সংসদ সদস্য থেকে ‘নগরপিতা’
ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। ২০০৮, ২০১৪ এবং সবশেষ ২০১৮ সালে ঢাকা-১২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। কিন্তু ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী হওয়ার পর তিনি জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন।
আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেয়র সাঈদ খোকনের স্থলে মনোনয়ন পান শেখ পরিবারের তাপস। সাঈদ খোকনের ব্যর্থতা দূর করতে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। মেয়র প্রার্থী হয়ে তিনি ঢাকার জন্য পাঁচটি রূপরেখা প্রণয়ন করেন।
রূপরেখার মধ্যে রয়েছে ঢাকার ইতিহাস ও ঐতিহ্য প্রতিষ্ঠা করে ঢাকার মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদীসহ ঢাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি, সবুজায়ন এবং বায়ু ও শব্দ দূষণ রোধ করে পরিবেশবান্ধব শহর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, গণপরিবহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও সুব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কিছু রাস্তায় দ্রুত গতির যানবাহন, কিছু রাস্তায় ধীর গতির যানবাহন, অপরাধমূলক সমস্যার সমাধানসহ নাগরিক সেবা প্রদান ইত্যাদি। ঢাকার নানা সমস্যা ও জটিলতাকে কাটিয়ে উঠতে তাপস তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চান।
প্রথমবার নির্বাচিত হয়ে তাপস সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দ্বিতীয়বার তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সমালোচনা করেন তাপস।
তাপস পেশায় একজন ব্যারিস্টার। তার নেতৃত্বে চলছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ।
তাপসের বাবা ফজলুল হক মনি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাপসের ফুফু। শেখ ফজলুল করিম সেলিম তাপসের চাচা।
১৯৭১ সালের ১৯ নভেম্বর তাপস ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৬ সালে যুক্তরাজ্যের উলভারহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি সম্পন্ন করেন। ১৯৯৭ সালে ‘বার অব ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস’-এর জেনারেল কাউন্সিলের অধীনে বার ফাইনাল কোর্স সম্পন্ন করেন। তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের একজন সদস্য।
১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকার প্রকাশক ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের সদস্য। ২০০১ সাল থেকে হাইকোর্টের একজন আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন।