে দাম ৮০০ টাকা দেয়া সেই দামে বিক্রি করছি। এছাড়া এক লিটারের বোতলের দাম ১৬৩ টাকা দামে বিক্রি করছি। তবে খোলা তেল আমার কেনা ছিলো ১৬৩ টাকা করে তাই আমি ১৬৪/১৬৫ টাকা দামে বিক্রি করতেছি। খোলা তেল ১৪৭ টাকা সরকার নির্ধারণ করছে কিন্তু সেটা কি ভালো নাকি মন্দা জানিনা। যে দামে কিনি তার থেকে এক দুই টাকা বেশি দামে বিক্রি করি।

একটি সিকিউরিটি গার্ডের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আলতাফ হোসেন। তার কাছে খোলা তেল কতো নিলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৬৫ টাকা নিলো। খোলা তেলে দুই টাকা কমে ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে জানেন কিনা প্রশ্ন করলে আলতাফ হোসেন বলেন, ভাই এসব খবর দিয়ে তো কোন কাজ হয়না। দাম বাড়লে তখন ব্যবসায়ীরা পারলে আরও বাড়িয়ে নেয়। অথচ কমলে তিন মাসেও দাম কমার খবর থাকেনা। আপনার সামনেই তো বেশি নিলো কিছু করার আছে বলেন? আমি এক লিটার তেল নিতে আসছি। এখন এদের সাথে কি দাম নিয়ে ঝগড়া করবো।

আরেকজন ক্রেতা সজিব মোল্লা বলেন, বাজারে সব কিছুর দাম বাড়ে তবে খোলা তেলের দাম কমাইছে শুনে ভালো লাগলো। তবে দুই টাকা দাম কমায় তার প্রভাব আসলে বাজারে পরেনি। তাছাড়া লোক দেখানো বাজার মনিটরিং করে বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণ করা কখনো সম্ভব না। একদিকে ব্যবসায়ীদের উপর ট্যাক্স বসাইবেন। জরিমানা করবেন আবার বলবেন দাম কমাইতে তারা কিভাবে দাম কমাবে। জীবনে শুনছেন কোনকিছুর দাম বাড়লে তা আবার কমে সহজে।

;

শিশুখাদ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রায় চিনি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নেসলের শিশুখাদ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রার চিনির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা পাবলিক আই ও ইন্টারন্যাশনাল বেবি ফুড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের করা গবেষণায় এ তথ্য মিলেছে। শিশুদের খাবারে যাতে চিনি যুক্ত করা না হয় এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সুপারিশ রয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মানদণ্ড পরীক্ষায় কোনো ধরনের ক্ষতিকারক বিষয় সামনে আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া বিএসটিআই’র পক্ষ থেকেও একই কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্য কোম্পানি নেসলে বেশ কয়েকটি দেশে শিশুদের জন্য তৈরি করা দুধ ও সিরিয়াল পণ্যগুলোতে বাড়তি চিনি ও মধু যুক্ত করে, যা স্থূলতা এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধের আন্তর্জাতিক নীতিমালার লঙ্ঘন। নেসলের শিশুখাদ্যে বাড়তি চিনি যুক্ত করার আইন লঙ্ঘনের এই ঘটনা কেবল এশিয়ান, আফ্রিকান এবং লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে নেসলের শিশুখাদ্য সেরেলাক থেকে একজন শিশুকে একবার যে পরিমাণ খাবার পরিবেশন করা হয়, তাতে প্রায় ৩ দশমিক ৩ গ্রাম বাড়তি চিনি উপস্থিতি আছে।

পাবলিক আই বলছে, নেসলে সুইজারল্যান্ডে বাজারজাত করা তাদের পণ্য সেরেলাকে বাড়তি কোনও চিনি ব্যবহার করে না। কিন্তু বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোতে সেরেলাকে বাড়তি চিনি যুক্ত করে তারা।

এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ভারতে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। নেসলের শিশুখাদ্য পণ্যের বিষয়ে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গবেষণায় পাওয়া ফল একটি বৈজ্ঞানিক প্যানেলের সামনে উপস্থাপন করা হবে।

এদিকে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশেও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কথা বলা হয়েছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া যুগান্তরকে বলেন, খাদ্যে ভেজাল কিংবা দূষণের কারণে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সব সময় ব্যবস্থা নিয়ে আসছে। এক গবেষণায় নেসলের দুটি পণ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রার চিনির উপস্থিতির কথা বলা হচ্ছে। এটা আমরা পরীক্ষাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব। বিএসটিআই’র মানদণ্ডে পরিমাপ করব। সেক্ষেত্রে কোনো ধরনের সমস্যা সামনে এলে বা অভিযোগ প্রমাণিত হলে পণ্য দুটি বাজার থেকে তুলে নেওয়ার সুপারিশ করব। এছাড়া মামলা করারও সুযোগ আছে।

এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি নেসলে ইন্ডিয়ার একজন মুখপাত্রর সঙ্গে কথা বলেছে। ওই মুখপাত্র বলেছেন, তারা গত পাঁচ বছরে নেসলের শিশুখাদ্যে যোগ করা চিনির পরিমাণ প্রায় ৩০ শতাংশ কমিয়েছে। এছাড়া আরও কমিয়ে আনার বিষয়ে তারা পণ্যগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করছেন।

গবেষণায় দেখা যায়, ভারতে নেসলের ১৫টি সেরেলাক শিশুখাদ্য থেকে একটি শিশুকে একবার যে পরিমাণ খাবার দেওয়া হয় তাতে গড়ে প্রায় ৩ গ্রাম চিনি থাকে। একই পণ্য জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যে বিক্রি করা হচ্ছে বাড়তি চিনি ছাড়াই। অন্যদিকে ইথিওপিয়া ও থাইল্যান্ডে এই চিনির পরিমাণ প্রায় ৬ গ্রাম।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পণ্যের মান প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআই সূত্র জানায়, এটি অন্য দেশের তৈরিকৃত পণ্য। তবে এগুলো আমাদের দেশের মানদণ্ড অনুযায়ী এক নাও হতে পারে। সেরেলাক ও নিডো যদি দেশের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী মান ঠিক রেখে পণ্য তৈরি করে তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু যেহেতু একটি প্রতিবেদনে ক্ষতির বিষয়টি এসেছে, তাই এই বিষয়ে সংস্থার পক্ষ থেকে দেখা হবে। যদি কোনো ক্ষতিকারক কিছু থাকে, তাহলে পদক্ষেপ নেব।

;

সরবরাহ স্বাভাবিক তবুও বাজার চড়া



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সরবরাহ স্বাভাবিক তবুও বাজার চড়া

সরবরাহ স্বাভাবিক তবুও বাজার চড়া

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ঈদ পরবর্তীত বাজারে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও নিত্য পণ্যের দাম চড়া। ক্রেতাদের আনাগোনা কম থাকলেও ঊর্ধ্বমুখী শাক সবজি ও মাছের দাম। বিশেষ করে ৫০ টাকার নিচে কোন সবজি নেই বাজারে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কাওরান কাওরান বাজার ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।

কাওরান বাজারের খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আজকে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০টাকা কেজি, পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকা কেজি, রসুন ২০০-২২০ টাকা কেজি, আদা ২০০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ৮০-১২০ টাকা কেজি, ধনেপাতা কেজি ১০০টাকা আর আটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা করে। লেবুর হালি ৩০-৪০ টাকা।

এছাড়া শবজির বাজারে ক্রেতাদের আনাগোনা কম থাকলেও দাম আগের মতোই চড়া ৫০ টাকার নিচে কোন সবজি নাই। মিষ্টি কুমড়া ৪০, মুলা ৫০-৬০, পটল ৭০ _১২০, বেগুন ৬০ টাকা,বরবটি ৮০,  জালি প্রতি পিছ ৬০ টাকা, ভেন্ডি ৬০ টাকা কেজি, টমেটো ৫০ শশা ৫০, লাউ প্রতি পিস ৭০-৮০ করলা ১২০ টাকা, করলা ৬০-৭০, বাধাকপি ৫০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, গাজর ৬০, ক্যাপসিকাম ৪৫০ টাকা।

তবে মাছ মাংসের বাজারে দাম এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানায় ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ক্রেতারা বলছে মাছের গায়ে হাত দেয়া যায় না। বাজারে আজকে দেশি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা কেজি, মলা মাছ ৭০০ টাকা কেজি, নদীর চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা কেজি, এবং চাষের চিংড়ি ৭০০টাকা কেজি, আইর মাছ ৮০০টাকা কেজি,কাতল ৭০০ টাকা, দেশি বড় বোয়াল ১২০০ টাকা, কোরাল মাছ ১০০০ টাকা। আর ৫০০গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ টাকা কেজি।মুরগী ২১০ টাকা, গরু ৭৫০-৭৮০ টাকা,

কল্যাণপুর থেকে কাওরান বাজারে সপ্তাহের বাজার করতে এসেছেন সুফিয়া বেগম। তিনি জানান ৫ হাজার টাকা নিয়ে এসেছি বাজারে। মাত্র ৫ জনের সংসারের বাজার করতে ইতিমধ্যে বাজারের প্রায় অর্ধেক টাকা শেষ হয়েছে শুধু মাছ কিনতে। এখনো সবজি ও ঘরের অন্যান্য বাজার করা বাকি। আগে যেখানে মাত্র ৩ হাজার টাকায় সপ্তাহের পুরো বাজার শেষ হয়ে যেতো সেখানে এখন ৫ হাজার টাকা দিয়ে কোনমতে টেনেটুনে সংসার চালাতে হচ্ছে তাকে। কাওরান বাজারে কিছুটা কম দামে কিনতে আসলে দামের পার্থক্য এলাকার বাজারের চাইতে খুব একটা কম না। তবে টাটকা পণ্য পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায় বলে তিনি জানান। বাজারের  ভয়াবহ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দুইজনে মিলে কামাই করেও এখন অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে সংসারের চাহিদা মেটাতে।

কাওরান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী লতিফ বার্তা২৪.কম’কে জানান, বাজারে সরবরাহ আছে কিন্তু চাহিদার তুলনায় কম। তাই বেড়েছে সকল মাছের দাম। দেশি মাছের চাহিদা বেশি থাকায় তার দাম একটু বেশি। তবে চাষের মাছের দাম আগের মতোই আছে।

;

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম

  • Font increase
  • Font Decrease

ভরিতে ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে একভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জানিয়েছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

;