শুটিংয়ের সময় যেমন ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ
জাদুও দেখাতে পারতেন হুমায়ূন আহমেদ। তবে সেই অর্থে তাঁকে জাদুকর বলা না গেলেও; বাংলা নাটক আর সিনেমায় হুমায়ূন আহমেদ জাদু দেখিয়েছেন কথার, শব্দের আর নির্মাণের। সেই জাদুতে মুন্ধ হয়েছে গোটা এক প্রজন্ম।
‘শঙ্খনীল কারাগার’ থেকে ‘ঘেটু পুত্র কমলা’ বাংলা সিনেমার আকাশে হুমায়ূন আহমেদ যেনো ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’। তবে শ্রাবণের সেইসব মেঘগুলো একে একে জড়ো হয়ে বৃষ্টি ঝরেছে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই। সেই হিসাবে হুমায়ূন আহমেদ বিহীন শহরে আজ অষ্টম শ্রাবণ।
এমন দিনে ১৬ বছরের বেশি সময় ধরে হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে কাজ করা অভিনেতা ডা. এজাজ স্মরণ করেছেন এই কিংবদন্তিকে।
বার্তা২৪.কম হুমায়ূন আহমেদের ৫টি সিনেমাসহ বহু নাটকে কাজ করা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেতা ডা. এজাজের কাছে জানতে চেয়েছে শুটিংয়ের সময় কেমন ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ?
আমি অনেক দিন দেখাশোনা করেছি হুমায়ূন আহমেদের প্রোডাকশনের কাজ। শুটিং সেটে হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন সাদামাটা। পরনে থাকত সাধারণ পোশাক। হুমায়ূন আহমেদের জন্য শুটিং সেটে থাকত না আলাদা কোন চেয়ার। তবে একটি নিয়ম ছিল তিনি যে চেয়ারে যেদিন বসতেন সেই চেয়ারে অন্য কেউ বসতেন না।
হুমায়ূন আহমেদের শুটিং সেটে কাজ ছাড়া অন্য কিছু ভাবার বা মোবাইলে কথা বলার চিন্তা করারও সাহস পেতাম না আমরা। উনি যেমন কাজের প্রতি মনযোগী থাকতেন সেটের সবাই তেমন মনযোগী থাকতে বাধ্য হতো। স্যার ভুল করলে বকতেন কিন্তু সেই বকায় অসম্ভব এক মায়া ছিল।
স্যারের কাছে সবাই সমান ছিল। স্যার আমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ডাক্তার শুটিং সেটে আমি যা খাব আমার সেটের প্রোডাকশন বয়ও তাই খাবে। আমার জন্য বিশেষ কোন খাবার হবে না। সবার জন্য একই আয়োজন যেন থাকে। স্যার যে খাবার খেয়েছেন সবাই তা-ই খাচ্ছে কিনা তা তদারকি করতেন।
রমজান মাসজুড়ে শুটিংয়ের কাজ চলত ঈদের জন্য। সেই সময় ইফতারের আগে নিয়ম ছিল সবাই গোসল করে অজু করে ইফতার করার।রমজান মাসে স্যার মজা করে বলতেন তোমাদের আমার ভয়ে হলেও নামাজ পড়তে হবে।