নির্বাচনী আচরণ বিধিতে কোনো প্রার্থীকে ছাড় নয়: ইসি আনিছুর

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকবে সবাই প্রার্থী। প্রার্থী যে দলমতেরই হোক আমাদের চোখে সকলেই সমান। আচরণ বিধি লঙ্ঘন করলে কোনো প্রার্থীকে ছাড় নয়। ভোট সুষ্ঠু না হওয়ার কোনো কারণ নেই।’

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ফেনীতে নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

আনিছুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনে যারা অবৈধ হস্তক্ষেপ করতে চায়, ওইসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে অনেক জায়গায় অনেক কিছু ঘটবে। ভোটের পরিবেশ সৃষ্টিতে আমরা কাজ করছি। এখানে ছোট-বড় কেউ না। যতক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকবে সবাই প্রার্থী। প্রার্থী যে দলমতেরই হোক আমাদের চোখে সকলেই সমান। আচরণ বিধি লঙ্ঘন করলে কোনো প্রার্থীকে ছাড় নয়। ভোট সুষ্ঠু না হওয়ার কোনো কারণ নেই।’

ইসি আনিছুর বলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে অনেককিছু ঘটবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনেক কিছু দেখবেন। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ করতে কমিশন প্রস্তুত।

২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আনিছুর রহমান বলেন, আমরা ব্যালট পেপার এবারই প্রথম সকালে দিচ্ছি। এটির নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে। আমরা যদি আগের মত সেই অবস্থানে থাকতাম তাহলে এ কাজটি করতাম না। দুর্গম এলাকায় বাদে ভোটের দিন সকাল ৮টার আগে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। এতোদিন আমরা বলে আসছি, কিন্তু এখন এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এ ভোট শুধু আমরা ভালো বললে হবেনা। বহির্বিশ্ব আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। বহির্বিশ্ব বলতে হবে একটি ভালো ভোট হয়েছে। ভোট ভালো না হলে ভবিষ্যৎ খুব একটা ভালো না। ভালো ভোট যদি আপনারা না করেন তাহলে নির্বাচনে আপনি এমপি হবেন, সরকার গঠন করতে পারেন। কিন্তু ক্ষমতা পেয়ে কিছু করতে পারবেন না। বহির্বিশ্ব যদি আমাদের উপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করেন, তাহলে আমরা কিন্তু সুখে থাকব না কেউ।

ইসি মো. আনিছুর রহমান বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন বলতে যা বুঝায় সেটি করতে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত। আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ সকল বাহিনী মাঠে থাকবে। সব জায়গায় নিরাপত্তা দেওয়া হবে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেটও তাদের সাথে থাকবে। পুলিশের পাশাপাশি এবার ব্যাটালিয়ন আনসারও থাকবে। সবমিলিয়ে সারাদেশে ৭ লক্ষাধিক ফোর্স ভোটের মাঠে কাজ করবে।

তিনি বলেন, নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করে দিব। ভোটার আনার দায়িত্ব কমিশন, রিটার্নিং কর্মকর্তা বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার না। সেই দায়িত্ব প্রার্থীদের। প্রার্থী নিজে, কর্মী-সমর্থক ও দলীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে ভোটারদের কেন্দ্র আনার জন্য উদ্বুদ্ধ করবে। ভোটার যত বেশি আসবে নির্বাচন তত অংশগ্রহণমূলক হবে।

নির্বাচন কমিশনে বহির্বিশ্বের চাপ নেই উল্লেখ করে ইসি আনিছুর রহমান বলেন, ভোট সুষ্ঠু, সুন্দর ও অবাধ করতে চেষ্টার কমতি নেই। আমাদের উপর কোনো চাপ নেই। আমেরিকা, ইউরোপ জানতে চেয়েছে শুধু। তবে কোনো চাপ নেই। কেউ এবিষয়ে প্রশ্নও তুলেনি। নির্বাচনে এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক বিদেশি পর্যবেক্ষক আসছে। আমরা সব ধরনের আতিথেয়তা দেব। পর্যবেক্ষকদের আবেদনের সময়সীমাও আমরা বাড়িয়েছি। তারা মূল্যায়ন করবে ভোট কেমন হলো।

সভায় ফেনীর জেলাপ্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তারের পরিচালনায় তিনটি আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা, পুলিশ সুপার জাকির হাসান, ফেনী-৪ বিজিবি অধিনায়ক লে.কর্নেল রকিবুল হাসান, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিভিন্ন থানার ওসি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।