ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা বললেন তার স্বামী
-
-
|

সঙ্গীতের দম্পতি গাজী আব্দুল হাকিম ও ফরিদা পারভীন । ছবি: আজাদ আবুল কালাম
গতকাল রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ‘লালন সম্রাজ্ঞী’খ্যাত সঙ্গীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এবং চিকিৎসক তাকে অতি দ্রুত আইসিইউতে ভর্তি করেন।
গতকাল আরেক প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীনের শারীরিক অবস্থার অবনতিতে এমনিতেই সঙ্গীতাঙ্গনে এক ধরনের উদ্বেগ কাজ করছে। তারমধ্যে ফারিদা পারভীনের অসুস্থতার খবরে রাত থেকেই শিল্পী সমাজ আরও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হয় শিল্পীর স্বামী একুশে পদকপ্রাপ্ত বংশীবাদক গাজী আব্দুল হাকিমের সঙ্গে। আজ বেলা ১২টার দিকে তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ফরিদা এখনো আইসিইউ’তেই আছেন। তবে চিকিৎসক বলেছেন তার শরীরের অবস্থা আগের চেয়ে একটু ভালো। কিন্তু আরও ভালো না হওয়া পর্যন্ত তাকে আইসিইউতেই রাখতে হবে। আপনারা সবাই তার জন্য দোয়া করবেন। আমাদের বিশ্বাস মহান আল্লাহ তায়ালার রহমত আর ফরিদার অসংখ্য ভক্ত শ্রোতার দোয়ায় সে ভালো হয়ে ফিরবে।’
শিল্পী ফরিদ পারভীন শ্বাসকষ্টজনিত রোগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। শিল্পীর অসুস্থতার খবর গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন তার স্বামী যন্ত্রসংগীত শিল্পী গাজী আবদুল হাকিম। তিনি জানান, ফরিদা পারভীনকে এখন হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তার ফুসফুসে পানি জমেছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি জটিলতা রয়েছে।

ফরিদা পারভীনের চিকিৎসক আশীষ কুমার চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে বলেছেন, তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। প্রয়োজনীয় সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তার ফুসফুস আক্রান্ত, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং থাইরয়েডের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত কিছু সমস্যা আছে। বর্তমানে বক্ষব্যাধি, কিডনি এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে আছেন তিনি।
ফরিদা পারভীন ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর ৩১, ১৯৫৪ নাটোর জেলার সিংড়া থানার শাঔঁল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম দেলোয়ার হোসেন মা রৌফা বেগম।
১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত গাইতে শুরু করেন ফরিদা পারভীন। ১৯৭৩ সালের দিকে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছে ফরিদা পারভীন লালনসংগীতে তালিম নেন।
ফরিদা পারভীন যে শুধু লালনের গান গেয়েছেন তা নয়। তিনি একাধারে গেয়েছেন আধুনিক এবং দেশাত্মবোধক গান। ফরিদা পারভীনের গাওয়া আধুনিক, দেশাত্মবোধক কিংবা লালন সাঁইয়ের গান সমান ভাবেই জনপ্রিয়।
তিনি ২০০৮ সালে ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচারাল পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে একুশে পদক এবং চলচ্চিত্রের গানে সেরা কণ্ঠদানকারী হিসাবে ১৯৯৩ সালে জাতীয় পদক পেয়েছেন। সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস ও অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কারও পেয়েছেন।