‘আত্মা’র প্রস্তাব ও আত্মোপলব্ধি



মুহাম্মদ আব্দুস সবুর
ছবিঃ সংগৃহীত

ছবিঃ সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তামাক পণ্যের দাম বাড়ানোর ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করেছে এ্যান্টি ট্যোবাকো মিডিয়া এ্যালায়েন্স (আত্মা)।

গত ২৯ মার্চ দাখিলকৃত ওই প্রস্তাবে সিগারেটের মূল্যস্তর সংখ্যা ৪টি থেকে দুটিতে নামিয়ে এনে ৩৭ ও ৬৩ টাকার দুটি মূল্যস্তর একত্রে করে নিম্নস্তরে মূল্যস্তর ৬৫ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে। এই স্তরে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বহালসহ ৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বর্তমানে ৬৩ টাকা মূল্যের সিগারেটে সম্পূরক শুল্ক রয়েছে ৬৫ শতাংশ। প্রস্তাবে সেটি কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে। ৬৩ টাকা মূল্যমানের সিগারেটে ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ মোট শুল্ক ৮০ শতাংশ অর্থাৎ শুল্ক প্রদানের পরিমাণ ৫০.৪০ টাকা। প্রস্তাবে সেটিকে ৬৫ টাকা মূল্য ধরে ৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ১০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধরলে শুল্কের পরিমাণ হয় ৬৫ শতাংশ ও ১০ টাকা ভ্যাট অর্থাৎ শুল্ক প্রদানের পরিমাণ ৫২.২৫ টাকা।

অর্থাৎ প্রস্তাবিত হারে মূল্য নির্ধারিত হলে বৃদ্ধি হলো ১.৬৩ শতাংশ। একইভাবে ৯৩ ও ১২৩ টাকার দুটি মূল্যস্তরকে একত্রে করে প্রিমিয়াম স্তরে এনে ১২৫ টাকা মূল্য, ৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১৯ টাকা সুনির্দিষ্ট শুল্ক আরোপের প্রস্তাবের সাথে থাকছে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। বর্তমানে ১২৩ টাকার সিগারেটে ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক রয়েছে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক কম দেবার প্রস্তাব করা হয়েছে।

১২৩ টাকার সিগারেটে ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধরে ৮০ শতাংশ হিসাবে শুল্ক দেয় ৯৮.৪০ টাকা প্রদেয়। এই স্তরে প্রস্তাবে ১২৫ টাকায় ৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ১৯ টাকা সুনির্দিষ্ট শুল্কারোপ। অর্থাৎ শুল্কের পরিমাণ হবে ১০০.২৫ টাকা। এখানে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে ১.৬৩ শতাংশ আর শুল্ক বাড়বে ১.৮৮ শতাংশ। সিগারেটের এই নামমাত্র শুল্ক বৃদ্ধি করে তারা প্রত্যাশা করছেন বিরাট রাজস্ব আয়ের যা দেশকে করোনা ঝুঁকি থেকে রক্ষা করবে।

ছবিঃ সংগৃহীত

পক্ষান্তরে ফিল্টার বিহীন বিড়ির মূল্য ৪০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ৬.৮৫ টাকা সুনির্দিষ্ট শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। সাথে বহাল থাকবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। তার মানে শুল্ক প্রদানের পরিমাণ হবে ৩০.৮৫ টাকা। বর্তমানে ফিল্টার বিহীন বিড়ির মূল্য ১৪ টাকা সাথে রয়েছে ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট। অর্থাৎ শুল্ক প্রদানের পরিমান ৬.৩০টাকা। এক্ষেত্রে প্রস্তাব অনুসারে মূল্যবৃদ্ধির পরিমাণ ১৮৬ শতাংশ আর শুল্ক বৃদ্ধির পরিমাণ ৩৮৬ শতাংশ।

একইভাবে ফিল্টারযুক্ত বিড়ির মূল্য ৩২ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ৫.৪৮ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ শুল্কের পরিমাণ হবে ২৪.৬৮ টাকা। বর্তমানে ফিল্টারযুক্ত বিড়ির দাম ১৭ টাকা সাথে ৩৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট। অর্থাৎ শুল্কের পরিমাণ ৮.৫০টাকা। প্রস্তাব অনুযায়ী মূল্য বৃদ্ধির পরিমাণ ৮ শতাংশ আর সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির পরিমাণ ১৯০ শতাংশ।

সংগত কারণেই প্রশ্ন থেকে যায় আত্মা কোন উপলব্ধিতে নিম্নস্তরের সিগারেটের ক্ষেত্রে এমন প্রস্তাব দিয়েছে।যেখানে নিম্নস্তরের সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করা হচ্ছে ১.৬৩ শতাংশ ও শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব ১.৮৮ শতাংশ, একই প্রস্তাবে বিড়ির নিম্নস্তরের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করা হচ্ছে ১৮৬ শতাংশও শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব ৩৮৬ শতাংশ। একইভাবে প্রিমিয়াম সিগারেটের ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব ১.৬৩ শতাংশ ও শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব ১.৮৮ শতাংশ। পক্ষান্তরে একই ক্ষেত্রের বিড়ির ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব ৮৮ শতাংশ ও শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব ১৯০ শতাংশ। বিশ্লেষণ থেকে সহজেই বোঝা যায় ‘আত্মা’ কাদের স্বার্থ রক্ষার তদবীরে নিয়োজিত।

এই কারণে দৃশ্যত তামাক বিরোধী বহুকার্যক্রম সত্বেও সিগারেটের বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে। ২০১৭ সালের বৈশ্বিক প্রাপ্ত বয়স্কদের তামাকের সমীক্ষায় বাংলাদেশে পাওয়া গেছে ১কোটি ৫০ লক্ষ সিগারেট ব্যবহারকারী। একই সময়ে বিড়ির ভোক্তা পাওয়া গেছে ৫৩ লাখ। বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানীর নানাবিধ কুটকৌশলের কাছে দেশীয় শিল্প বিড়ি ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। কফিনে শেষ পেরেক গাথার আয়োজনের জন্য আত্মা নিশ্চত ভাবেই পুরষ্কৃত হবার দাবী করতে পারে।

মার্চ মাসটি আমাদের অনেক গর্বের বহুত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতার মাস। স্বাধীনতার চেতনাই ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই। অথচ স্বাধীনতার এত বছর পরে এসেও দেশীয় শিল্প বিড়িকে লড়তে হচ্ছে একই গোত্রের বহুজাতিক কোম্পানীর বিরুদ্ধে বৈষম্যের শিকার হয়ে। স্বাস্থ্যের দোহাই দিয়ে তামাক বিরোধীতার আড়ালে সুকৌশলে বহুজাতিক সিগারেটকে আনুকুল্য দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে দেশীয় শিল্প বিড়িকে। কোন যুক্তিতে সিগারেটকে আনুকূল্য দেখানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে। যেখানে বহুজাতিক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী তোষণের ইতিহাস আমাদের জানা। নব্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বহুজাতিক ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানীর তোষণের ফলাফল কি হবে তা সবারই ভেবে দেখা দরকার।

লেখক: মুহাম্মদ আব্দুস সবুর, সম্পাদক, নিউজজোনবিডি.কম

   

সোনার দাম ২ হাজার টাকা বাড়িয়ে কমল ৮৪০ টাকা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই দফা বাড়ানোর পর এবার কমানো হলো সোনার দাম। স্থানীয় বাজারে ভরিতে ৮৪০ টাকা কমিয়ে ১ ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা। এর আগে গত ১৮ এপ্রিল সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণ ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস।

শ‌নিবার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আজ বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ১৯৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে গত ১৮ এপ্রিল সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণ ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। আর ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম প্রতি ভরিতে ১ হাজার ৩৮৯ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭৮ হাজার ৮০১ টাকা। যা সেদিন সন্ধ্যা ৭ টা থেকে কার্যকর হয়েছিল।

চলতি বছর এ নিয়ে ৯ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করল বাজুস। আর ২০২৩ সালে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল ২৯ বার।

;

ময়মনসিংহে ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা সম্মেলন



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ময়মনসিংহে ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা সম্মেলন

ময়মনসিংহে ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা সম্মেলন

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ময়মনসিংহ জোনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে কর্মকর্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন অডিটোরিয়ামে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. আলতাফ হুসাইন ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট জিএম মোহা. গিয়াস উদ্দিন কাদের।

ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মাকসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ময়মনসিংহ জোনপ্রধান মো. আনিসুল হক। সম্মেলনে ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. খলিলুর রহমান ও মো. আব্দুল জলিল এবং সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এ এম শহীদুল এমরানসহ প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী, ময়মনসিংহ জোনের অধীন শাখাসমূহের প্রধানগণ, উপ-শাখা ইনচার্জগণ, সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।

;

বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল



রাকিব হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল

বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ভোজ্য তেলের ওপর থেকে মূল্য সংযোজন কর (মূসক-ভ্যাট) প্রত্যাহারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে সয়াবিন তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু, ভোজ্য তেলের ‘যৌক্তিক মূল্য’ নির্ধারণ করে দিলেও তা মানার ব্যাপারে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

বাজারে গিয়ে দেখা যায় নির্ধারিত মূল্যের চাইতেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। দাম নেবার কারণ জানতে চাইলে দায়সারা উত্তর ব্যবসায়ীদের।

গতকাল (১৮ এপ্রিল) দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্য তেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন দাম ঘোষণা করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

সংবাদ সম্মেলনে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৪ টাকা বাড়িয়ে ১৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতলের দাম ১৮ টাকা বাড়িয়ে ৮১৮ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেলের দাম দুই টাকা কমিয়ে ১৪৭ টাকা করা হয়েছে।

তবে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাজারে গিয়ে দেখা গেছে সরকার নির্ধারিত মূল্যের কোন তোয়াক্কা করছে না দোকানীরা।

প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হলেও লিটার প্রতি ১৮ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা করে। আর বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৭ টাকা বিক্রি করার কথা থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা দরে। তবে ভিন্ন চিত্র ছিলো ৫ লিটারের বোতলজাত তেলের দামে। সরকারের বেঁধে দামের চাইতেও প্রতি ৫ লিটারের বোতলে ১৮ টাকা কম মূল্যে ৮০০ টাকা করে বিক্রি করছেন দোকানীরা।

সরকারের বেঁধে দামে তেল বিক্রি না করার কারণ জানতে চাইলে রাব্বি ফ্লাওয়ার মিলের স্বত্বাধিকারী লুতফুর রহমান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, গতকাল কি ঘোষণা হইছে তেলের দাম কমছে নাকি বাড়ছে তা ভালো করে জানিনা। তবে শুনছি ফেছবুকে টিভিতে। আমাদের দোকানে যে তেল আছে তা আগের দামে কেনা। তাই আগের দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুন তেল আসলে আবার নতুম দামে বিক্রি করবো। খোলা তেলে ১৮ টাকা বেশি নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ যে বললাম আগের দামে কেনা। আমি তো নতুন দামের চাইতে ৫ লিটারের বোতলে ১৮ টাকা কম নিচ্ছি এখনো। কিন্তু খোলা তেল আমার আগের দামে কেনা তাই ১৮ টাকা বেশি নিতেছি। দাম বৃদ্ধির ঘোষণা এলে যতো দ্রুত দাম বাড়ে কিন্তু দাম কমানোর ঘোষণা এলে কমেনা কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বড় বড় পাইকারদের কাজ। তারা সিন্ডিকেট করে। কিন্তু আমাদের এমন সুযোগ নেই। আমরা এক দুই টন মাল সর্বোচ্চ কিনি। কখনো আরও কম কিনি।

আরেক ব্যবসায়ী খাদিজা এন্টারপ্রাইজের মালিক মোসলে উদ্দিন বলেন, ৫ লিটারের তেলের বোতলে যে দাম ৮০০ টাকা দেয়া সেই দামে বিক্রি করছি। এছাড়া এক লিটারের বোতলের দাম ১৬৩ টাকা দামে বিক্রি করছি। তবে খোলা তেল আমার কেনা ছিলো ১৬৩ টাকা করে তাই আমি ১৬৪/১৬৫ টাকা দামে বিক্রি করতেছি। খোলা তেল ১৪৭ টাকা সরকার নির্ধারণ করছে কিন্তু সেটা কি ভালো নাকি মন্দা জানিনা। যে দামে কিনি তার থেকে এক দুই টাকা বেশি দামে বিক্রি করি।

একটি সিকিউরিটি গার্ডের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আলতাফ হোসেন। তার কাছে খোলা তেল কতো নিলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৬৫ টাকা নিলো। খোলা তেলে দুই টাকা কমে ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে জানেন কিনা প্রশ্ন করলে আলতাফ হোসেন বলেন, ভাই এসব খবর দিয়ে তো কোন কাজ হয়না। দাম বাড়লে তখন ব্যবসায়ীরা পারলে আরও বাড়িয়ে নেয়। অথচ কমলে তিন মাসেও দাম কমার খবর থাকেনা। আপনার সামনেই তো বেশি নিলো কিছু করার আছে বলেন? আমি এক লিটার তেল নিতে আসছি। এখন এদের সাথে কি দাম নিয়ে ঝগড়া করবো।

আরেকজন ক্রেতা সজিব মোল্লা বলেন, বাজারে সব কিছুর দাম বাড়ে তবে খোলা তেলের দাম কমাইছে শুনে ভালো লাগলো। তবে দুই টাকা দাম কমায় তার প্রভাব আসলে বাজারে পরেনি। তাছাড়া লোক দেখানো বাজার মনিটরিং করে বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণ করা কখনো সম্ভব না। একদিকে ব্যবসায়ীদের উপর ট্যাক্স বসাইবেন। জরিমানা করবেন আবার বলবেন দাম কমাইতে তারা কিভাবে দাম কমাবে। জীবনে শুনছেন কোনকিছুর দাম বাড়লে তা আবার কমে সহজে।

;

শিশুখাদ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রায় চিনি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নেসলের শিশুখাদ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রার চিনির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা পাবলিক আই ও ইন্টারন্যাশনাল বেবি ফুড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের করা গবেষণায় এ তথ্য মিলেছে। শিশুদের খাবারে যাতে চিনি যুক্ত করা না হয় এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সুপারিশ রয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মানদণ্ড পরীক্ষায় কোনো ধরনের ক্ষতিকারক বিষয় সামনে আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া বিএসটিআই’র পক্ষ থেকেও একই কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্য কোম্পানি নেসলে বেশ কয়েকটি দেশে শিশুদের জন্য তৈরি করা দুধ ও সিরিয়াল পণ্যগুলোতে বাড়তি চিনি ও মধু যুক্ত করে, যা স্থূলতা এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধের আন্তর্জাতিক নীতিমালার লঙ্ঘন। নেসলের শিশুখাদ্যে বাড়তি চিনি যুক্ত করার আইন লঙ্ঘনের এই ঘটনা কেবল এশিয়ান, আফ্রিকান এবং লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে নেসলের শিশুখাদ্য সেরেলাক থেকে একজন শিশুকে একবার যে পরিমাণ খাবার পরিবেশন করা হয়, তাতে প্রায় ৩ দশমিক ৩ গ্রাম বাড়তি চিনি উপস্থিতি আছে।

পাবলিক আই বলছে, নেসলে সুইজারল্যান্ডে বাজারজাত করা তাদের পণ্য সেরেলাকে বাড়তি কোনও চিনি ব্যবহার করে না। কিন্তু বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোতে সেরেলাকে বাড়তি চিনি যুক্ত করে তারা।

এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ভারতে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। নেসলের শিশুখাদ্য পণ্যের বিষয়ে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গবেষণায় পাওয়া ফল একটি বৈজ্ঞানিক প্যানেলের সামনে উপস্থাপন করা হবে।

এদিকে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশেও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কথা বলা হয়েছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া যুগান্তরকে বলেন, খাদ্যে ভেজাল কিংবা দূষণের কারণে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সব সময় ব্যবস্থা নিয়ে আসছে। এক গবেষণায় নেসলের দুটি পণ্য সেরেলাক ও নিডোতে উচ্চমাত্রার চিনির উপস্থিতির কথা বলা হচ্ছে। এটা আমরা পরীক্ষাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব। বিএসটিআই’র মানদণ্ডে পরিমাপ করব। সেক্ষেত্রে কোনো ধরনের সমস্যা সামনে এলে বা অভিযোগ প্রমাণিত হলে পণ্য দুটি বাজার থেকে তুলে নেওয়ার সুপারিশ করব। এছাড়া মামলা করারও সুযোগ আছে।

এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি নেসলে ইন্ডিয়ার একজন মুখপাত্রর সঙ্গে কথা বলেছে। ওই মুখপাত্র বলেছেন, তারা গত পাঁচ বছরে নেসলের শিশুখাদ্যে যোগ করা চিনির পরিমাণ প্রায় ৩০ শতাংশ কমিয়েছে। এছাড়া আরও কমিয়ে আনার বিষয়ে তারা পণ্যগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করছেন।

গবেষণায় দেখা যায়, ভারতে নেসলের ১৫টি সেরেলাক শিশুখাদ্য থেকে একটি শিশুকে একবার যে পরিমাণ খাবার দেওয়া হয় তাতে গড়ে প্রায় ৩ গ্রাম চিনি থাকে। একই পণ্য জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যে বিক্রি করা হচ্ছে বাড়তি চিনি ছাড়াই। অন্যদিকে ইথিওপিয়া ও থাইল্যান্ডে এই চিনির পরিমাণ প্রায় ৬ গ্রাম।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পণ্যের মান প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআই সূত্র জানায়, এটি অন্য দেশের তৈরিকৃত পণ্য। তবে এগুলো আমাদের দেশের মানদণ্ড অনুযায়ী এক নাও হতে পারে। সেরেলাক ও নিডো যদি দেশের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী মান ঠিক রেখে পণ্য তৈরি করে তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু যেহেতু একটি প্রতিবেদনে ক্ষতির বিষয়টি এসেছে, তাই এই বিষয়ে সংস্থার পক্ষ থেকে দেখা হবে। যদি কোনো ক্ষতিকারক কিছু থাকে, তাহলে পদক্ষেপ নেব।

;