শেখ রাসেল: আবেগ, শূন্যতা ও ভালোবাসায় জড়ানো নাম!



মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
শেখ রাসেল

শেখ রাসেল

  • Font increase
  • Font Decrease

বেঁচে থাকলে ৫৭ পেরিয়ে ৫৮ বছরে পা দিতেন তিনি! পুরোদস্তর মধ্য বয়স্ক এক পুরুষের দীপ্তিতে উদ্ভাসিত হতেন। আচ্ছা, দেখতে কেমন হতেন তিনি? সেই গোঁফওয়ালা ভরাট কণ্ঠের রাশভারি চেহারা নাকি আরেকটু ভিন্ন কোন অবয়ব! তা যাই হোক, আদল দেখলে নিশ্চিত বোঝা যেত, এ আর কেউ নন, জাতির পিতারই ছায়া!

হয়তো-রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব কাঁধে থাকত, কারণ, দেশ পরিচালনা ও রাজনীতির সৎ রক্ত যে তার শরীরে। আবার পিতার প্রিয় বার্ট্রান্ড রাসেলের মতো পৃথিবী বিখ্যাত দার্শনিক ও বিজ্ঞানীও হতেন হয়তো। কিংবা নিজের ইচ্ছা ছিল আর্মি অফিসার হওয়ার, তাহলে জাঁদরেল সেনাবাহিনীর জেনারেলেই হতেন সুনিশ্চিত! 

স্বপ্নের ভাষায় বলছি, বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ ‍পুত্র শেখ রাসেলের কথা। ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর হেমন্তের জ্যোৎস্না-প্লাবিত রাতে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্ম যে শেখ রাসেলের, অনেক অনেক সম্ভাবনার স্বপ্নিল দোলা দিয়ে তিনি চলে গেছেন জীবনের শুরুর দিনগুলোতেই। যদি বেঁচে থাকতেন, হতেন পিতা বঙ্গবন্ধুর চেয়েও বয়সী। বয়স হত তার ৫৭, বঙ্গবন্ধুর চেয়েও কিছুটা বেশি। কারণ ৫৫ বছরেই প্রাণ দিতে হয়েছিল পিতা ও  জাতির স্থপতিকে।

বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে শেখ রাসেল

বাঙালির কাছে শেখ রাসেলও বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের মতোই অন্তহীন বেদনার এক মহাকাব্য, চেতনার গভীরে চিরস্থায়ী এক তাজা ক্ষতের নাম, বুকভারি-করা এক দীর্ঘশ্বাসের নাম। যখনই ১৫ আগস্টের নির্মম, নিষ্ঠুর, বর্বর হত্যাকাণ্ডের সেই কালোরাতের কথা মনে হয়, নিষ্পাপ শিশু রাসেলের মুখটিই প্রথমে ভেসে আসে রক্তরঞ্জিত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সঙ্গে সঙ্গে।

৪৫ বছর পরেও মনে হয়, কেন রাসেলের এমন হলো না যে, তিনিও আশ্রয়ের পরম নিরাপত্তায় বড় বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার হাত ধরে জার্মানি পাড়ি দিতে পারতেন; তা হলে তাকে আর হারাতে হত না সম্ভাবনাময় এক জীবন। অথবা ‘আমি মায়ের কাছে যাব’ শুনে নিষ্ঠুর হত্যাকারীদের যদি একটু মায়া হত; তাহলে বেঁচে যেত মায়াবি কিশোর, ক্ষত-বিক্ষত-রক্তাক্ত হতো না রাসেলের মতো এক দুরন্ত কিশোরের মুখচ্ছবি। আজও ভাবতে কষ্ট হয়- তুলতুলে নরম সুন্দর মুখখানা দেখে কখনও কারো মায়া না হয়ে পারে....! পারে না।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির সামনে শেখ রাসেল

পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে রাসেল সবার ছোট। সবার চোখের মনি, ঘর আলো করা এক প্রদীপ। হাসু, জামাল, কামাল ও রেহানাসহ সবার জন্য এক আনন্দের বহমান নদী রাসেল। বঙ্গবন্ধু ছিলেন পৃথিবীবিখ্যাত দার্শনিক-চিন্তাবিদ-শান্তি আন্দোলনের সক্রিয় সংগঠক রার্ট্রান্ড রাসেলের ভক্ত। রাসেলের লেখা নিয়ে বেগম মুজিবের সঙ্গে আলোচনাও করতেন। বঙ্গবন্ধুর কাছে শুনে শুনে বেগম মুজিবও হয়ে উঠেছিলেন রাসেলভক্ত। আর সে কারণেই হয়তো কনিষ্ঠ সন্তানের নাম রেখেছিলেন রাসেল। মনে হয়তো প্রচ্ছন্ন আশা ছিল, তাদের ছোট ছেলেটিও একদিন বার্ট্রান্ড রাসেলের মতো যশস্বী-মনস্বী হবে।

দুরন্ত রাসেলের শৈশবে সেই অমিত সম্ভাবনা দেখাও গিয়েছিল। শেখ রাসেলের ৫৭তম জন্মদিনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক ওয়েবিনারে গৃহ শিক্ষিকা গীতালি দাশগুপ্তা তার প্রতিভার কথা উল্লেখ করে জানান, 'মেধা ও মননের অপূর্ব সমাহার ছিল শিশু রাসেলের কচি মনে। তার শিশু মন ছিল মানবিকতায় ভরা। তার মনে হাজারো প্রশ্ন থাকত, সব প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইত।'

শিশু রাসেলের বেশিরভাগ সময় কেটেছে বাবাকে ছাড়াই। কারণ তার বাবা রাজনৈতিক বন্দি হয়ে কারাগারে কাটিয়েছেন জীবনের বেশিরভাগ সময়। তাই তো মা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে আব্বা বলে সম্বোধন করত রাসেল। এসব নিয়ে কারাবন্দী বঙ্গবন্ধুর মনেও চাপা কষ্ট অনুভুত হত।

শেখ কামাল. বঙ্গবন্ধু, বেগম মুজিব, শেখ জামালের সাথে শেখ রাসেল

‘কারাগারের রোজনামচা’য় শেখ রাসেলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন ‘৮ ফেব্রুয়ারি ২ বছরের ছেলেটা এসে বলে, ‘আব্বা বালি চলো’। কী উত্তর ওকে আমি দিব। ওকে ভোলাতে চেষ্টা করলাম, ও তো বোঝে না আমি কারাবন্দি। ওকে বললাম, ‘তোমার মার বাড়ি তুমি যাও। আমি আমার বাড়ি থাকি। আবার আমাকে দেখতে এসো। ’ ও কি বুঝতে চায়! কি করে নিয়ে যাবে এই ছোট্ট ছেলেটা, ওর দুর্বল হাত দিয়ে মুক্ত করে এই পাষাণ প্রাচীর থেকে! দুঃখ আমার লেগেছে। শত হলেও আমি তো মানুষ আর ওর জন্মদাতা। অন্য ছেলে-মেয়েরা বুঝতে শিখেছে। কিন্তু রাসেল এখনো বুঝতে শিখেনি। তাই মাঝে মাঝে আমাকে নিয়ে যেতে চায় বাড়িতে।’

‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ বইয়ের ২১ পৃষ্ঠায় কারাগারে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার বিষয়ে শেখ হাসিনা লিখেছেন, ‘আব্বার সঙ্গে প্রতি ১৫ দিন পর আমরা দেখা করতে যেতাম। রাসেলকে নিয়ে গেলে ও আর আসতে চাইত না। খুবই কান্নাকাটি করত। ওকে বোঝানো হয়েছিল যে, আব্বার বাসা জেলখানা আর আমরা আব্বার বাসায় বেড়াতে এসেছি। আমরা বাসায় ফেরত যাব। বেশ কষ্ট করেই ওকে বাসায় ফিরিয়ে আনা হতো। আর আব্বার মনের অবস্থা কী হতো, তা আমরা বুঝতে পারতাম। বাসায় আব্বার জন্য কান্নাকাটি করলে মা ওকে বোঝাতেন এবং মাকে আব্বা বলে ডাকতে শেখাতেন। মাকেই আব্বা বলে ডাকত।’

শেখ হাসিনা, বেগম মুজিবের  কোলে শেখ রাসেল ও শেখ রেহেনা

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মাত্র ১১ বছরের কচি বয়সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ঘাতকদের হাতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় শেখ রাসেল। মা, বাবা, দুই ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, চাচার লাশের পাশ দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে সবার পর সবশেষে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয় শেখ রাসেলকে। তার আগে সে বারবার বলেছিল, 'মায়ের কাছে যাব'। তৃষ্ণার্ত হয়ে পানি খেতেও চেয়েছিল। মায়ের কাছে নেওয়ার নাম করেই হত্যা করা হয় শিশু রাসেলকে।পৃথিবীতে যুগে যুগে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে কিন্তু শিশু রাসেলের মতো এমন নির্মম, নিষ্ঠুর এবং পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড কোথাও ঘটেনি।

রাসেলকে নিয়ে ‘কারাগারের রোজনামচা’র ২৭ শে মে এবং ২৮ শে মে ১৯৬৭ সালের স্মৃতিচারণায় বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘রাসেল আমাকে পড়ে শোনাল, আড়াই বৎসরের ছেলে আমাকে বলছে ৬ দফা মানতে হবে- সংগ্রাম, সংগ্রাম- চলবে চলবে-পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ ভাঙা ভাঙা করে বলে কি মিষ্টি শোনায়! জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ ও শিখল কোথা থেকে। রেণু বলল, বাসায় সভা হয়েছে তখন কর্মীরা বলেছিল, তাই শিখেছে’।

শেখ রাসেল

শেখ রাসেলের ছিল স্বল্পায়ু জীবন। এতটুকু জীবনেই প্রাণোচ্ছল শিশু রাসেল মানুষকে ভালোবাসতে শিখেছিল, বঙ্গবন্ধুর আনন্দের সঙ্গী ছিল আর বাঙালির চিরন্তন পারিবারিক সম্পর্কের বন্ধনে তার অনাবিল উচ্ছ্বাস ছিল অফুরন্ত। ছোট্ট শিশুটি যে প্রচণ্ড নিষ্ঠুরতার নির্মমতম শিকার হয়েছিল, তা এখনো বিশ্ব মানবতাকে বিচলিত করে।

জন্মদিনে শেখ রাসেলকে স্মরণ করি গভীর আবেগ, শূন্যতা ও ভালোবাসায়।অঙ্গীকার করি রাসেলের মতো প্রতিটি শিশুর কল্যাণের জন্য।  আর প্রতিজ্ঞবদ্ধ হয়ে উচ্চারণ করি, বাংলাদেশ হোক সকল শিশুর জন্য নিরাপদ আবাসস্থল।

   

আন্দিজ পর্বতমালার আলু বাঁচানোর চেষ্টা গবেষকদের



ফিচার ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জনপ্রিয় খাবারগুলোর মধ্যে আলু অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর আন্দিজ পর্বতমালা আলু উৎপাদন বেশ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। পরিবর্তিত আবহাওয়ায় আলু চাষে ঝুঁকি মোকাবিলা করে কিভাবে এ জাতের আলু চাষ করা যায় তা নিয়ে গবেষণা করছে আলু বীজ গবেষকরা।

স্থানীয় স্টার্চ জাতীয় খাদ্য সমূহের প্রধান উৎস হলো এ পর্বতমালার আলু। পেরুর একটি অলাভজনক সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন অব আন্দাজের নির্বাহী সহকারী ট্যামি স্টেনার বলেছেন, আন্দিজ পর্বত মালার আলু অনেকটা গোলাপের মতো। দেখতেও অনেক সুন্দর।

তিনি বলেন, মায়েরা যখন ছেলের জন্য মেয়ে দেখতে যায় তখন তাকে এ আলুর খোসা ছাড়িয়ে দিতে বলেন। এ সময় খুব যত্নসহকারে আলুর খোসা ছাড়াতে হয় যাতে তার আকৃতি নষ্ট না হয়। 

সমুদ্রপৃষ্ঠের ৩২০০ মিটার থেকে৫০০০ মিটার উপরে আন্দিজ পর্বতমালায় ১৩০০ টিরও বেশি জাতের আলু জন্মায়। এগুলো ফ্যাকাশে নয় যা ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুপারমার্কেট গুলোতে পাওয়া যায়। এ পর্বতের আলু সাধারণত বেগুনি, গোলাপী, লাল এবং কালো, সেইসাথে সাদা এবং হলুদ হয়ে থাকে।

এ আলু প্রক্রিয়াজাত করতে বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। কিছু আছে ফ্রিজে শুকিয়ে নিতে হয়। কিছু যা শুধুমাত্র পুরো রান্না করা যায়, যেগুলি রান্নার জন্য খোসা ছাড়িয়ে কাটা যায়।

স্বতন্ত্র আলুর জাতগুলোর প্রায়শই বর্ণনামূলক নাম থাকে যা তাদের আকৃতি বর্ণনা করে। জাতগুলোর মধ্যে অন্যতম হল পুমার পাঞ্জা, লামার নাক।

পেরুর শহর পিসাকের কাছে ছয়টি আদিবাসী সম্প্রদায় ২০০২ সালে আলু পার্ক গড়ে তোলে। এই অঞ্চলে জন্মানো আলুর জিনগত বৈচিত্র্য এবং সেইসাথে তাদের চাষ করা লোকেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

অন্যান্য স্থানীয় আন্দিয়ান ফসল ভুট্টা থেকে কুইনোয়াও এখানে জন্মায়। পার্কে ব্যবহৃত কৃষি পদ্ধতিগুলো হাজার বছর ধরে বিকশিত হয়েছে। কৃষকরা প্রায় ১০,০০০ হেক্টর (৩৮ বর্গ মাইল) জমিতে সারা বছরই একাধিকবার ফসল উৎপন্ন হয়।

অনেক জাতের আলুর মধ্যে যেগুলো হারিয়ে যেতে পারে এবং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খায়িতে নিতে পারবে স্থানীয় কৃষক ও গবেষকরা সেগুলো সংরক্ষণ করেছে।

স্টেনার বলেন, আলুগুলো প্রায় ৮ হাজার বছর আগে থেকে আন্দিজ পর্বতমালায় জন্মানো শুরু করে। তাই আলু কীভাবে চাষ করা হয় সে সম্পর্কে অনেক ইতিহাস ও পরীক্ষালব্ধ জ্ঞান রয়েছে। আলু পার্কে যে কাজটি চলছে তা বিশ্বজুড়ে মূল্যবান খাদ্য গাছপালা সংরক্ষণ এবং পরিবর্তিত জলবায়ুতে খাদ্য অভিযোজনের উপায় খুঁজে বের করার একটি বড় প্রচেষ্টার অংশ।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বীজ সংরক্ষক সংস্থাগুলো গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। স্বালবার্ড গ্লোবাল সিড ভল্ট ২০১৭ সালে পটেটো পার্কের প্রতিনিধিসহ সারা বিশ্ব থেকে আলু বীজে সংস্করণ করে।

এই ধরনের সংস্থাগুলো মূল্যবান ফসল হারানোর বিরুদ্ধে একটি অত্যাবশ্যক রক্ষাকবচ হতে পারে। এগুলো বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কের একটি অংশে পরিণত হলে কৃষকর খাদ্যের জিনগত বৈচিত্র্য রক্ষা করতে পারবে।

ছোট চাষীরা হাজার হাজার বিরল এবং অস্বাভাবিক ফসলের জাতগুলো বাগানে, খামারে চাষ করে বীজ সংরক্ষণের মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখে। প্রকৃতপক্ষে, গবেষণায় দেখা গেছে যে বৈশ্বিক বীজ বৈচিত্র্যের সিংহভাগই জিন ব্যাঙ্কের পরিবর্তে বিশ্বের ২.৫ বিলিয়ন ক্ষুদ্র ধারকদের হাতে রয়েছে।

পূর্বে কৃষিতে একটি নির্দিষ্ট ফসলের বৈচিত্র্যময় পরিসর বৃদ্ধি করা হত। যখন বিজ্ঞানীরা ভুট্টা এবং গমের মতো প্রধান ফসলের "উন্নত" জাতের প্রজনন শুরু করে তখন অনেক কৃষক এগুলোকে গ্রহণ করেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া টেকের প্রযুক্তির ইতিহাসের অধ্যাপক হেলেন অ্যান কারি বলেছেন, "কৃষিতে গভীর রূপান্তর ঘটেছে, অনেক ফসল স্থানান্তর হয়েছে। এতে নতুন ফসল চাষ হচ্ছে।

বীজ ব্যাংক যা জিনব্যাঙ্ক নামেও পরিচিত। তারা কয়েক দশক ধরে বীজ এবং অন্যান্য উদ্ভিদ সামগ্রী সঞ্চয়ে রাখে। কিন্তু যেখানে জমিতে চাষের মাধ্যমে ফসল সংরক্ষণ করতে হয় সেটা করতে পারছে না তারা। প্রকৃতপক্ষে, বীজ সংরক্ষণ করতে এবং ভবিষ্যতের জন্য বিভিন্ন ধরণের ফসলের স্টুয়ার্ড করার জন্য একজন কৃষক না হয়েও তা সংরক্ষন করা যায়।

বীজ সংরক্ষণের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি অলাভজনক সংস্থা সিড সেভারস এক্সচেঞ্জ আইওয়া, তাদের জিন ব্যাঙ্কে বীজের দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণ এবং কৃষকদের সাথে তাদের বীজ ভাগ করে নিয়ে জমিতে চাষের মাধ্যমে সংরক্ষণ করছে।

আলু পার্কে কৃষকদের গবেষণায় দেখা গেছে যে, বিভিন্ন আলুর জাতগুলোর জন্য গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে তারা পাহাড়ের অনেক উচ্চতায় চলে যাচ্ছে।

স্টেনার বলেছেন, "তারা ইতিমধ্যেই অনেক উঁচুতে রয়েছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আরো উঁচুতে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ সম্প্রদায়ের একজন প্রবীণ কৃষক বলেছেন: "আপনি আকাশে আলু চাষ করতে পারবেন না। তাই, কৃষকরা পরিবর্তে কম উচ্চতায় পুনরায় আলু চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

;

৭৪ বছর ছুটিহীন কর্মজীবন!



ফিচার ডেস্ক বার্তা২৪.কম
মেলবা মেবানের বিদায়ী অনুষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত

মেলবা মেবানের বিদায়ী অনুষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ছুটি ছাড়া আপনি কতদিন চাকরি করতে পারবেন? এমন প্রশ্নের উত্তর একেক জনের কাছে একেক রকম হলেও, কেউই দীর্ঘ সময় ছুটিহীন চাকরি করবেন এমন উত্তর আশা করা যায় না। কিন্তু, অসুস্থ হলে যে সবারই ছুটি প্রয়োজন হবে সেটা নিশ্চিত। তবে এই কথাটি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের মেলবা মেবানের (৯০) জন্য প্রযোজ্য নয়। কারণ, এই নারী তাঁর ৭৪ বছরের কর্মজীবনে কখনও ছুটি কাটাননি আরও অবাক করার বিষয় হচ্ছে অসুস্থ হলেও সে হাসিমুখে তাঁর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে গেছেন। মার্কিন গনমাধ্যম ফক্স নিউজের বরাত দিয়ে এমন খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম ডেইলি মেইল।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, মেলবা মেবানে ১৯৪৯ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে মেয়ার এন্ড স্মিথ ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে ‘লিফট গার্ল’ হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৬ সালে এটি অধিগ্রহণ করে নেয় ডিলার্ড। মেয়ার পরবর্তী বছরগুলোতে পুরুষদের পোশাক এবং কসমেটোলজিতে কাজ শুরু করেন ধরে তিনি এখানেই কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘ ৭৪ বছর কর্মজীবনে তিনি কখনও ছুটি নেননি এমনকি অসুস্থ হলেও না। 

মেলবার সম্পর্কে টাইলারের ডিলার্ডের স্টোর ম্যানেজার জেমস সায়েঞ্জ ফক্স নিউজকে বলেন, তিনি শুধু একজন বিক্রয়কর্মী নন। তিনি একজন মা। তিনি গাইড করেন। তিনি জীবন সম্পর্কে উপদেশ দেন। তিনি বহু গুণের অধিকারী। 

তিনি আরও জানান, মেলবা তাঁর মুখে হাসি নিয়ে প্রতিদিন কাজ শুরু করতেন।

তিনি বিক্রয়ে পারদর্শী ছিলেন এবং এমন কোন গ্রাহক বা সহকর্মী ছিল না যে তাকে ভালোবাসে না। তার পরে যারা এখানে কাজ শুরু করেছে তাদের সবাইকে খুব সুন্দরভাবে প্রশিক্ষন দিয়েছেন এবং শিখিয়েছেন। 

মেবানে জানান, কর্মস্থলে কখনো বিরক্ত হতেন না তিনি। সেখানকার সবাইকে ভালোবাসতেন এবং প্রতিদিন কাজে যেতে পছন্দ করতেন। অবসর নেওয়ার পর এখন বিশ্রাম, ভ্রমণ এবং ভালো খাবার খেয়ে দিনযাপন করতে চান তিনি। 

মেবানের কয়েক দশকের কাজ এবং নিষ্ঠার প্রতি সম্মান জানাতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে তাঁকে স্টোরের দীর্ঘতম কর্মক্ষম কর্মচারী হওয়ার জন্য ‘সার্টিফিকেট অব এক্সিলেন্স’ পুরস্কার প্রদান করা হয়। 

;

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়াল 'ব্ল্যাকি', সম্পদ ৩ কোটি ডলার



ফিচার ডেস্ক বার্তা২৪.কম
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়াল 'ব্ল্যাকি'। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়াল 'ব্ল্যাকি'। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাধারণত যখন কেউ মারা যায় তখন তাঁর সম্পদের অংশ পরিবারের সদস্যদের কাছে রেখে যান। কেউ কেউ আবার বিভিন্ন দাতব্য সংস্থায়ও দান করে থাকেন। তবে, যুক্তরাজ্যের বাকিংহ্যামশায়ারের বাসিন্দা বেন রিয়া যা করেছেন তা বিরল! স্রেফ ভালোবাসা থেকেই তাঁর সম্পদের বড় একটি অংশ প্রিয় পোষা বিড়াল ‘ব্ল্যাকির’ জন্য দিয়ে যান। আর এতেই বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়াল হয়ে উঠে ‘ব্ল্যাকি’। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ওয়েবসাইট থেকে এমন তথ্য পাওয়া যায়।

রেকর্ড সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ১৯৮৮ সালে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়াল হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ব্ল্যাকির নাম উঠেছে। সেই নাম ৩৫ বছর ধরে এখনো বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়াল হিসেবে গিনেসের পাতায় বিড়ালটির এই স্বীকৃতি অক্ষুণ্ন রয়েছে। 

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সবচেয়ে ধনী বিড়ালটির সম্পদের পরিমাণ আসলে কত?

গিনেস ওয়ার্ল্ড বলছে, যখন ব্ল্যাকি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়ালের স্বীকৃতি পেয়েছিল, তখন সম্পদের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ডলার। বর্তমানে যা ৩ কোটি ২০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

গিনেস ওয়ার্ল্ডের তথ্য মতে, ‘ব্ল্যাকির’ মালিক বেন রিয়া প্রাচীন জিনিসপত্র ক্রয় এবং বিক্রি করে কোটি ডলারের মালিক হন। ১৯৮৮ সালে এই ধনকুব মারা গেলে সম্পদের বিশাল একটি অংশ বিড়ালের নামে দিয়ে যান। তবে বেনের পরিবার ছিল কিন্তু সে একাই বসবাস করতো।  

তার বেশিরভাগ অর্থই তিনটি দাতব্য সংস্থার মধ্যে উইল করে যান। যেই সংস্থাগুলো পোষা প্রাণীদের দেখভাল ও সুরক্ষা দিয়ে থাকে। উইলে তিনি উল্লেখ করেন, যতদিন ব্ল্যাকি বেঁচে থাকবে ততদিন প্রাণীটির দেখভাল করতে হবে। 

তবে বেনের প্রিয় ব্ল্যাকি কত দিন বেঁচে ছিল কিংবা বেনের মৃত্যুর পর ব্ল্যাকির ভাগ্যে কী জুটেছিল, সেই বিষয়ে গিনেসের ওয়েবসাইটে কিছু না জানালেও এই রেকর্ড এখন পর্যন্ত কেউ ভাঙতে পারেনি সেটি নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি ।

;

১৬০০ মিটার উচ্চতায় কম সময়ে দড়ি পার হয়ে বিশ্ব রেকর্ড!



ফিচার ডেস্ক বার্তা২৪.কম
শি হ্যালিন। ছবি: সংগৃহীত

শি হ্যালিন। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬০০ মিটার (১.৬ কিলোমিটার) উচ্চতায় চীনের শি হ্যালিন (৩১) নামে এক ব্যক্তি খুব দ্রুত সময়ে ১০০ মিটারের স্ল্যাকলাইন (দড়ির উপর দিয়ে হাঁটা) পার হয়ে বিশ্বরেকর্ড করেছেন। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ওয়েবসাইট থেকে এমন তথ্য পাওয়া যায়।

রেকর্ড সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানটি জানায়, চীনা নাগরিক শি হ্যালিন সবচেয়ে কম সময়ে মাত্র ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে ১০০ মিটার লম্বা দড়ি পার হয়ে বিশ্ব রেকর্ড করেছেন। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬০০ মিটার উঁচুতে ছিল। 

শি হ্যালিন জানান, আমি পিংজিয়াংয়ের মাউন্ট উগং-এর গুয়ানিইন্ডাং ক্যাম্পে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬০০ মিটার উপরে স্টান্ট করেছি। সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে এই রেকর্ডটি করতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ব হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, এটি বিশাল এক চ্যালেঞ্জ ছিল। বিশেষ করে এতো উচ্চতায় বাতাসের চাপ বেড়ে যায় এবং তাপমাত্রা হ্রাস পেতে থাকে। এর মধ্যে আবার দিনটি ছিল খুব কুয়াশাচ্ছন্ন। ফলে ভালো করে দেখতেও সমস্যা হচ্ছিল। 

এই রেকর্ডের পর সে আরও বেশি মনোযোগ দিয়ে এরকম প্রতিযোগিতায় সাফল্য অর্জন করতে আগ্রহী বলেও জানান তিনি। 

তবে, এর আগেও তিনি এশিয়াতে বেশ কয়েকটি স্ল্যাকলাইন রেকর্ড জিতেছেন। ২০১৬ সালে তিনি ২ মিনিটে এই রেকর্ডটি করেছিলেন কিন্তু, সেটি পরের বছরই ফ্রান্সের নাগরিক লুকাস মিলিয়ার্ডের কাছে হারাতে হয়। 

;