অনেক অনুরোধের পর রাজী হয়েছি : শিহাব শাহীন
প্রায় দুই যুগের নির্মাতা ক্যারিয়ারে অনেক দর্শকপ্রিয় কাজ উপহার দিয়েছেন শিহাব শাহীন। টেলিভিশনের পর সিনেমায় সফলতা পাওয়া এই নির্মাতা এখন ওটিটিতেও দেখাচ্ছেন নিজের মুন্সিয়ানা। আজ মুক্তি পেয়েছে তার নতুন সিরিজ ‘গোলাম মামুন’। সমসাময়িক বিষয়ে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। লিখেছেন মাসিদ রণ
রোমান্টিক নাটকের জন্যই আপনি বেশি জনপ্রিয়। সাম্প্রতিক সময়ে এসে রোমান্টিক জনরার বাইরেও কাজ করছেন। এই তাগিদটা কেন?
বেশকিছু রোমান্টিক নাটক নির্মাণ করেছি যার কারণে দর্শকের এমন ভাবাটা অমূলক নয়। কিন্তু এখন এটা শুনতে একটু কেমন জানি লাগে, আর ভালো লাগে না। আমার প্রথম নির্মিত নাটক ‘ঘূর্ণি’ ছিল থ্রিলার, সায়েন্স ফিকশন এবং রোমান্টিকের মিশেলে। এরপর ‘এক্স ফ্যাক্টর’ ছিল রম-কম, ‘রমিজের আয়না’ ড্রামা সিরিজ, ‘কাঠের খাঁচা’ ড্রামা সিরিজ। এখনকার এই সময়টাতে আমার সবচেয়ে বেশি পপুলার কাজ হয়েছে থ্রিলার; যেমন- আগস্ট ১৪, সিন্ডিকেট, মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন। তাগিদ বলব না, বলব যে সবসময় নতুন কিছু করতে চাই, ভালো গল্প বলতে চাই এবং নিজের কমফোর্ট জোনের বাইরে গিয়ে কিছু করতে চাই। যে গল্প কিংবা চরিত্রটাতে আমি নিজে এনগেজড হই সেই গল্পটা আমি দর্শকের বলতে চাই। আমার বিশ্বাস দর্শকও সেটার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারেন। কবে কে কি নির্মাণ করেছেন, তার চেয়ে সর্বশেষ কাজটা দিয়েই কাউকে বিচার করে দর্শক। আর তাই সবসময় আমি আমার শেষ কাজটাকেই সেরা হিসেবে করতে চাই, যেমন এখন আমার শেষ নির্মাণ ‘গোলাম মামুন’।
‘বুকের মধ্যে আগুন’ সিরিজটি গেল বছরের আলোচিত সিরিজ। আরেকজন নির্মাতার সিরিজ থেকে স্পিন অফ নির্মাণ করা আপনার জন্য কতটুকু চ্যালেঞ্জের ছিল?
‘বুকের মধ্যে আগুন’ সিরিজটির তানিম রহমান অংশুর দারুণ নির্মাণ এবং ‘গোলাম মামুন’ চরিত্র তানিমের চমৎকার একটি সৃষ্টি। যেহেতু সিরিজটি অনেক পপুলার ছিল তাই হইচই আমাকে ‘গোলাম মামুন’ চরিত্রটি নিয়ে স্পিন অফ করার প্রস্তাব দেয়। প্রথমে আমি দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম যেহেতু এটা আরেকজন নির্মাতার সৃষ্টি। পরে হইচই বেশ কয়েকবার অনুরোধ করে, তারা আমাকে দিয়েই এটা করাতে চান। অনেকটা জোর করেই আমাকে রাজি করান। পরে আমি তানিমের সঙ্গে এটা নিয়ে কথা বলি। তানিম যখন সম্মতি দেয় তখনই কাজটি শুরু করি। ‘গোলাম মামুন’ কোনোভাবেই ‘বুকের মধ্যে আগুন’-এর সিক্যুয়েল বা সিজন-২ নয়। ওখান থেকে শুধুমাত্র একটি চরিত্র নিয়েছি। এটা একদমই নতুন একটি সিরিজ, নতুন একটি গল্প। যেমনটা ‘সিন্ডিকেট’ থেকে ‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন’ হয়েছিল। ‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিজেই একটি সিরিজ বা ফ্র্যাঞ্চাইজি।
‘গোলাম মামুন’-এর অভিনয়শিল্পীরা কী আপনার প্রত্যাশাু পূরণ করতে পেরেছে?
প্রত্যেকটা শিল্পীই আমার প্রত্যাশা পূরণ করেছে। কেউই অভিযোগের আঙ্গুল তোলার সুযোগ রাখেননি। বিশেষ করে অপূর্বর কথা বলব, সে তার দুইশত ভাগ এফোর্ট দিয়ে কাজটি করেছে। ট্রেনিং, রিহার্সেল এবং পুরো কাজটির পেছনে যে পরিমাণ সময় দিয়েছে, খেটেছে সেটা অভাবনীয়। সে লুক পরিবর্তন করেছে, তার প্রিয় চুল কেটে ফেলেছে। শুটিং করতে গিয়ে আহত হয়েছে। চিকিৎসক তাকে এক সপ্তাহ বেড রেস্টে থাকতে বলেছে কিন্তু তিন ঘণ্টা পরেই সে আউটডোরে দৌড়াদৌড়ির দৃশ্যে শুটিং করতে নেমে গেছে। কমিটমেন্টের এক ফোটা পরিমাণ ঘাটতি পাইনি। সাবিলা নূরের ক্ষেত্রেও তাই। প্রায় প্রতিদিনই তার কলটাইম থাকতো আর সে ঠিক সময়ে হাজির হয়ে যেত, চরিত্রটির জন্য পরিশ্রম করতো। তাছাড়া ইমতিয়াজ বর্ষণের দৃশ্যগুলোও বেশ পরিশ্রমের ছিল। রোজা রেখে সে চেজিং সিনগুলো করতো। পানির জন্য ছটফট করতো, ক্লান্ত হলেও সেটা বুঝতে দিত না। অপু আমার এই প্রজেক্টে কাজ করার জন্য ভারতের কাজের শিডিউল পিছিয়ে দিয়েছে। শার্লিন ফারজানা অনেকদিন পর কাজে ফিরেছে। রিহার্সেলে অসম্ভব সময় দিয়েছে, খেটেছে।
প্রথম দিনে দর্শকের সাড়া কেমন পাচ্ছেন?
একদিনে তো আর কোন কনটেন্টের ফলাফল নির্ধারন করা যায় না। তবে প্রথম দিন বিবেচনায় আমি দারুণ রেসপন্স পাচ্ছি। দর্শকের কাছে প্রত্যাশা, তারা যেন ‘গোলাম মামুন’ দেখেন এবং তাদের ভালো লাগা, মন্দ লাগা আমাদেরকে জানান। পাইরেসি থেকে বিরত থাকুন, হইচই সাবসক্রাইব করে সেখান থেকে দেখুন এবং অন্যদেরকেও পাইরেসি থেকে বিরত থাকতে বলুন। আর যারা ক্রিটিক আছেন কিংবা রিভিউ করেন তারা যেন স্পয়লার ফ্রি রিভিউ দেন।