চলতি বছরের গোড়ার দিকে হিজাব বিতর্কে উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। কর্নাটক সর কার ‘হিজাব’কে ধর্মীয় পোশাক বলে দাগিয়ে দিয়ে তা পরে কলেজে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা করে। সেই নিয়েই আন্দোলনে মাঠে নেমেছিল মুসলিম মেয়েরা। মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। টানা ৯ দিনব্যাপী হিজাব মামলার শুনানি সদ্য সম্পূর্ণ হয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে।
অন্যদিকে বিশ্বের অপর এক দেশে সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতি। ইরানের মহিলারা হিজাব না পরবার জন্য প্রকাশ্য রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। সাত বছরের বেশি বয়সী নারীদের হিজাব পরা ইরানে পরতে বাধ্যতামূলক। এর বিরোধিতায় বহু নারী ক্যামেরার সামনে তাঁদের চুল কেটে ফেলে এবং হিজাব পুড়িয়ে দিয়েছেন। ‘লিঙ্গ বৈষম্যের শাসনে বিরক্ত’ ইরানের মহিলারা, তাই হিজাব থেকে ‘মুক্তি’ চান তাঁরা। ‘হিজাব’ ইস্যুতে এবার মুখ খুললেন গায়ক আদনান সামি।
এদিন টুইটারে পাক বংশোদ্ভূত এই গায়ক লেখেন- ‘যদি তথাকথিত মৌলবাদীরা দাবি করেন এটা কোরানে লেখা আছে, তাহলে সেটাও মহিলা আর আল্লার মধ্যেকার ব্যাপার। সেটা আপনার সমস্যার কারণ হওয়া উচিত নয়!!! দয়া করে নিজের চরকায় তেল দিন আপনারা’।
এরপর তিনি আরও লেখেন, ‘আমি হিজাবের পক্ষে বা বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু আমি কারুর ব্যক্তি সিদ্ধান্তের (চয়েস) পক্ষে। যদি কোনও নারী তাঁর ইচ্ছায় হিজাব পরেন, তাহলে আমার আপত্তি নেই। আবার যদি কোনও নারী হিজাব না পরতে চান, তাহলেও আমার কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু আমার সমস্যা হল, কেউ যদি তাঁকে (নারীকে) জোর করে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে হিজাব পরতে বাধ্য করে। #ফ্রিচয়েস’।
উল্লেখ্য, হিজাব মামলায় নিজের রায় সংরক্ষিত রেখেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। তবে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হিজাব পরার অনুমতি দেওয়া হলে তা ভারতের বৈচিত্র্য সম্পর্কে জানার সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। বেঞ্চ জানায়, ‘কেউ এটাও বলতে পারে, এটি বৈচিত্র্য প্রকাশের একটি সুযোগ। আমাদের কাছে সমস্ত সংস্কৃতি, ধর্মের শিক্ষার্থী রয়েছে। দেশের বৈচিত্র্যের দিকে তাকান, তাদের প্রতি সাংস্কৃতিকভাবে সংবেদনশীল হোন।’
প্রকাশ পেয়েছে রায়ান রেনল্ডস এবং হিউ জ্যাকম্যান অভিনীত ডেডপুল বনাম উলভারিন সিনেমার প্রথম অফিশিয়াল ট্রেইলার। মার্ভেল এন্টারটেইনমেন্ট এর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে সোমবার (২২ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭ টায় ট্রেইলারটি প্রকাশ করা হয়েছে। দুইটি ভিন্ন ইউনিভার্সের গল্প কিভাবে চলবে তা নিয়ে ভক্তদের দুশ্চিন্তা দূর করবে এই সিনেমা-তারই ঝলক মিললো ট্রেইলারে।
টুয়েন্টিথ সেঞ্চুরি ফক্স বিক্রি হওয়ার মাধ্যমেই এক্সম্যানের সিনেমাগুলোর উপর তাদের রাইটের সমাপ্তি ঘটে। তবে সিনেমায় চলাকালীন গল্পে ফক্স ইউনিভার্সের চরিত্রগুলোকে কিভাবে মার্ভেলের চরিত্রের সাথে একবদ্ধ করে কাজ করানো হবে- তাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন ভক্তরা। ডেডপুল বনাম উলভারিন সিনেমার ট্রেইলারে এটা স্পষ্ট করা হয় যে, সিনেমার গল্পেও ফক্স ইউনিভার্স ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এই বিধ্বংসের সকল দায়ভার চাপানো হয়েছে উলভারিন, তথা লোগান চরিত্রের উপর।
ট্রেইলারে ডেডপুলের চরিত্র উলভারিনের চরিত্রের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে যায়। উলভারিনের নিজের ব্রহ্মাণ্ড ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, তাই সে যেন ডেডপুলের ব্রহ্মাণ্ড ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা করতে তাকে সাহায্য করে। মিস্টার প্যারাডক্স ডেডপুলকে জানান, উলভারিন নিজেই তার ইউনিভার্স ধ্বংসের কারণ৷ তবে এই উলভারিন কোন ইউনিভার্সের তা এখনো স্পষ্ট নয়।
এছাড়াও প্রধান খল চরিত্র ক্যাসেন্ড্রা নোভার প্রথম ঝলকও দেখা যায় ট্রেইলারে। তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এক্সম্যানের সবচেয়ে শক্তিশালী চরিত্র উলভারিনেরও নাজেহাল অবস্থা। কিভাবে নোভাকে পরাজিত করবে ডেডপুল এবং উলভারিন, জানা যাবে চলতি বছর ২৬ জুলাই। এর আগে এক্সম্যেন অরিজিনস:উলভারিন সিনেমায় একত্রে পর্দায় এসেছিলেন রায়ান এবং হিউ। তবে সেই সিনেমায় মুখোমুখি ছিল ডেডপুল এবং উলভারিন চরিত্র। আসন্ন সিনেমায় একত্র হয়ে লড়বেন দুই সুপারহিরো। ডেডপুল বনাম উলভারিন সিনেমাটি ২০২৪ সালে মার্ভেল সিনেমেটিক ইউনিভার্সের প্রকাশ করা একমাত্র সিনেমা।
বহুল পরিচিত চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান টুয়েন্টিথ সেঞ্চুরি ফক্সকে কয়েক বছর আগেই কিনে ফেলেছিল প্রযোজনা সংস্থা ডিজনি। মার্ভেল আগে থেকেই ডিজনির অধীনস্থ হওয়ায় মার্ভেল তাদের কমিকসের সব চরিত্রের অধিকার আবার ফিরে পায়। ফক্সের কাছে মার্ভেলের সকল মিউট্যান্ট চরিত্রের রাইট ছিল৷ ফক্সের তৈরি করা সকল এক্সম্যেন সিরিজের ইতি ঘটে এর মাধ্যমেই। ঘোষণা হয়, এসব চরিত্রে তারপর থেকে যত সিনেমা আসবে সবটাই ডিজনি এবং মার্ভেলের অধীনেই থাকবে। তবে ভক্তদের মধ্যে চিন্তার ঢেউ খেলে এই ভেবে যে, দুটো ভিন্ন ইউনিভার্সের কাহিনী কিভাবে একত্র করা হবে!
হিউ মাইকেল জ্যাকম্যান হলিউডের একজন অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত অভিনেতা এবং সঙ্গীতশিল্পী। অভিনয় জীবনে দ্য প্রেস্টিজ, অস্ট্রেলিয়া, দ্য গ্রেটেস্ট শোম্যান, প্রিজনার্সের মতো অনেক জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি, পেয়েছেন একাধিক আন্তর্জাতিক সম্মাননা। তবে ভক্তদের কাছে তিনি লোগান বা উলভারিন নামেই বেশি পরিচিত। বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় প্রযোজনা সংস্থা টুয়েন্টিথ সেঞ্চুরি ফক্সের অধীনে মার্ভেলের জনপ্রিয় এই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন হিউ। একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে ভক্তদের পছন্দের এই চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। এমনকি উলভারিন চরিত্রেই মাধ্যমেই বর্তমানে হলিউডে একই চরিত্রে দীর্ঘতম সময় অভিনয় করার রেকর্ড রয়েছে হিউ জ্যাকম্যানের নামেই।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আয়োজনে ‘১২তম লিবারেশন ডক্ ফেস্ট বাংলাদেশ’ শিরোনামে ৫ দিনব্যাপি আন্তর্জাতিক প্রামাণ্যচিত্র উৎসবের শেষ দিন ছিল সোমবার। ঘোষিত অনুষ্ঠানসূচি অনুযায়ী এ দিন নির্বাচিত তথ্যচিত্র প্রদর্শনী শুরুর কথা ছিল বেলা ১১টায়।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মিলনায়তনে এ প্রদর্শনী দেখতে এই প্রতিবেদক সকাল পৌনে ১১টায় জাদুঘর প্রাঙ্গনে পৌছে দেখতে পান কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী ছাড়া সেখানে কেউ নেই। তবে জাদুঘর ভবনের দেওয়ালে বেমানানভাবে পেচিয়ে থাকা এ সংক্রান্ত তথ্য সম্বলিত কয়েকটি হ্যাংগিং ব্যানার উৎসবের দৈন্যতাকেই যেন জানান দিচ্ছিল।
নিরাপত্তাকর্মীদের কাছ থেকে উৎসব সম্পর্কিত কোন আপডেট না পেয়ে জাদুঘর সচিবালয়ে গিয়ে ফারহাত নামে দায়িত্বরত একজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি উৎসব সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। ফারহাত জানান, বেলা ১১টায় উৎসবের পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী তথ্যচিত্র প্রদর্শনী শুরু হবে।
মিলনায়তনে গিয়ে দেখা যায়, ফাঁকা মিলনায়তনটিতে শুধুমাত্র একজন কর্মী প্রজেক্টরে প্রদর্শনের জন্য তথ্যচিত্র চালিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। কিছুক্ষণ বসে অপেক্ষার পর মৃন্ময় ব্যানার্জী নামে কলকাতা থেকে আসা একজন তথ্যচিত্র নির্মাতা উপস্থিত হন সেখানে। তিনি জানালেন, তাঁর তথ্যচিত্র এই উৎসবে প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত হয়েছে এবং ইমেইল ও ফোন করে তাকে উৎসবে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বেলা ১১টার কিছু পরে কোন দর্শনার্থীর উপস্থিতি এবং ঘোষণা ছাড়াই মৃন্ময় ব্যানার্জীর ‘বিপ্লবের ধ্বজা হাতে এনেছিল যাঁরা স্বাধীনতা’ শীর্ষক তথ্যচিত্রটির প্রদর্শন শুরু করেন ওই জাদুঘর কর্মী।
৪০ মিনিট দীর্ঘের এই তথ্যচিত্র প্রদর্শন শেষ হলে ফাঁকা মিলনায়তনে এক শুভানুধ্যায়ী নিয়ে নিজের নির্মাণ করা তথ্যচিত্র দেখতে আসা মৃন্ময় হতাশা ব্যক্ত করে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘কোন দর্শনার্থী যদি এই এটি না-ই দেখলো তবে তা আন্তর্জাতিক প্রামাণ্যচিত্র উৎসব নাম দিয়ে এখানে প্রদর্শনের কি গুরুত্ব থাকতে পারে! এমন উৎসবে আমন্ত্রণ জানানোরইবা কি প্রয়োজন ছিল?’
তরুণ এই নির্মাতা বলেন, ‘উৎসবে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে আয়োজকদের পক্ষ থেকে ইমেইল করা হয়, তাতে আমার টিমের জন্য ২টি পাশ ইস্যু করার কথা উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে উপস্থিত হয়ে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞেস করলে কেউই এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি দায়বদ্ধ থেকেই সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যয়ে এই তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছি। আগ্রহীরা যদি দেখতেই না পারলো তবে এ এধরণের আয়োজনে অংশগ্রহণ অর্থহীন।’
তিনি বলেন, ‘হয়তোবা আয়োজকরা এই উৎসব সম্পর্কে আগ্রহীদের কাছে তথ্য পৌছে দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। বৈরী আবহাওয়া সত্ত্বেও প্রকৃত অনুরাগীরা এই ধরণের আয়োজনে সব বাধা উপেক্ষা করেও ছুটে আসেন-অতীত অভিজ্ঞতা থেকে তা দেখে এসেছি আমরা।’
নির্মাতা মৃন্ময় ব্যানার্জীর তথ্যচিত্র দেখতে আসা বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া জাদুঘর মিলনায়তনটি প্রদর্শনীর জন্য উপযোগি ছিল না বলে অভিযোগ করে বলেন, ‘মিলনায়তনে আধঘন্টার মতো বসে থেকে বুঝতে পারছি প্রদর্শনের আগে এটিতে স্বাভাবিক পরিচ্ছন্নতার কাজটিও করেননি জাদুঘর কর্মীরা। রীতিমতো দুর্গন্ধ পাচ্ছিলাম, এয়ারফ্রেশনার ব্যবহার করে একটি প্রেক্ষাগৃহকে যেভাবে প্রস্তুত করা হয়, এখানে তা করা হয়নি।’
এ রকম মিলনায়তনে এসে যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন বলেও মন্তব্য করেন এই বক্ষব্যাধি চিকিৎসক।
মিলনায়তন থেকে বেরিয়েই জাদুঘর অভ্যন্তরে বিশ-পচিশজন স্বেচ্ছাসেবককে খোশগল্প করতে দেখা যায়। তাদের কেউই মিলনায়তনে কেন গেলেন না জানতে চাইলে-তারা কথা বলতে রাজি হননি। উৎসব সমন্বয়ে থাকা ফারহাতের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি দাবদাহের কারণে দর্শনার্থী না থাকার দায় এড়ান। তবে উৎসব সংশ্লিষ্ট জাদুঘর কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরাও কেন প্রদর্শনীতে থাকলেন না-এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দেননি তিনিও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাদুঘরের এক কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘১২তম লিবারেশন ডক ফেস্ট বাংলাদেশ’ এর উদ্বোধন ও সমাপনী আয়োজনে কিছু অতিথি ও দর্শনার্থী ছাড়া এবারের আয়োজনে উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে। গত ১৮ এপ্রিল জাদুঘর মিলনায়তনে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা নীলোৎপল মজুমদার এবং ভারতের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নির্মাতা হাওবাম পবন কুমার সেখানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আসাদুজ্জামান নূর এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও উৎসব পরিচালক মফিদুল হক। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সদস্য সচিব সারা যাকের।
২০০৬ সাল থেকে প্রামাণ্য চিত্র উৎসব শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এই উৎসবে বিশ্বের খ্যাতিমান নির্মাতাগণ তাদের তথ্যচিত্র নিয়ে অংশ নিয়ে এই উৎসবের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত জুরি বোর্ডের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সেরা তথ্যচিত্র নির্মাতাদের পুরষ্কৃতও করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু এবার এই উৎসব আয়োজনে সেই ঐতিহ্যিক পরম্পরা বজায় রাখতে পারেনি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর- এমন অভিযোগ তথ্যচিত্র নির্মাতাদের।
বরগুনায় মায়ের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা অলিউল হক রুমি। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে রুমির মরদেহ বরগুনা পৌরসভার পিটিআই সড়কে ভাইরের বাসায় পৌঁছায়। প্রিয় অভিনয় শিল্পীকে এক নজর দেখতে ভিড় করেন তার স্বজনরা।
পরে পৌনে ছয়টায় বরগুনার শহীদ আবুল হোসেন ঈদগাহ মাঠে তার দ্বিতীয় জানাজা শেষে বরগুনা পৌর গণকবরে মায়ের কবরের পাশে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এসময় তার সহকর্মী রাশেদ সিমান্ত, শফিক খান নীলু, সহকর্মী শিল্পীবৃন্দ, আত্মীয় স্বজনসহ স্থানীয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, ভোর ৩টা ৫৮ মিনিটে ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এরপর সকাল ৯টায় রাজধানী শহীদবাগ জামে মসজিদে তার প্রথম জানাজা সম্পন্ন করে মরদেহ বরগুনা পৌর শহরের পিটিআই সড়কে ছোট ভাই জিয়াউল হক জুয়েলের বাড়িতে আনা হয়।
বরগুনা জেলার বামনা উপজেলায় জন্ম রুমির। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক ও মা হামিদা হক। পরিবারে তিন বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে রুমি মেজো। ভাইদের মধ্যে তিনি বড়। রুমির দুই সন্তান। মেয়ে আফরা আঞ্জুম রুজবা স্বামী সন্তান নিয়ে থাকেন কানাডায়। আর ছেলে ফারদিন হক রিতম একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্প্রতি লেখাপড়া শেষ করেছেন।
১৯৮৮ সালে বেইলি রোডের ‘এখনো ক্রীতদাস’ থিয়েটার নাটকের মধ্য দিয়ে রুমির অভিনয় শুরু। একই বছর ‘কোন কাননের ফুল’ নাটকের মাধ্যমে ছোট পর্দায় অভিষেক হয় তার। টেলিভিশনের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন সিনেমায়ও। ২০০৯ সালে ‘দরিয়াপাড়ের দৌলতি’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। এরপর থেকে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাটক হলো- সাজেশন সেলিম, বোকাসোকা তিনজন, মেকআপ ম্যান, ঢাকা টু বরিশাল, ঢাকা মেট্রো লাভ, বাপ-বেটা দৌড়ের ওপর, আমেরিকান সাহেব, জার্নি বাই বাস, বাকির নাম ফাঁকি, রতনে রতন চিনে, আকাশ চুরি, চৈতা পাগল, জীবনের অলিগলি, মেঘে ঢাকা শহর ইত্যাদি।
আতিফ আসলামের কনসার্ট নিয়ে ক্ষুব্ধ মাশা, হচ্ছে বিতর্ক
বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বিনোদন
পাকিস্তানের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী আতিফ আসলাম। অনন্য কণ্ঠর মাধ্যমে কোটি কোটি ভক্তদের মনে জায়গা করেছেন তিনি। সম্প্রতি ঢাকায় গাইতে এসেছিলেন এই তারকা। গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) তার কনসার্টে উপচে পড়া ভিড় হয়। বাঙালি তরুণ-তরুণী প্রিয় গায়ককে এক ঝলক দেখার জন্য জড়ো হয় অসহনীয় তাপমাত্রার মধ্যেও। রাজধানীর বসুন্ধরা ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ১৯ এপ্রিল তার কনসার্ট আয়োজন করা হয়েছিল।
আতিফের পাশাপাশি এই আয়োজনে গান গাওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন ‘ট্যাকা, ও পাখি’ এবং ‘ঘুমাইলা ঘুমাইলারে বন্ধু’খ্যাত মাশা ইসলাম। কিন্তু গান পরিবেশন করতে পারেননি তিনি। এই ব্যাপারে কনসার্ট থেকে ফিরেই ক্ষুব্ধ হয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন এই শিল্পী।
তিনি লেখেন, ‘সংগঠকদের আশ্চর্যজনক অব্যবস্থাপনার কারণে আমার ২০ মিনিটের পারফরম্যান্স স্লটটি বাতিল করা হয়েছে। কারণ স্পষ্টত, একজন বিদেশী শিল্পীর জন্য স্থানীয় শিল্পীকে বাতিল করা কোনো অপরাধ নয়। এভাবেই আমরা বিশ্বের কাছে নিজেদেরই মর্যাদাকে কমিয়ে দেই। ভাল কাজ করেছেন লেটস ভাইব! আপনাদের এই ক্রমাগত অপমান, শেষ না হওয়া ঝামেলা এবং প্রশ্নবোধক আচরণের জন্য। আমাদের সকলকেই একদিন আমাদের কৃতকর্মের মাশুল দিতে হবে।’
এছাড়াও দর্শকদের কাছে দু:খিত হওয়ার কথা জানান তিনি। তাদের জন্য চমৎকার একটি উপস্থাপনা প্রস্তুত করেও পরিবেশন করতে না পারায় তার মন খারাপ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল।
ভক্তদের অনেকে মাশাকে সমর্থন করছে। এরকম অব্যবস্থাপনকদের সঙ্গে আবার কাজ না করার উপদেশ দিয়েছে অনেকে। আবার কেউ কেউ বলছে, কাদের শোতে হ্যা বা না বলবেন তা এই ঘটনার মাধ্যমেই মাশার শিখে নেওয়া উচিত।
তবে নেটিজেনদের এক পক্ষ মাশার বিরুদ্ধে কথা বলছেন। তাদের ভাষ্যমতে, সানির সঙ্গে মাশার পারফর্ম করার কথা ছিল। তবে মাশা নিজেই সময়মতো উপস্থিত হতে পারেননি। তিনি জ্যামে আটকা থাকার দরুন তার জন্য নির্ধারিত সময় স্টেজ খালি ছিল। সানিকে কনসার্টে এও বলতে শোনা যায়, তার সহশিল্পী এখনো এসে পৌঁছাতে পারেননি। সেই কারণে একটি অতিরিক্ত গানও উপস্থাপন করেন তিনি। এ কারণে মাশার রাগ করা নিরর্থক।
কারণ, আতিফ আসলাম তখনই সময় পেয়েছেন যখন তার জন্য বরাদ্দ করা ছিল। এছাড়াও অনেকের মতে, বিদেশী শিল্পী আসলে সেই মূল আকর্ষণ থাকবেন সেটিই স্বাভাবিক। এমন অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পী হিসেবে তারই গান পরিবেশন করতে আসার সিদ্ধান্ত বোকামি হয়েছে।
যদিও এই বিতর্ক নিয়ে এখনো মুখ খোলেননি কনসার্ট কর্তৃপক্ষ।