সুশান্তের আত্মহত্যায় স্তব্ধ বলিউড
সবই তো ঠিক ছিলো তাহলে কী নিয়ে অভিমান ছিলো তার? কেনো তাকে বেছে নিতে হলো আত্মহত্যার পথ? বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের চলে যাওয়া কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তার সহকর্মী ও ভক্তরা। কেউই বিশ্বাস করতে পারছেন না তিনি আর এই পৃথিবীতে নেই।
সুশান্তের প্রয়াণে শুধু বলিউডে নয়, বর্জ্রাঘাত হল সারা বিশ্বে। সকলের মুখে শুধু একটাই কথা যে, বলিউডের এই অভিনেতার চলে যাওয়া কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তারা।
অভিনেতা অক্ষয় কুমার শোক প্রকাশ করে লিখেছেন- “এই খবরটি আমাকে একদম বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে। আমার মনে আছে, সুশান্তের অভিনীত ‘ছিছোড়ে’ দেখার পর এর প্রযোজক সাজিদকে আমি বলেছিলাম, যদি আমি এই ছবির একটি অংশ হতে পারতাম। সুশান্ত সত্যিই একজন প্রতিভাবান অভিনেতা ছিলেন।”
ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন লিখেছেন- “এটি সত্যি হৃদয়বিদারক।”
সংগীতশিল্পী নেহা কাক্কার ফেসবুকে লিখেছেন- “ইস! জীবনে যদি কম্পিউটারের মতো একটি আনডু অপশন থাকতো। তোমাকে মিস করবো সুশান্ত।”
ওপার বাঙলার অভিনেত্রী সুদীপা সেন জানান- “গতকালই বাবার সঙ্গে সুশান্তকে নিয়ে আলোচনা করছিলাম। বাবা বলেছিলেন, ‘ছেলেটা যেমন দারুণ অভিনয় করে তেমনি ভালো নাচেও। কি মিষ্টি। ছেলেটা আরও ভালো কাজ করবে দেখিস।”
বলিউডের আরেক সংগীতশিল্পী লিখেছেন- “কী লিখবো বুঝতে পারছি না। লেখার সময় হাতটি কাঁপছিলো শুধু। যে মানুষটির জীবন সম্পর্কে অবিশ্বাস্যরকম ইতিবাচক অন্তর্দৃষ্টি ছিল তার চলে যাওয়া মেনে নেওয়া সত্যিই কষ্টের। তার প্রতিবেশী থেকে তার চলচ্চিত্রের জন্য গান করা...আমি তার জার্নিটার প্রত্যক্ষ করেছি যা কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা এবং নিবিড় আবেগ দ্বারা সংজ্ঞায়িত হয়েছিল!”
টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা শোক প্রকাশ করে লিখেছেন- “তুমি বলেছিলে আমরা একদিন একসঙ্গে টেনিস খেলবো... তুমি যেখানেই গিয়েছো সকলের মাঝে হাসি ছড়িয়ে দিয়েছো। কিন্তু আমরা জানতেও পারলাম না তুমি কি নিয়ে কষ্টে ছিলে। এই পৃথিবী তোমাকে মিস করবে।”
এছাড়াও শোক প্রকাশ করেছেন- সংগীতশিল্পী আদনান সামি, তুলসি কুমার, অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্দেজ, দিয়া মির্জা, নিধি আগারওয়াল, জেরিন খান, দক্ষিণী তারকা জুনিয়র এনটিআর, কৃতি সুরেশসহ অনেকে।
ভারতীয় চ্যানেল স্টারপ্লাসে প্রচারিত ‘কিস দেশ মে হ্যায় মেরা দিল’ সিরিয়ালের মধ্য দিয়ে ২০০৮ সালে অভিনয় দুনিয়ায় পা রেখেছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত। এরপর ২০০৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত জি টিভিতে প্রচারিত ‘পবিত্র রিশতা’তে মানব চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকমহলে বেশ সাড়া ফেলেছিলেন প্রয়াত এই তারকা।
টেলিভিশনে সফলতা অর্জনের পর ২০১৩ সালে ‘কাই পো চে’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বড়পর্দায় অভিষেক হয় সুশান্ত সিং রাজপুতের। যার জন্য সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড ঘরে তুলেছিলেন সুশান্ত।
একই বছর মুক্তি পায় তার অভিনীত ‘শুদ্ধ দেশি রোমান্স’। এরপর ২০১৫ সালে ডিটেকটিভ থ্রিলার ‘বোমকেশ বক্সি’তে কাজ করেন তিনি। ৩৪ বছর বয়সী এই তারকাকে দেখা গেছে আমির খানের ‘পিকে’তে।
তবে সুশান্ত তার ক্যারিয়ারে সফলতা পেয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এমএস ধোনির জীবনী নিয়ে নির্মিত ‘এমএম ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’তে কাজ করে। এটি ছিলো তার টার্নিং পয়েন্ট। এর সুবাদে ফিল্মফেয়ারে সেরা অভিনেতার মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও তার অভিনীত ‘কেদারনাথ’ বাণিজ্যিকভাবে বেশ সফলতা অর্জন করেছিলো।
গত বছর মুক্তি পায় সুশান্ত সিং রাজপুত অভিনীত ‘ছিছোড়ে’। আর এটিই ছিলো বলিউডের এই অভিনেতার শেষ ছবি।