স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ নেয়ায় পদ হারালেন ১১  আ.লীগ নেতা

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,লক্ষ্মীপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ নেয়ায় পদ হারালেন ১১  আ.লীগ নেতা

স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ নেয়ায় পদ হারালেন ১১  আ.লীগ নেতা

লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ সাত্তারের (ট্রাক প্রতীক) পক্ষে কাজ করায় আওয়ামী লীগের ১১ জন নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাসেম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওহাব (কন্ট্রাক্টর) স্বাক্ষরিত এমন কাণ্ডে স্বতন্ত্র প্রার্থী, দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্যাডে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। ভবিষ্যতে অব্যাহতিপ্রাপ্তরা দলীয় কোনো পদের জন্য প্রার্থী হতে পারবেন না বলেও সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অব্যাহতি নিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

অব্যাহতি পাওয়া নেতারা হলেন, চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অহিদুজ্জামান বেগ বাবলু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন পাটওয়ারী, কোষাধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ পাটওয়ারী, শ্রম সম্পাদক নাছির পাটওয়ারী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, সদ্য সামছুল আলম বাবুল পাটওয়ারী, নুরুল আমিন, সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী, লোকমান মাস্টার, ও মো. খালেদ।

বিজ্ঞাপন

একই অভিযোগে এর আগে ১৯ ডিসেম্বর মান্দারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার সকালে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওহাবের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। অব্যহতিপ্রাপ্ত নেতারা দলীয় কার্যক্রমে পর পর অনুপস্থিত, দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ও অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত রয়েছেন। এতে গঠনতন্ত্রের ৪৭ এর ১১ ধারা মোতাবেক ১০ নেতাকে দলীয় পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। তারা ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের কোনো কমিটির পদে প্রার্থী হতে পারবেন না।

এদিকে অব্যহতিপ্রাপ্ত নেতা ও মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এতে থানা কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দেন তিনি।

স্ট্যাটাসটিতে বলা হয়, আপনাদের বিরুদ্ধে খুব শিগগির আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। থানা কমিটির কোনো নেতাকে, আপানারা থানা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়ে অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না। নিশ্চয়ই আপনারা আওয়ামী লীগের শত্রু, শেখ হাসিনার শত্রু। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন সর্বধিক চিন্তা করে একটি সুন্দর আংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উৎসাহ উদ্দীপনা দিয়ে যাচ্ছেন। আপনারা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভোটারশূন্য নির্বাচন করার জন্য দলের পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের সম্মানহানী করছেন।

যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যহতিপ্রাপ্ত নেতা মোশারফ হোসেন পাটওয়ারী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের বিষয়ে উম্মুক্ত করে দিয়েছেন ৷ দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বা দলীয় কর্মীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো নির্দেশনাও নেই। সম্মেলনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতারা আমার নাম ঘোষণা করছেন। আমাকে অব্যাহতি দিতে হলে জেলা কমিটি কেন্দ্রে সুপারিশ করবেন। কেন্দ্র আমাদেরকে অব্যহতি দিতে পারবেন। থানা আওয়ামী লীগের দুই নেতা কোনোভাবেই আমাকে অব্যহতি দিতে পারবেন না।' 

সহ-সভাপতি পদ থেকে অব্যহতিপ্রাপ্ত নেতা অহিদুজ্জামান বেগ বাবলু বলেন, 'ফেসবুকে দেখেছি আমাদেরকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি যে, নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্রের পক্ষে কাজ করতে পারবে না। বহিষ্কার বা অব্যাহতির নির্দেশনাও নেই। এ ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা নিয়ে আমরা বসবো।' 

চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব বলেন, 'দলের কার্যক্রমে অনুপস্থিত, গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ও অনৈতিক কার্যকলাপে যুক্ত থাকায় জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশনায় ১১ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতারা কোনো প্রার্থীর ভোট করে তা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়।' 

প্রসঙ্গত, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক পিংকু নৌকার প্রার্থী। তার সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সাত্তার।