গাড়ি নেই শফিউলের, ৭১ মামলায় অভিযুক্ত রবিউল
আসন্ন ঢাকা-১০ আসনের উপ-নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীসহ বৈধ ছয় প্রার্থী লড়ছেন। এদের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর তিন প্রার্থী। আলোচিত এ তিন প্রার্থীই ব্যবসায়ী ও উচ্চশিক্ষিত।
জানা গেছে, কোটিপতি এ তিন প্রার্থীর মধ্যে বিএনপির প্রার্থী শেখ রবিউল আলম ৭১টি ফৌজদারি মামলার আসামি। যার মধ্যে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ২৫; তদন্তাধীন ৪৬টি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মো. শফিউল আলমের নামে কোনো মামলা নেই। তবে মহানগর দায়রা আদালতে একটি বিচারাধীন মামলায় অভিযুক্ত জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. শাহজাহান।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে প্রার্থীদের জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
হলফনামায় দেখা গেছে, ১৬টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় থাকা আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শফিউল ইসলামের বাৎসরিক আয় ৩৯ লাখ ৭১ হাজার ৬১২ টাকা। ব্যবসার পরিচালক সম্মানী হিসেবে আয় করেন ২২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। এছাড়া এফডিআর ব্যাংক হিসাবের লভ্যাংশ ও বোর্ড মিটিং ফি হিসেবে বাৎসরিক আয় ১৭ লাখ ১৩ হাজার ৬১২ টাকা। এম.কম পাস শফিউল ইসলামের নামে স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ১৪ কোটি ২৫ লাখ ৬১ হাজার ১৬৪ টাকার। স্ত্রীর নামে রয়েছে ৫৮ লাখ ৯৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদ। স্ত্রীর নামে ২৬ লাখ টাকা দামের টয়োটা গাড়ির কথা উল্লেখ করলেও নিজের নামে কোনো গাড়ি নেই এ প্রার্থীর। নিজ নামে কোনো জমি না থাকলেও যৌথ মালিকানায় থাকা জমি যার নিজ অংশের মূল্য ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭০০ টাকার অকৃষি জমিসহ ৪৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের ফ্ল্যাটের কথা বলেছেন। যার ফলে এ প্রার্থীর স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ লাখ ৪১ হাজার ৭০০ টাকায়। এছাড়া ১ কোটি ৯৫ লাখ ৬৫ হাজার ৯২০ টাকার আয়ের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিএনপি প্রার্থী ব্যবসায়ী শেখ রবিউলের ব্যবসা, শেয়ার বাজার ও সম্মানী বাবদ বাৎসরিক আয় ২৮ লাখ ৫৮ হাজার ৬১২ টাকা। অন্যদিকে আবাসান ব্যবসার সঙ্গে জড়িত জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাহজাহানের বাৎসরিক আয় আট লাখ ৭৪ হাজার টাকা। স্নাতকোত্তর পাস বিএনপির শেখ রবিউল আলমের নিজ নামে কৃষি, অকৃষি জমি, দালানসহ স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে এক কোটি ৩৫ লাখ ২৩ হাজার টাকার। স্ত্রীর নামে ১৬ লাখ ৩৬ হাজার ৫৩২ টাকার সম্পত্তি রয়েছে। এছাড়া ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার একটি গাড়ির কথা উল্লেখ করেছেন। নিজ নামে ৬১ লাখ ৫৩ হাজার ২৫২ টাকার অস্থাবর সম্পত্তির কথা বলেছেন বিএনপির এ প্রার্থী। পাশাপাশি স্ত্রীর নামে ৩৯ লাখ ৪২ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পত্তির কথা জানিয়েছেন। তবে নিজ নামে কোনো ঋণ বা দায় নেই তার।
ইংরেজিতে এম.এ করা জাতীয় পার্টির শাহজাহান অস্থাবর সম্পত্তিতে ১৭ লাখ টাকা মূল্যের একটি গাড়ি, শেয়ার, স্বর্ণালংকার মিলিয়ে অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বলেছেন ৭৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এছাড়া স্ত্রীর নামে চার লাখ ৯৫ হাজার ৫৫৬ টাকার সম্পত্তির কথা জানিয়েছেন। কৃষি জমি ও অ্যাপার্টমেন্টসহ নিজ নামে সম্পত্তি আছে এক কোটি এক লাখ টাকার। নিজ দায়সমূহের মধ্যে তিন কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ ও স্ত্রীর কাছ থেকে নেওয়া চার লাখ ৭০ হাজার টাকার ঋণ দায় হিসেবে উল্লেখ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী।
উল্লেখ্য, শেখ ফজলে নূর তাপস এ আসনের সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে অংশ নেওয়ায় ঢাকা-১০ আসনটি শূন্য হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী সবগুলো ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হবে ২১ মার্চ।