সব বিধি মানছে বিএনপি, ভাঙছে আওয়ামী লীগ: খসরু
আসন্ন দুই সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি সব আচরণবিধি মানলেও আওয়ামী লীগ সব বিধিই ভাঙছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর ৩টায় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপির প্রতিনিধি দল। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
আমির খসরু বলেন, আজকের বৈঠকে প্রথম যে বিষয়টি উঠে এসেছে, সেটা হলো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, সেটি হতে হলে সবার সমান সুযোগ থাকার দরকার। সেখানেই সমস্যা হচ্ছে। আমরা বলেছি সরকারি দল আচরণবিধি ভঙ্গ করছে। এমপি-মন্ত্রীরা প্রথম থেকেই প্রচারে যাচ্ছে, এটি পরিষ্কার।
তিনি বলেন, বিধি অনুযায়ী ফুটপাতের ওপর অফিস করা যাবে না, কিন্তু ঢাকায় ১০০ এর বেশি জায়গায় ফুটপাতের উপর আওয়ামী লীগের অফিস করা হয়েছে, সবার সামনেই এটি হচ্ছে, এখানে বিরোধের সুযোগ নেই। আমরা বলেছি এসব অফিস ভেঙে ফেলা উচিত। তারপরও আবার করলে অফিস করলে শোকজ করতে হবে, তারপরও আবার করলে প্রার্থিতা বাতিল হওয়া উচিত, কিন্তু তা হচ্ছে না। উল্টো অনেক ক্ষেত্রে ফুটপাত অতিক্রম করে রাস্তায়ও অফিস চলে আসছে।
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের ওভার সাইজ পোস্টার টাঙানো হচ্ছে, এমন পোস্টার বিএনপির একটিও নেই। আমরা আচরণবিধি মেনে চলছি। এভাবে নির্বাচন পর্যন্ত চললে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হতে পারে না। তারা মাইক ব্যবহারের বিধিও মানছে না। না মানার যে প্রবৃত্তি চলছে, তা থেকে তারা বেড়িয়ে আসবে সেটি ভাবার কারণ নেই।
জবাবে ইসি কী বলেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা আমাদের বলেছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্য সব ফুটপাতের অফিস ভাঙা হবে। ওভার সাইজ পোস্টার যেগুলো টাঙানো হয়েছে, সবগুলো তারা নামাবে এবং নিয়ম না মানলে সেসব মাইক অপসারণ করা হবে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষক বিষয়ে আমির খসরু বলেন, সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন নামের যে সংগঠন, তাদের কানাডিয়ান একজন নারী দেশে এক কথা বললেও বাইরে আরেক কথা বলেন। তিনি দুটি সংগঠনে আছেন, যার মালিক আওয়ামী লীগ। পর্যবেক্ষক সংস্থার ২২টার মধ্যে ১৮টির কোনো ওয়েবসাইট নেই, তাদের ম্যান পাওয়ার নেই। সব দলীয় লোকজন সেখানে। তারা নির্বাচনের দিন পর্যন্ত বলবে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে। আর যেখানে দেশের পর্যবেক্ষকরাই পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন না, সেখানে বিদেশিরা কী করতে পারবেন?
ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইভিএম শঙ্কা তৈরি করবে, কিন্তু এসব পর্যবেক্ষকরা সেসব স্বাগত জানাবে। মাঠে ম্যাজিস্ট্রেটের কোনো মোবাইল টিম নেই। বিএনপি প্রার্থীর ওপর আক্রমণ হচ্ছে, তাদের সিকিউরিটি নেই। তাদের গায়ে হাত তুলছে, সেখানে কোনো সমাধান হচ্ছে না। ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে মাঠের কোন সম্পর্ক নেই।
ইশরাকের প্রচারণায় আওয়ামী লীগের সংঘর্ষের বিষয়ে তিনি বলেন, দেশে যে রাজনীতি চলছে, সেখানে বিএনপি আ’লীগকে আক্রমণ করেছে এটা বিশ্বাস করার কোনো কারণ আছে? গতকাল বিএনপি কর্মীদের পেটানোর পর আওয়ামী লীগ আবার উল্টো মামলা করেছে। এখন নতুন নিয়ম হয়েছে যে আগে পেটাবে পরে মামলা দেবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ৬ সদস্য প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান মিয়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুস সালাম, বিজন কান্তি সরকার, যুগ্ম মহা-সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
ইসির পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি কে এম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম ও কবিতা খানম।