দুনিয়া মাতানো ‘বেলা চাও’-এর অনুপ্রেরণায় সায়েরা রেজার ‘আলো দাও’
-
-
|

সায়েরা রেজা । ছবি: আবুল কালাম আজাদ
২০২১-এর অন্যতম সাড়া জাগানো সিরিজ ‘মানি হেইস্ট’ মুক্তি পায় নেটফ্লিক্সে। এই সিরিজের গান ‘বেলা চাও’-এর উন্মাদনায় সে সময় পুরো দুনিয়ে মেতেছিলো। গানটির সুর এতোটাই হৃদয়গ্রাহী যে, যখনই এই গানটির সুরে কোন গান তৈরি হয় তা এমনই আলোড়ন তোলে। উনিশ শতকের ইতালিয়ান ভাষার মেইন গান থেকে নেটফ্লিক্সের জন্য গানটি নতুন করে তৈরি হয় হয়।
এবার সেই গানের অনুপ্রেরণায় তৈরি হলো বাংলা গান। জানা মতে, ‘আলো দাও’ নামের এই গানটিই ‘বেলা চাও’ থেকে করা প্রথম কোন মেইনস্ট্রিম বাংলা গান। আর সেই গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন দরাজ গলার জন্য প্রসিদ্ধ সুফি ও ফোক ঘরানার জনপ্রিয় শিল্পী সায়েরা রেজা।

পহেলা ফেব্রুয়ারি নিজের জন্মদিনে নব জাগরণের এই গানটি উপহার দিলেন তিনি। শিল্পীর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল সায়েরা রেজা মিউজিক লাউঞ্জে গানটির ভিডিও এবং স্পটিফাইসহ বিশ্বের সকল জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মে অবমুক্ত করা হয়েছে।
‘বেলা চাও’ একটি প্রতিবাদী ও বিপ্লবী গান। ঊনিশ শতকে ইতালির নারী শ্রমিকেরা তাদের স্বল্প মজুরী, দীর্ঘসময় ধরে কাজ করানোসহ নানা অসংগতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এ গানটি প্রথম গেয়েছিলেন। পরবর্তীতে এ গানটি ইতালিতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রধান সঙ্গীত হয়ে ওঠে। মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে, ১৯৪৩ এবং ১৯৪৫ সালে হিটলার-মুসোলিনির অত্যাচারের বিরুদ্ধে গানটি প্রায় একটি জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদায় উত্তীর্ণ হয়। কালক্রমে ‘বেলা চাও’ হয়ে ওঠে বিপ্লব ও প্রতিবাদের আন্তর্জাতিক ভাষা।

শিল্পীর দাবী, এ পর্যন্ত ৪৮ টি ভাষায় এ গানটি করা হয়ে থাকলেও সায়েরা রেজার কণ্ঠে বাংলায় এটিই প্রথম। আদিব কবিরের জেন-জি ধারার মিউজিকে, গানটির কথা লিখেছেন এ সময়ের জনপ্রিয় কবি ও লেখক কাজী জহিরুল ইসলাম। যেখানে মানুষের চেতনা এবং বিপ্লবপরবর্তী জনমনের আকাঙ্খা দারুণভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। ঐক্য, মানবতা, বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং আলোর পথে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় উচ্চারিত হয়েছে বাংলা লিরিকে। সায়েরা রেজার দরাজ কণ্ঠ গানটিতে নব জাগরণ ও জাতীয় সংহতির চেতনাকে পুরোপুরি ফুটিয়ে তুলেছে। লিরিকের সঙ্গে ভিডিও, মিউজিক এবং কণ্ঠের অপূর্ব সমন্বয়ে প্রত্যাশার নতুন বাংলাদেশের ওপর একটি অসাধারণ শিল্পকর্ম এ গানটি। ‘বেলা চাও’ এবং ‘আলো দাও’ দুটি লিরিকের ফিউশন গানটিকে এক ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। গানটি মানুষের চেতনাতে নাড়া দিবে বলে বিশ্বাস করেন কণ্ঠশিল্পী সায়েরা রেজা।