ওরা সবসময় একটা খড়গ ঝুলিয়ে রাখে : স্টার সিনেপ্লেক্স প্রসঙ্গে নির্মাতা সৌদ
‘শ্যামা কাব্য’ মুক্তির মাত্র তিন দিনের মাথায় ছবিটি স্টার সিনেপ্লেক্স থেকে সরিয়ে নিয়েছেন এর নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ। তার এমন সিদ্ধান্তের পেছনে স্টার সিনেপ্লেক্স বসুন্ধরা শাখায় ছবির জন্য দেওয়া হলের প্রজেকশন সিস্টেমে সমস্যা, সেল রিপোর্টে গড়মিলসহ বেশ কিছু কারণ জানিয়েছেন।
এছাড়া নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে এক স্ট্যাটাসে বিস্তারিত লিখেছেন তিনি, ‘ওদের এত প্রয়োজন নেই কাউকে, সবাই তো ওদের কাছে ধর্ণা দেয়। আমার মনে হয় না অন্য কেউ স্টার সিনেপ্লেক্স থেকে তিন দিনের মাথায় নিজ দায়িত্বে ছবি তুলে নিয়েছে। এর কারণ, ওরা যে মানসিক নির্যাতনটা করে থাকে একজন নির্মাতা, প্রযোজককে সেটা থেকে বের হতে চেয়েছি। সেটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওরা সবসময় একটা খড়গ ঝুলিয়ে রাখে। স্টার সিনপ্লেক্সের মূল কর্তৃপক্ষের কথা আমি বলছি না। তারা সম্ভবত এ বিষয়ে কিছু জানে না। আমি হলের কর্মকর্তাদের কথা বলছি। এ কর্মকর্তাদের ব্যবহার পরিচালক-প্রযোজকদের প্রতি এ রকম, আমরা আপনাদের দয়া করছি। এমন আচরণ মেনে নেওয়া সম্ভব না এবং উচিত না। সবারই সম্মানবোধ থাকে। অসম্মানটা আমার প্রাপ্য না।’
তার ছবি ভালো না চললে নামিয়ে দেওয়া হবে, এমন কথা তাকে বারবার মনে করিয়ে দেওয়া হত। এমনটা জানিয়ে সৌদ বলেন, ‘হতেই পারে আমার ছবি দর্শকপ্রিয় হয়নি। কিন্তু প্রতিদিন আপনাকে বলবে কেউ ছবি না চললে কিন্তু নামিয়ে দিব। আরে বাবা! আমি তো এটা জানি ছবি না চললে আপনি নামিয়ে দিবেন। আমাকে প্রতিদিন মনে করিয়ে দিতে হবে না আপনার। ছবিটা প্রচারের চেষ্টা করবো এবং আমি তো করছি। এ ধরনের ছবি প্রথম দিনে অনেক দর্শক টানবে এমন না। ‘ওয়ার্ড অব মাউথ’ প্রচারণার মাধ্যমে এ ধরণের ছবি দর্শক বাড়ে কিংবা গণমাধ্যমের মাধ্যমেও হয়।’
স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা শাখার তিন নম্বর হলের প্রজেকশন নিয়ে আপত্তি ছিল সৌদ ও তার টিমের। ব্যাপারটি নিয়েও তার সঙ্গে কটাক্ষ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সৌদ বলেন, ‘আমার ছবিতে তো বিশাল বড় কোনো তারকা নেই শাকিব খানের মত। সে তো নিজেই ব্র্যান্ড। তার নামেই দর্শক ছুটে চলে আসে। যে হলের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদটা করেছিলাম সেখান থেকে সরিয়ে এক নম্বর হলে দিয়েছিল যার প্রজেকশন কোয়ালিটি অনেকটাই ভাল। কিন্তু আমাকে গতকাল শুনিয়েছে, সে হলে তারা শাকিব খানের ছবিটা (রাজকুমার) চালিয়েছে এবং ওখানে অনেক দর্শক ছবিটা দেখেছে। ওই হলে অনেক দর্শক মানে এ না যে তাদের প্রজেকশন কোয়ালিটি ঠিক হয়ে গিয়েছে। ওখানে অনেক দর্শক কারণ, শাকিব খান অনেক বড় সুপারস্টার তার ছবি দেখার জন্য দর্শক যে কোনো ধরনের প্রজেকশন মেনে নেয়। কিন্তু একইসঙ্গে এটাও সত্য প্রজেকশন কোয়ালিটির উন্নতি হয়নি, দর্শকের সঙ্গে প্রতারণাই হচ্ছে। এটাও তো আমার প্রতি একধরনের মানসিক নির্যাতন।’
হিসেবের গড়মিল নিয়েও স্ট্যাটাসে বলেছেন সৌদ। এ ব্যাপারে তার দাবি, স্টার সিনেপ্লেক্সের ম্যানেজার রেবেকা সুলতানা শুক্রবার (৩ মে) দুপুর ৩টার দিকে তাকে যে হিসেব দিয়েছিল, রাতে পাঠানো মেইলে তার চেয়েও সেল কম দেখানো হয়েছিল।
এ ঘটনায় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির কেউ কি তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে? এমন প্রশ্নে সৌদ বলেন, ‘এ ঘটনাটি সবাই বুঝবেন কিনা, পাশে এসে দাঁড়াতে চান কিনা, জানি না। কিন্তু আমি সমস্ত নির্মাতার হয়ে প্রতিবাদটি করেছি। পাশে এসে দাঁড়ানোর মানে এ না যে, আমাকে সহমর্মিতা দিতে হবে। এর মানে বলতে হবে, তুমি আমার সিনেমা নাই চালাতে পারো। কিন্তু তুমি আমাকে অসম্মান করবে না। আমাকে মানসিক নির্যাতন করবে না।’
২০১৯-২০ অর্থ বছরে ছবিটি সরকারি অনুদান পায়। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সোহেল মণ্ডল, ইন্তেখাব দিনার, নীলাঞ্জনা নীলা।