সংঘর্ষ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ইশরাক-তাপসের
রোববার দুপুরে নৌকা ও ধানের শীষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে
ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনের গণসংযোগ চলাকালে নৌকার সমর্থক ও ধানের শীষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে।
সংঘর্ষ চলাকালে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, রড, লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় কয়েকটি গুলির শব্দও শোনা যায়। সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন।
এ সংঘর্ষের জন্য বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন ও আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ফজলে নূর তাপস একে অপরকে দায়ী করেছেন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ১টার দিকে টিকাটুলিতে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের সামনে এ পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে গণসংযোগ শুরু করে উইমেন্স সেন্ট্রাল কলেজের সামনে গেলে হঠাৎ করে সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে ইশরাকের গণসংযোগ পৌঁছানোর কয়েক মিনিট আগে নৌকার সমর্থকদের একটি প্রোগ্রাম শেষ হয়।
নৌকার সমর্থক জুয়েল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ধানের শীষের মিছিল আসার আগে আমাদের প্রোগাম ছিল। তারা আসার আগেই আমরা অনুষ্ঠান শেষ করে ভেতরে চলে যাই। আমাদের কোনো লোক রাস্তায় ছিল না। তাদের একটা গ্রুপ আগে চলে যায় তারপরের গ্রুপে ছিল ইশরাক। সেই গ্রুপটা এসে আগে হামলা চালায়। এতে আমাদের চার জন আহত হন। দুইজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সংঘর্ষ প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, গোপীবাগে নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থীর প্রচারণা চলাকালে ধানের শীষ প্রতীকের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা হামলা চালান। নৌকা প্রতীকের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপরে অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়।
শান্তিপূর্ণ প্রচারণায় হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এ হামলার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবর অভিযোগ করবেন বলেও জানান নৌকা প্রতীকেরর এই প্রার্থী।
আরও পড়ুন- নৌকা ও ধানের শীষ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ
অন্যদিকে হামলা প্রসঙ্গে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে গণসংযোগ করে বাসায় আসছিলাম। ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের লাভলী চৌধুরী ক্যাম্প থেকে আমাদের ওপর আকস্মিকভাবে হামলা চালানো হয়। এতে তিনজন সাংবাদিক ও ৮/১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
ইশরাক আরো বলেন, তারা হামলা করে আমাদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছেন। এ ধরনের হামলার ঘটনা ন্যক্কারজনক। ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এটি দেখে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এ ধরনের একটা ঘটনা ঘটিয়েছে সরকারপক্ষ।
হামলার পর দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইশরাক হোসের সঙ্গে দেখা করতে যান ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন। তিনি বলেন, এ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, শান্তিপূর্ণ ও অবাধ সুষ্ঠু হওয়া সকলেরই কাম্য। নির্বাচনে সংঘর্ষ কোনোভাবে হওয়া উচিত নয় এবং সংঘর্ষ আমরা প্রত্যাশা করি না। আশা করব সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।
সংঘর্ষ চলাকালে তিনজন গণমাধ্যমকর্মী আহত হন। তারা হলেন— নয়া দিগন্তের সাংবাদিক ইকবাল মজুমদার, সময় টিভির ক্যামেরাম্যান আশরাফুল ইসলাম ও বাংলাভিশনের সিনিয়র ক্যামেরাপার্সন উজ্জ্বল দাস।
আরও পড়ুন- মামলা তো করবোই: ইশরাক
হামলায় ধানের শীষ প্রতীকের আহত সমর্থকদের একটি তালিকা দিয়েছে ইশরাক হোসেনের গণসংযোগ কর্মকর্তা খুরসিদ আলম। তারা হলেন— যুবদলের কর্মী আমিনুল ও ফয়সাল এবং ছাত্রদলের সানাহ উল্লাহ, সৈকত, তুহিন, রুবেল ও মুন্না।
