‘ইত্যাদি’ এবার মুক্তাঞ্চল তেঁতুলিয়ায়
ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র এবং মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় স্থানসমূহে গিয়ে ইত্যাদির অনুষ্ঠান ধারণের ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত আঁকা বাঁকা সীমান্ত পরিবেষ্টিত বাংলাদেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।
গত ১৭ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধের গৌরবদীপ্ত উপজেলা তেঁতুলিয়ার, তেঁতুলিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক মাঠে ধারণ করা হয় এবারের ইত্যাদি। কেননা মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের বাছাই, প্রশিক্ষণ, গোলাবারুদ সংরক্ষণ ও বিতরণ করা হয়েছিলো এই মাঠ থেকেই।
পঞ্চগড়ের ইতিহাস, ঐতিহ্যর পাশাপাশি এবার রয়েছে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলোর উপর তথ্য ভিত্তিক প্রতিবেদন। দেশের একমাত্র পাথরের জাদুঘর-রকস্ মিউজিয়াম এবং পঞ্চগড়ের সমতলে চা চাষের উপর রয়েছে দু’টি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন।
স্নায়ুবিক বিকাশগত সমস্যায় আক্রান্তদের উপর রয়েছে একটি মানবিক ও উদ্বুদ্ধকরণ প্রতিবেদন। রয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের নবম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী শিক্ষানুরাগী সুখী আক্তারের জীবন সংগ্রামের উপর একটি হৃদয়স্পর্ষী প্রতিবেদন। বিদেশি প্রতিবেদন পর্বে রয়েছে বার্সেলোনায় পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান মিউজিয়াম অব ইলুউশন এর উপর একটি সচিত্র প্রতিবেদন।
পঞ্চগড় জেলা ও তেঁতুলিয়ার উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় নিয়ে মোহাম্মদ ফিকউজ্জামানের কথায়, হানিফ সংকেতের সুর ও মেহেদীর সঙ্গীতায়োজনে একটি গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছেন পঞ্চগড় ও তেঁতুলিয়ার প্রায় দেড় শতাধিক নৃত্যশিল্পী। নাচের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কমল, তানজিনা রুমা, শুক্লা, কৃষ্ণা ও রিয়াদ, নৃত্য পরিচালনা করেছেন গাথী গাঙ্গুলী ও তিলোত্তমা দাস।
দর্শকপর্বের নিয়ম অনুযায়ী ধারণস্থান পঞ্চগড়কে ঘিরে করা প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে উপস্থিত দর্শকের মাঝখান থেকে ৪ জন দর্শক নির্বাচন করা হয়। ২য় পর্বে নির্বাচিত দর্শকরা ‘শীতে মানবিকতার নামে প্রচার কাঙাল মানুষ’দের নিয়ে রচিত একটি নাট্যাংশে অভিনয় করেন। যা ছিল বেশ উপভোগ্য।
রয়েছে জাদুকর ম্যাজিক রাজিকের ব্যতিক্রমধর্মী মনস্তাত্ত্বিক জাদু। রাজিক শীত বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জাদুটি পরিবেশন করেন। পেশায় প্রকৌশলী ও আইটি বিষয়ে গ্রাজুয়েট রাজিক দীর্ঘদিন বিদেশি টেলিভিশনে জাদু প্রদর্শন করলেও দেশের কোন টেলিভিশন পর্দায় এই প্রথম জাদু দেখাবেন রাজিক।
নিয়মিত পর্বসহ এবারও রয়েছে বিভিন্ন সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু সরস অথচ তীক্ষ্ম নাট্যাংশ। শিকড়ের সন্ধানে, প্রলোভন প্রশমন ও সুশিক্ষা, অতিরঞ্জিত উৎসাহ ও এর কুফল, রাশিফলের রহস্য, সাংঘাতিক সাংবাদিক, বিয়ে বৃত্তান্তসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ। বরাবরের মত এবারও ইত্যাদির শিল্প নির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন ইত্যাদির নিয়মিত শিল্প নির্দেশক মুকিমুল আনোয়ার মুকিম।
এবারের ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন-মাসুদ আলী খান, এসএম মহসীন, সোলায়মান খোকা, জিয়াউল হাসান কিসলু, কে এস ফিরোজ, আব্দুল কাদের, শবনম পারভীন, আফজাল শরীফ, সুভাশিষ ভৌমিক, জিল্লুর রহমান, কাজী আসাদ, বিলু বড়–য়া, আমিন আজাদ, নজরুল ইসলাম, নিপু, তারিক স্বপন, জামিল হোসেন, নিসা, রেহান অবিদ, আনোয়ার শাহী, জাহিদ চৌধুরী, সজল, সাজ্জাদ সাজু, সঞ্জয় রাজ, ইমতিয়াজ ফাহিম, হাশিম মাসুদ, মতিউর রহমান, রিমু, ইমিলা, মনজুর আলম, তন্নি গ্লোরিয়া, রিনা, শারমিন বৃষ্টি, ইরা, কাইফসহ আরো অনেকে। পরিচালকের সহকারী হিসাবে ছিলেন যথারীতি রানা ও মামুন।
‘ইত্যাদি’র এই পঞ্চগড়ের পর্বটি একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচারিত হবে ৩১ জানুয়ারি রাত ৮ টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদির রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। ইত্যাদি স্পন্সর করেছে যথারীতি কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড।