বলিউড পাড়ায় বিদ্যার যাত্রা, কিছু অজানা কথা
কেরালার পালাক্কাদে ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন ভারতের জাতীয় পুরস্কার ও পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত এবং 'ডার্টি পিকচার’ দিয়ে বাজিমাত করা নায়িকা বিদ্যা বালান।
বাবা পি আর বালান এবং মা সরস্বতী বালানের দ্বিতীয় সন্তান বিদ্যা আর তার বড় বোনের নাম প্রিয়া। তার জন্মের কয়েক বছর পর পরিবার কেরালা ছেড়ে মুম্বইতে চলে আসে। সেখানকার সেন্ট অ্যান্টনি গার্লস হাইস্কুল থেকে পাঠ শেষ করে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে সমাজবিদ্যা নিয়ে ভর্তি হন তিনি। পরে মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিদ্যায় ডিগ্রি লাভ করেন বিদ্যা।
১৯৯৫ সালে একতা কাপুরের অতি জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘হাম পাঁচে’ রাধিকা মাধুরের চরিত্র দিয়ে শুরু হয় তাঁর অভিনয় জীবন। তার পর 'ডার্টি পিকচার’ ‘কাহানি,’ ‘মিশন মঙ্গল’, 'পরিণীতা', 'লাগে রাহো মুন্না ভাই', ‘তুমহারি সুলু’, ‘ভুলভুলাইয়া’, ‘হেই বেবি’, ‘পা’, ‘কাহানি’, ‘কাহানি টু’-র মতো হিট ছবি উপহার দিয়েছেন তিনি।
এম এ পড়ার সময় মালায়ম ছবি চক্রম-এ সই করেন বিদ্যা। কিন্তু কয়েকটি কারণে কাজটি শেষ পর্যন্ত না করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তাঁর জায়গায় অভিনয় করেন মীরা জেসমিন। এই সময়ের মধ্যে বিজ্ঞাপন এবং মিউজিক ভিডিও-তে কাজ করছিলেন বিদ্যা।
২০০৩ সালে বাংলা ছবি ‘ভালো থেকো’-তে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও জয় সেনগুপ্তর সঙ্গে অভিনয় করে ফিল্ম ক্যারিয়ার শুরু করেন বিদ্যা।
২০০৫ সালে পরিণীতা ছবির মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন তিনি। সইফ আলি খান থেকে শুরু করে সব্যসাচী চক্রবর্তীদের পাশে নিয়ে তুখোর অভিনয় করে দর্শকদের মন জিতে নেন এই নায়িকা। পরে সেরা নবাগত অভিনেত্রী হিসেবে ফিল্মফেয়ারও পান তিনি।
২০০৬ সালে সঞ্জয় দত্তর সঙ্গে লাগে রাহো মুন্না ভাইতে অভিনয় করে সমালোচকদের প্রশংসা পান। এরপর একলব্য থেকে শুরু করে গুরু বা হেই বেবির মতো ছবিতেও সাফল্যের সঙ্গে কাজ করেন তিনি।
২০০৮ সালে কিসমত কানেকশন এবং হাল্লা বোল ছবিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
আর ক্যারিয়ারের দিক থেকে ২০০৯ সাল টা তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই বছর মুক্তি পায় অমিতাভ বচ্চনের ছবি পা যেখানে তিনি অভিনয় করেছিলেন। এই ছবি জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে ফিল্ম ফেয়ার পান বিদ্যা। পরের বার ইশকিয়া ছবিও তাঁকে একই পুরস্কার এনে দেয়।
২০১১ সালে মুক্তি পায় ‘ডার্টি পিকচার’। অভিনেত্রী সিল্ক স্মিতার জীবন নিয়ে তৈরি ছবি তাঁকে জাতীয় পুরস্কার এনে দেয়।
২০১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর সিদ্ধার্থ রায় কাপুরের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বিদ্যা।
২০১৪ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন বিদ্যা।
২০১৫ সালে মুক্তি পায় হামারি আধুরি কাহানি। এর পর আরও কয়েকটি হিট ছবি উপাহার দেন তিনি। এই সময় তিনি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। এক দশক ধরে চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য ভারতের আহমেদাবাদভিত্তিক রাই বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ‘ডক্টর অব আর্টস অনারিস কজা’ ডিগ্রি দেয়। বিদ্যা তাঁর অধিকাংশ চরিত্রেই নারীর শক্তিশালী দিকটি ফুটিয়ে তুলেছেন এবং সমাজে নারী ক্ষমতায়নে অবদান রেখেছেন।
২০১৭ সালে রাজ কাহিনির হিন্দি সংস্করণ বেগম জান-এ অভিনয় করেন বিদ্যা। ওই বছরই মুক্তি পায় তুমহারি সুলু। শেষ ছবিটির জন্য ষষ্ঠ বার জাতীয় পুরস্কার পান বিদ্যা।
২০১৯ সালে অক্ষয় কুমার এবং তাপসী পান্নুর সঙ্গে মিশন মঙ্গল ছবিতে অভিনয় করেন বিদ্যা।
এত গুলো ভালো খবরের মধ্যেও জনপ্রিয়তায় তুঙ্গে থাকা এই নায়িকাকে তার স্বাস্থ্য নিয়ে অনেক কটু কথা শুনতে হয়েছে, হচ্ছে। বিদ্যার কথা, ওসবে পাত্তা দিতে নেই। নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে তাঁর এতটুকু খারাপ লাগা নেই। লোকে কী বলল, তাতে তাঁর কিছুই যায়–আসে না।