দারিদ্র বিমোচনে ব্যাংকিং সেক্টরের ভূমিকা 



মো: মোসলেহ উদ্দিন 
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্যাংকের প্রধান ও মৌলিক দু’টি কাজের প্রথমটি হলো আমানত সংগ্রহ করা আর দ্বিতীয়টি আমানতের টাকা ঋণ/বিনিয়োগ রূপে উপযুক্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা। আমনত সংগ্রহ ও ঋণ বিতরণের সুবিধার্থে ব্যাংকগুলো এমন জায়গায় শাখা খুলে, যেখানে বিত্তশালী এবং বড় ব্যবসায়ীদের বসবাস।

অনেকগুলো ধনী মানুষের টাকা একত্রিত করে কিছু ধনী মানুষের মাঝে ঋণ হিসেবে বিতরণ করার নামই ব্যাংকিং। অক্ষোকৃত কম মুনাফা/সুদ হারে সংগৃহীত আমানত বর্ধিত হারে বিতরণকৃত ঋণ/বিনিয়োগ আদায়ের পর প্রাপ্য সুদ/মুনাফার পার্থক্যই ব্যাংকের আয়ের প্রধান উৎস। ফলে ব্যাংকের সাধারণ ট্র্যাডিশন হলো বিত্তশালী কিংবা ধনীদের গলগ্রহ হওয়া এবং তাদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করা।

১৯৭২ সালে পাকিস্তান আমলের ১২টি ব্যাংককে ছয়টিতে একীভূত (Merge) করে সোনালী, রূপালী, অগ্রণী, জনতা, পূবালী এবং উত্তরা নামে রাষ্ট্রীয় অধ্যাদেশে জাতীয়করণ করা হয়।  এই ব্যাংকগুলো গতানুগতিক ধারায় পরিচালিত বলে কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের কৃষক এবং কৃষির উন্নয়নের প্রয়োজনে বিশেষায়িত একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার তীব্র প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হলে ১৯৭৩ সালে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতির সহায়ক শক্তিতে কাজ শুরু করে।

কিন্তু জমির দলিলপত্র-জামানতের বিপরীতে ব্যাংকটির দেয়া কৃষি ঋণও এক শ্রেণীর ধনীদের ভাগে চলে যায়। যার জমি নেই তার পক্ষে জামানত দেবার কিছু না থাকায় ভূমিহীন প্রান্তিক গরীব কিংবা বর্গা চাষিরা বঞ্চিতই থেকে যায়।

আশির দশকের সূচনাতে বাংলাদেশে প্রাইভেট সেক্টর ব্যাংকিংয়ের কার্যক্রমের সূত্রপাত ঘটে। ১৯৮৩ সালে রাষ্ট্রায়ত্ব পূবালী এবং উত্তরা ব্যাংক দু’টিকে বেসরকারী খাতে ছেড়ে দেয়া হলে ব্যক্তি মালিকানায় ব্যাংক প্রতিষ্ঠার দ্বার উন্মোচিত হয়।  পরে ধাপে ধাপে ব্যাংক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৫১টি দেশী এবং ৯টি বিদেশী ব্যাংক নিয়ে গড়ে উঠেছে ৬০ ব্যাংকের বাংলাদেশ ব্যাংকিং পরিবার।

ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংক (PCB)‘র  কার্যক্রমের মূল লক্ষ্যও অধিক মুনাফা অর্জন।  ফলে দারিদ্র বিমোচনের মতো কম লাভের কর্মসূচি তাদের পক্ষে নেয়া সম্ভব হয়নি। এমনকি সরাসরি কৃষি খাতের প্রতি মনোযোগী হতেও অনেক ব্যাংকের অন্তহীন অনীহা  বিদ্যমান।

এহেন প্রেক্ষাপটে ব্যাংকের সাথে দারিদ্র বিমোচনের সম্পর্ক খোঁজা অপ্রাসঙ্গিক। এমনকি দারিদ্র বিমোচনে ব্যাংকের ভূমিকা নিয়ে কোনো তথ্য গুগলের কাছেও নেই।  গুগলে শতটা সার্চ দিলেও প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ কোনো  ফল পাবেন না। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এনজিওদেরই এনে হাজির করবে গুগল।

দারিদ্র বিমোচনের নানা কর্মসূচি নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে শুরু থেকেই বহু এনজিও তৎপর। ব্র্যাক, আশা, গ্রামীণ ব্যাংক পপি, প্রশিকাসহ হাজারো ছোট বড় এনজিও এ লক্ষ্যে   কাজ করছে। নব্বইয়ের দশক থেকে এনজিও’র কাজ দারিদ্র বিমোচনের পরিবর্তে এনজিও ব্যবসায় রূপান্তরিত হয়। তখন এনজিও প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার হিড়িক পড়ে যায় দেশময়।

শুরুতে বিদেশি ডোনেশনের টাকায় এনজিওগুলো উচ্চ সুদে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করতো। বাংলাদেশের দারিদ্রকে বিদেশিদের কাছে তুলে ধরে ওদের সহানুভূতি আদায়ে যার পারঙ্গমতা বেশি ছিলো, তারাই পেতো বেশি ডোনেশন। অফেরৎযোগ্য এসব ডেনেশনের অর্থ  লগ্নির এনজিও ঋণে যতটা না গ্রাহকের লাভ তার চেয়ে অনেক বেশি লাভবান হতো এনজিওগুলো নিজে। ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমে শীর্ষে থাকা এমন অনেক এনজিও বর্তমানে ব্যাংক এবং বিত্তশালী পরিবারের সন্তানদের জন্য ব্যয়বহুল  প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজসহ  বড়  ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক।

এনজিও কর্মীদের বিপণন দক্ষতায় অনতিবিলম্বে এসব ক্ষুদ্রঋণ ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পায়। দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত সেসময়কার পরিস্থিতিতে সুবিধাবঞ্চিত তৃণমূলের অনুন্যোপায় কোটি মানুষ তা লুফে নেয়। ধীরে ধীরে দেশের মূলধারার অর্থ ব্যবস্থার সামন্তরালে আবির্ভূত হয় ক্ষুদ্রঋণ কর্মকাণ্ড। পরিস্থিতি এমনও হয় যে, এনজিওগুলো সরকারি বিধিনিষেধ মানার পরিবর্তে ক্ষেত্রবিশেষে  সরকারেরও সমীহ আদায় করতে সক্ষম হয়।

তবে সময় যতোই এগুতে থাকে ততোই এনজিও ক্ষুদ্র ঋণের ভয়ংকর ফাঁকগুলো জনসম্মুখে প্রকাশিত হতে থাকে। আর ঋণচক্রে আটকে পড়া মানুষগুলোও এই বেড়াজাল ভেঙ্গে বের হবার পথ খুঁজতে থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, ক্ষুদ্র ঋণের আলোচনা এবং সমালোচনার মাঝে এর বিকল্প ব্যবস্থা কেউ হাজির করেনি কিংবা করতে পারেনি।

এহেন পরিস্থিতিতে দেশ এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটিডে এগিয়ে আসে। ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠার এক যুগ পর ১৯৯৫ সালে পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প (আরডিএস) নামে একটি পাইলট প্রজেক্ট নিয়ে ইসলামী ব্যাংকটি কাজ শুরু করে। কৃষি, আত্মকর্মসংস্থান, দারিদ্র বিমোচন, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গ্রামীণ আবাসন, এবং শিক্ষা উন্নয়নের সমন্বিত কর্মসূচিভিত্তিক কার্যক্রম প্রচলিত এনজিও কার্যক্রমের যথার্থ বিকল্প হিসেবে আবির্ভূত হয়। প্রাথমিক সফলতার স্তর পেরিয়ে এটি অনতিবিলম্বে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

বর্তমানে এ ব্যাংকের ৩০০টি শাখার মাধ্যমে দেশের চৌষট্টি জেলার প্রায় পঁচিশ হাজার গ্রামের সাড়ে বারো লাখ সদস্যের মাঝে এ প্রকল্পের কাজ চালু রয়েছে। গত পঁচিশ বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করে তৃণমূল পর্যায়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর টেকসই উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে প্রকল্পটি। বর্তমানে এ খাতে বিনিয়োগ স্থিতি ৩ হাজার ২শত কোটি টাকারও বেশি। বিনিয়োগের আদায় হার ৯৯.০৯%।

লেনদেনে ইসলামী শরীয়া নীতির অনুসরণ, বিনিয়োগের বিপরীতে সর্বনিম্ন মুনাফা আদায় হার (RR), ভালো সদস্যদের প্রণোদনা বিহিত এবং সদস্যদের প্রতি মানবিক আচরণের ফলে সদস্যরা এখানে খুবই স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। পাশাপাশি সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনার অধীনে সমস্যাগ্রস্থ সদস্যদের মাঝে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম, সদস্যদের সন্তানদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা পরিচালনা, মেধাবি সন্তানদের মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং  উচ্চ শিক্ষা বৃত্তি, সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধি প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্য সেবা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের মতো কার্যক্রমও পরিচালিত হয় নিয়মিত। ইসলামী ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমে আরডিএস বিশ্বে সর্ববৃহৎ।

তবে ইসলামী ব্যাংকের আরডিএস’র মতো একটি সাকসেসফুল মডেল সামনে থাকার পরও ব্যাংকিং সেক্টরের অন্যরা তা কাজ লাগাতে এগিয়ে আসেনি। কয়েকটি ব্যাংক কাজ শুরু করলেও তা সীমাবদ্ধ, যা দেশব্যাপী সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেই। কিন্তু ব্যাংকিং সেক্টরের মাধ্যমে দেশের দারিদ্রতা দূর করার বিরাট সুযোগ রয়েছে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আনতে পারে বৈপ্লবিক উন্নয়ন। 

লেখক: মো: মোসলেহ উদ্দিনক, কবি, কলামিস্ট ও ব্যাংকার

   

সরবরাহ বাড়ায় কমেছে পেঁয়াজের দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে যখন ঊর্ধ্বগতি তখন স্বস্তির বার্তা হয়ে এসেছে পেঁয়াজের দাম। গেলো কয়েক সপ্তাহে যেখানে পেঁয়াজের ঝাঁজে ক্রেতাদের নাজেহাল অবস্থা। সেই পেঁয়াজ এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সুলভ মূল্যে। মূলত দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় এবং ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণার পর থেকে নেমে এসেছে পেঁয়াজের দাম।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে রাজধানীর হাতিরপুল বাজার ঘুরে দেখা গেছে গত সপ্তাহে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৯০-১০০ টাকা তা মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে নেমে এসেছে অর্ধেকেরও কম দামে। বাজার ঘুরে দেখা যায় প্রকারভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা যা পাইকারি বাজারে ৩০-৩৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন গত কয়েক সপ্তাহে সবকিছুর দামে যে আগুন লেগেছিল তা মনে হয় কিছুটা কমতে শুরু করেছে। যদিও অসাধু ব্যবসায়ীরা যা ব্যবসা করার তা করে ফেলেছে। সবার বাসায় এখন পর্যাপ্ত পেঁয়াজ, আলু ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। তাই ক্রেতাদের আনাগোনা বাজারে কমে যাওয়ায় কমেছে জিনিসপত্রের দাম।

শুক্রবার বাজারে প্রতি কেজি শশা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০। ক্যাপসিকাম ২৫০-৩০০ টাকা। বেগুন প্রতি কেজি ৫০-৬০, লেবুর হালি প্রকারভেদে ২০-৫০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, লাউ ৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০, করলা ৬০-৭০, টমেটো ৫০-৬০ কেজি, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি পিছ ৪০টাকা, বাঁধাকপি ৪০, ফুলকপি ৫০ এবং কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা দরে।

পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় আগের দামেই পাওয়া যাচ্ছে সকল মাছ

এছাড়া আলু ৪০ টাকা প্রতি কেজি, আদা ২২০, রসুন ২০০, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা, পেয়াজ ৪০-৪৫ টাকা , ধনেপাতা ৬০ টাকা কেজি।

হাতিরপুল বাজারের বিক্রেতা নিরব জানান, গত সপ্তাহের চাইতে এই সপ্তাহে সবজির দাম কিছুটা কম। মূলত আমদানি বাড়ার কারণে দাম কমেছে পেঁয়াজ সহ সকল শাক সবজির দাম। আগে ৮০ টাকার নিচে সবজির গায়ে হাত দেয়া যেতো না। কিন্তু এখন তা ৩০ থেকে ৪০ টাকায় নেমে এসেছে।

আরেক ব্যবসায়ী আমান হোসেন জানান, বেগুন ব্যবসায়ীরা এবার ধরা খাইছে। রমজানের প্রথম দুই দিনে বেগুন নিয়ে যে সিন্ডিকেট হইছিলো তাতে পাবলিক ক্ষেপে গিয়ে বেগুন কেনা কমাইয়া দিছে তাই প্রথম দুই দিনে বেগুন ১২০ টাকা করে পাইকারি বিক্রি হলেও এখন তা প্রকারভেদে মাত্র ১০-৩০ টাকা পাইকারিতে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ঈদের আগে আর কোন জিনিসের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নাই আশাকরি।

এদিকে মাছের বাজারেও দেখা গেছে একই চিত্র। বাজারে ক্রেতা কম থাকায় এবং মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় আগের দামেই পাওয়া যাচ্ছে সকল মাছ।

বাজারে প্রতি কেজি কাচকি পাওয়া যাচ্ছে ৪০০-৬০০ টাকা কেজি। এছাড়া বেলে মাছ ৫০০, ফলি ৫০০, কোরাল ৭০০, পাবদা ৪৫০, লইট্টা ৩০০, বোয়াল ৬০০, আইর ৮০০, রুই ৩৫০, চিতল ৮০০, পাঙ্গাশ ২০০ তেলাপিয়া ২২০, বড় চিংড়ি ১০০০, রুপচাঁদা ১৩৫০, এবং ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি দরে।

;

রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

রিজার্ভের পরিমাণ জানাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘদিন ধরে দেশে ডলার সংকটের প্রভাবে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সর্বেশষ গণনায় দেশের রিজার্ভ ১৯ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে তা ২৪ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক সপ্তাহে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ৫৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে গত ২১ মার্চ সঞ্চিত বিদেশি অর্থের পরিমাণ ছিল ২৫ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের গণনা পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী তা ছিল ১৯ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।

এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে। যা শুধু প্রকাশ করা হয় না, শুধুমাত্র আইএমএফকে দেওয়া হয়। জানা গেছে, ওই হিসাবে বর্তমানে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন প্রায় সাড়ে ১৭ বিলিয়ন ডলার। যা দিয়ে ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মিটবে।

অর্থাৎ, পণ্য কেনা বাবদ মাসিক প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার করে দায় পরিশোধ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী যেকোনো দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। বাংলাদেশেরও সেই পরিমাণ রিজার্ভ রয়েছে।

;

ইসলামী ব্যাংকে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শের উপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির উদ্যোগে এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইসলামী ব্যাংক ইউনিটের সহযোগিতায় “বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী এবং স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আ.ব.ম ফারুক, ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক, মুক্তিযোদ্ধা মো. জয়নাল আবেদীন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন। স্বাগত বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ইসলামী ব্যাংক ইউনিটের সভাপতি মো. মোজাহারুল ইসলাম মেহেদী। অনুষ্ঠানে প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী ও কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

;

চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়

চীনের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময়

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সই করার বিষয়ে যৌথভাবে খসড়া সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় করেছে দুই দেশ।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় করে বাংলাদেশ ও চীন।

এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার উল্লেখযোগ্য অর্জন। এ অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা তৈরির পাশাপাশি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে।

তিনি আরও বলেন, যার মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানির সময় শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা ২০২৬ সালের পরে হারানো এবং মূল্য সংযোজনের হার অন্যতম। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যকে ওই সব দেশের বাজারে প্রবেশের সময় সাধারণভাবে আরোপিত শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফলে ওই সকল দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংকোচনের সম্ভাবনা রয়েছে।

কবে নাগাদ এফটিএ সই হতে পারে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, এখনো চুক্তি হয়নি। এখন আলোচনা শুরু হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করতে পারলে ভালো। যদি না হয় আমাদের আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। আলোচনা শেষ না হলে ততোদিন যেন আমাদের এলডিসি হিসাবে এই সুবিধাগুলো তাঁরা দেয় এর জন্য বলবো।

চুক্তির ফলে বাংলাদেশ কি ধরনের সুবিধা পাবে এ বিষয়ে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য গার্মেন্টের বাইরে আরও কিছু পণ্য আছে। রাষ্ট্রদূততের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানিয়েছেন আম ও পাটজাত পণ্যের অনেক সম্ভাবনা আছে। তারপর হস্তশিল্পের বিষয় আছে।

তিনি বলেন, এছাড়া আরও পণ্য আছে। আমরা ইতোমধ্যে চামড়া রপ্তানি করছি। আমরা মানসম্মত চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারি। চীনে ১৪০ কোটি মানুষ। সেখানে যদি আমরা বৈচিত্র্য পণ্য নিয়ে যেতে পারি, বড় বাজার। চুক্তি হয়ে গেলে বিনিয়োগ বাড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমরা প্রধানত তৈরি পোশাক রপ্তানি করি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমরা চীনে ৬৭৭ মিলিয় মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছি। বিপরীতে চীন থেকে ২২ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার আমদানি করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশে চীনের বড় বিনিয়োগ রয়েছে। এখন চীন বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহৎ বিনিয়োগকারী দেশ। এফটিএ সই হওয়ার পর বিনিয়োগ আরও বাড়বে। বাংলাদেশ চীনে আম, কাঠাল, আলু, পাটপণ্য, চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এফটিএ করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ এবং সম্প্রসারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সাথে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

;