পাকবাহিনীর টর্চার সেলে মঞ্চস্থ হলো গণহত্যা বিরোধী নাটক

  • বিনোদন ডেস্ক, বার্তা ২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নাটকের দৃশ্য

নাটকের দৃশ্য

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ফেনী কলেজ ছিলো পাকবাহিনীর অন্যতম ক্যাম্প আর টর্চার সেল। কলেজের গোলপোস্ট ছিলো তাদের অত্যাচার করার অন্যতম একটা জায়গা। কতশত জানা অজানা মানুষ এই কলেজ এর বধ্যভুমিতে শহীদ হয়েছে তা আজও অজানা। সেই স্থানেই রবিবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় বিশাল আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো নাটক ‘গোল পোস্ট’। নাটকটি রচনা করেছেন আসাদুল ইসলাম।

বাংলাদেশের জন্য কিছু অতি সাধারন মানুষের আত্মত্যাগের কাহিনী, পাক বাহিনীর ঘৃন্য যুদ্ধ পরিকল্পনা নিয়েই নাটক ‘গোলপোস্ট’। এমন তথ্য জানিয়ে নাটকের পরিকল্পক ও নির্দেশক সেতু বলেন, “স্বাধীনতার জন্য আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান তো অনস্বীকার্য। কিন্তু পাক বাহিনীর আক্রোশের আগুনে পুড়েছে গ্রামের পর গ্রাম, প্রাণ হারিয়েছে সাধারন মানুষ, যাদের ছিলোনা কোন দলমত বা গোত্র। তাদের অপরাধ ছিলো একটাই, তারা বাঙালি। পাক বাহিনী ধর্মটাকে ব্যাবহার করেছে আড়াল হিসেবে। তারা এদেশের মাটিটাই চেয়েছে, মানুষ না। তাই বিনা কারনে হত্যা করেছে শিশু, নারী, বৃদ্ধ। তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে করেছে রোমহষর্ক সব অত্যাচার।

বিজ্ঞাপন

৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া আমার বাংলাদেশ। গণহত্যা পরিবেশ থিয়েটার ‘গোলপোস্ট’ সেই নাম জানা, না জানা সাধারণ মানুষগুলোর প্রতি উৎসর্গ করছি।” 


স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কর্মসূচি ৬৪ জেলায় বধ্যভূমিতে গণহত্যার পরিবেশ থিয়েটার নির্মাণ। ইতোমধ্যে বধ্যভূমি নির্বাচন, গবেষণা কার্যক্রম, পান্ডুলিপি তৈরি এবং মহড়া কার্যক্রম শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় পরিবেশ থিয়েটার মঞ্চায়ন হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। তারই ধারাবাহিকতায় ফেনীতে এ নাটকের মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হলো।

বিজ্ঞাপন

নাটকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান। সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মাসুদুর রহমান। নাটক প্রদর্শনীটি অনলাইনে উদ্ভোধন করেন একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি।


গোলপোস্ট মঞ্চায়নের আগে অনলাইনে এর উদ্বোধন করে লাকি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে এ কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা আশাবাদী। রিচার্ড শেখনার ‘পরিবেশ নাটক’ বলতে যা বুঝিয়েছিলেন তাতে বিষয়টি দাঁড়ায়, প্রচলিত প্রেক্ষাগৃহের বাইরে অন্যত্র নাটক মঞ্চায়ন। এ পদ্ধতিতে যেকোনো স্থানে নাটক মঞ্চায়ন উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করে তাতে নাট্য পরিবেশনা সম্ভব। সে কারণেই পুরোনো গ্যারেজ, পরিত্যক্ত অস্ত্র কারখানা, অব্যবহৃত কসাইখানা, গীর্জা ইত্যাদি নাট্যকর্মীদের হাতে পড়ে রঙ্গালয়ের মাহাত্ম লাভ করেছে। বাংলাদেশে এ ধারণা ভিন্ন মাত্রা পায়। যেখানে ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, যে পরিবেশের কাহিনী ঠিক সেখানেই নাটকের অভিনয়ে পরিবেশ থিয়েটার প্রকৃত অর্থে পরিবেশবাদী হয়ে ওঠে। এ ধারার প্রযোজনার সাফল্য পুরোমাত্রায় নির্ভর করছে টিমওয়ার্ক, নাট্যকর্মীদের কর্মতৎপরতার সমন্বয় এবং যথাযথ গবেষণার উপর।”

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকির ভাবনা ও পরিকল্পনায় নাটকগুলির পৃষ্ঠপোষকতা করছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।