ক্রেডিট কার্ডে বিদেশ থেকে সেবা নিতে অনুমতি লাগবে না
বিভিন্ন মহলের চাপে মাত্র ১০ দিনের মাথায় আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের (আইসিসি) ওপর আরোপিত শর্ত প্রত্যাহার করল বাংলাদেশ ব্যাংক।
শর্তটি ছিল ক্রেডিট কার্ডে বিদেশ থেকে কোন ধরনের পণ্য ও সেবা কিনতে গ্রাহককে নির্দিষ্ট ফরম পূরণের মাধ্যমে অনুমতি নিতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। অর্থপাচার রোধ, অনলাইনে জুয়া খেলাসহ বিভিন্ন অবৈধ খাতে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে গত ১৪ নভেম্বর এই শর্ত আরোপ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
রোববার (২৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে যেন অবৈধ লেনদেন সংঘটিত না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শও দিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণকারী এ সংস্থা।
নতুন সার্কুলারে বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অনলাইনে পণ্য ও সেবার মূল্য বিদেশে পাঠানো যাবে। এক্ষেত্রে অনলাইনে জুয়া খেলা, বৈদেশিক লেনদেন, বিদেশি কোন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কেনাবেচা, ক্রিপ্টো কারেন্সি ও লটারির টিকেট কেনার মত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লেনদেন ঠেকাতে ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য গ্রাহককে জানো (কেওয়াইসি), মানিলন্ডারিং গাইডলাইন্স পরিপালন এবং কর ও শুল্ক পরিশোধ নিশ্চিত করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। এই সার্কুলারের ফলে গ্রাহককে আর কোন অনুমোদন নিতে হবে না।
পুরাতন সার্কুলারে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অনলাইনে বিদেশি পণ্য বা সেবা কিনতে হলে গ্রাহককে অনলাইন ট্রানজেকশন অথরাইজেশন ফরম (ওটিএএফ) পূরণ করে মোবাইল অ্যাপ বা ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বা হার্ড কপি ব্যাংকে জমা দিতে হবে। ব্যাংক যাচাই-বাছাই করে অসংগতি না পেলে ক্রেডিট কার্ডকে শুধু সেই লেনদেনের জন্য সক্রিয় করে দেবে। ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ছাড়া ওই কার্ড কাজ করবে না। মূলত অবৈধ লেনদেন বন্ধ ও অর্থপাচার রোধের যুক্তি দেখিয়ে এ সার্কুলার জারি করা হয়।
কিন্তু বাস্তবে দ্বৈত মুদ্রার কার্ডের মাধ্যমে অর্থপাচারের কোনো তথ্য বা ঝুঁকি দেশি-বিদেশি কোনো প্রতিবেদন বা প্যানেল আলোচনায় উঠে আসেনি। তাই এই সিদ্ধান্তের পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিদ্যমান নিয়মে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী গ্রাহক এককভাবে কোনো পণ্য বা সেবামূল্যের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার পর্যন্ত পরিশোধের সুযোগ নিতে পারেন।
২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এক সার্কুলারে আন্তর্জাতিক পণ্য কেনাকাটায় আইসিসি ব্যবহারকারী গ্রাহকদের এককভাবে কোনো পণ্য বা সেবামূল্যের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার পর্যন্ত পরিশোধের সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বছরে তা কোন অবস্থাতেই এক হাজার ডলারের বেশি হবে না। বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডধারী ব্যক্তি বিদেশে অবস্থিত খ্যাতিমান ও নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে বৈধ পণ্য ও সেবা (যেমন: সফটওয়্যার, ই-বুক ইত্যাদি) কিনতে পারেন।