সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন ভ্রমণ



এ টি এম মোসলেহ উদ্দিন জাবেদ, প্রাবন্ধিক
সুন্দরবন। ছবি: বার্তা২৪.কম

সুন্দরবন। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের অন্যতম অপরূপ সুন্দর দেশ বাংলাদেশ। এই দেশের হাজার হাজার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যতম ও প্রধান দর্শনীয় স্থান হচ্ছে সুন্দরবন। সুন্দরবন হল বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ও সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন। যা ইউনেস্কো কর্তৃক ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের’ স্বীকৃতি লাভ করেছে। এটি প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনে ফাইনালিষ্ট তালিকায়ও ছিলো। আগে কখনো সুন্দরবন ভ্রমণে যাওয়া হয়নি। তাই গত ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসের ৪-৭ তারিখ একটি ট্যুর অপারেটরের মাধ্যমে ঢাকা থেকে সরাসরি লঞ্চে করে সুন্দরবন ভ্রমণে গিয়েছিলাম।

পেলিকেন-১ নামক একটি টুরিস্ট লঞ্চ ছিলো আমাদের সুন্দরবন ভ্রমণের বাহন। পরিপাটি লঞ্চ, লঞ্চের পরিচ্ছন্ন কেবিন, চমৎকার আতিথেয়তা, আপ্যায়ন ও ব্যবস্থাপনা আমাদের মুগ্ধ করেছে। ঢাকার সদরঘাট থেকে বিকেল ৪ টায় আমাদের যাত্রা শুরু হলো। ট্যুর অপারেটরের উদ্যোগে সবার সাথে সবার পরিচয় হলো। লঞ্চটিতে ১ জন জাপানি, ১ জন ইংরেজ ও ২২ জন বাংলাদেশি মিলে মোট ২৪ জন পর্যটক ছিলাম। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে আগত অ্যাডভোকেট রফিকুল আলম ভাই, আমেরিকান লাইফ ইন্সুরেন্সের ওয়াহেদ ভাই ও ব্যবসায়ী শিপলু ভাইয়ের সাথে পরিচয় হয়ে ভালো লাগলো। একই এলাকার হওয়ায় সুন্দরবন ভ্রমণের এই সময়টুকু চারজনে একসাথেই উপভোগ করেছি।

প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বন। ছবি: বার্তা২৪.কম 

এই সময় সুন্দরবন যাওয়ার অন্যতম আরেকটি কারণ হচ্ছে- ৬ই নভেম্বর ছিল ভরা পূর্ণিমায় সুন্দরবনের দুবলারচরের রাস উৎসব/ রাসমেলা/ রাস পূর্ণিমা উৎসব। যা মূলত রাস মেলা নামে পরিচিত। এদিন প্রায় সারাবছর জনমানবশূন্য থাকা এই চরটিতে হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ অসংখ্য পর্যটক ভিড় জমান। রাস মেলা সনাতন ধর্মবলম্বীদের উৎসব হলেও, সকল ধর্মের মানুষ উৎসবটি উপভোগ করতে এই সময় সুন্দরবনের দুবলারচরে আসেন। শুধু তাই নয়; আমরা ভারত ও শ্রীলঙ্কার সনাতন ধর্মবলম্বীদেরও পেয়েছি, যারা সমুদ্র পথে এখানে এসেছে রাস মেলায় যোগ দিতে ও পূর্ণস্লান করতে।

এই ভ্রমণটি সরাসরি ঢাকা থেকে নদী পথে হওয়ায় অনেক ধরনের মজার ও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতায় ভরপুর ছিলো। বাংলাদেশ যে নদীমাতৃক দেশ তা দেশের দক্ষিণাঞ্চলে না গেলে বোঝাই যাবে না। অনেকগুলো নদীর সাথে পরিচয় হয়েছে। নদীগুলোর বুকের মধ্যে দিয়ে পর্যটন লঞ্চে ভ্রমণের মজাই অন্যরকম। যে নদীগুলোর সাথে পরিচয় হলো সেগুলো হচ্ছে- বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, পদ্মা, মেঘনা, কীর্তনখোলা, সুগন্ধা, গাবখান, সন্ধ্যা, কালছা/কাটছা, বলেশ্বর, সুন্দরবনের সুপতিখাল, কটকা খাল, পশুর নদী, রূপসা নদী অন্যতম। নদী, নদীর তীর, নদীর পানি, জোয়ার-ভাটা, কচুরিপানা, মাছ ধরার নৌকা, ট্রলার, কার্গো, যাত্রবাহী লঞ্চ, ফেরিঘাট ইত্যাদি নদীর সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছিল।

 এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসংখ্য পর্যটক ভিড় জমান। ছবি: বার্তা২৪.কম

টেলিভিশনে একবার একটি মোবাইল অপারেটরের এই বিজ্ঞাপন চিত্রে লঞ্চের চরে আটকা পড়ার দৃশ্য দেখেছিলাম। এই যাত্রাপথে সুন্দরবনের সুপতি প্রবেশ পয়েন্টের কাছাকাছি বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা বাজারের কাছাকাছি এলাকায় বলেশ্বর নদীর মাঝামাঝিতে আড়াআড়িভাবে নদী পাড়ি দেয়ার সময় একটি ডুবোচরে আমাদের লঞ্চটি হঠাৎ একটি ঝাকুনি খেয়ে আটকা পড়ে বা থেমে যায়।

লঞ্চটিকে ডুবোচর থেকে উদ্ধার করার জন্য লঞ্চের মাস্টার লঞ্চটিকে পিছনের দিকে নেয়ার চেষ্টা করলে হঠাৎ করে লঞ্চটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে লঞ্চের মাস্টার জানালেন একটি যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। তখন ট্যুর অপারেটর ম্যানেজার বাবুল সাহেব আমাদের সামনে রায়েন্দা বাজারের উনার পরিচিত একজনকে ফোন করে একটি ট্রলার আনতে বললেন। প্রায় আধ ঘণ্টা পর একটি ট্রলার আমাদের লঞ্চের নিকট আসলো। ততক্ষণে লঞ্চের নষ্ট যন্ত্রাংশটি মাস্টার ও ড্রাইভার মিলে খুলে ফেলেছে। বাবুল ভাই, লঞ্চের মাস্টার ও ড্রাইভারসহ নষ্ট যন্ত্রাংশটি নিয়ে রায়েন্দা বাজারের উদ্দেশ্যে চলে গেলেন এবং বলে গেলেন ঘণ্টা খানেকের মধ্যে যন্ত্রাংশটি ঠিক করে ফিরে আসবেন। আমরা সুন্দরবনগামী সকল যাত্রীরা তার কথায় আশ্বস্ত হয়ে অপেক্ষা করতে থাকলাম। তখন বিকাল প্রায় সাড়ে চারটা।

দেখে মনে হয় নদীর মধ্যে সবাই সূর্যাস্ত। ছবি: বার্তা২৪.কম

ডুবোচরে জলযানে আটকে পড়ে আমরা, চারদিকে শুধু নদী আর দূরে নদীর তীর। ভাটার টানে ডুবোচরটি ততক্ষণে স্পষ্ট হয়ে উঠল। কোন যাত্রীবাহী বা মালবাহী লঞ্চ বা কার্গোর দেখা পাচ্ছি না। অনেক দূর দিয়ে দু একটি ট্রলার মাঝেমাঝে চলাফেরা করছে। সূর্যাস্তের সময় ঘনিয়ে আসছে। নদীর মধ্যে সবাই সূর্যাস্ত উপভোগ করলাম। চারদিকে ধীরে ধীরে আবছা অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে। আকাশে মিলেছে চাঁদের দেখা। কিন্তু যখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো সবাই কিছুটা বিচলিত ছিলো সময়মতো ভ্রমণ করতে পারবে কিনা এই চিন্তায়।

আমাদের মধ্যে একজন বাবুল ভাইকে ফোন করে জানালো-লঞ্চের যন্ত্রাংশটি মেরামত হয়ে গেছে, কিছুক্ষণ পরে তারা রওয়ানা দিবে। ততক্ষণে সন্ধ্যা প্রায় সাতটা কি সাড়ে সাতটা। আমরা তখন কিছুটা দুশ্চিন্তা মুক্ত হলাম। সাড়ে আটটার দিকে হঠাৎ আমাদের লঞ্চের কাছাকাছি একটি ট্রলারের শব্দে সবাই রুম থেকে বেরিয়ে এলো। এর মধ্যেই বাবুল ভাইকে আমরা ফোন দিলে বাবুল ভাই জানালো- তারা আমাদের লঞ্চের কাছাকাছি চলে এসেছে। তখন সবাই হাফ ছেড়ে বাঁচলো। অবশেষে আমাদের লঞ্চ মেরামত সম্পন্ন হলো, কিন্তু জোয়ারের পানি পর্যাপ্ত আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো। রাত সাতে নয়টার দিকে জোয়ারের পানি বাড়ায় আমরা উদ্ধার হলাম।

হাজার হাজার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যতম হলো এই ম্যানগ্রোভ বন। ছবি: বার্তা২৪.কম

আমাদের লঞ্চ আবার চলতে শুরু করলো। চাঁদনী রাতে নদীর জলে জোছনা আছড়ে পড়ছে। রাত ১১টার দিকে আমরা সুন্দরবনের সুপতি পয়েন্ট দিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করলাম। রাতে সুন্দরবনের তেমন কিছু দেখা যাচ্ছিলো না। রাত বাড়তে থাকায় আমরা ঘুমিয়ে পড়লাম। পরদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমরা কটকায়। লঞ্চের কেবিন থেকে বেরিয়ে দেখি কটকার খালে ৫০/৬০টি পর্যটকবাহী লঞ্চ, ট্রলার ও ইঞ্চিনচালিত বড় নৌকা। খালের পশ্চিম তীরের বনে চিত্রা হরিণের পাল। নদীর তীরের জঙ্গলে বুনো হরিণের বিচরণ দেখতে খুবই সুন্দর লাগলো। আমরা সবাই ফ্রেশ হয়ে চা-বিস্কিট খেয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় চড়ে খালের মধ্যে দিয়ে কটকার জঙ্গল ভ্রমণে বের হলাম। পর্যটকদের সুবিধার জন্য সুন্দরবনের বিভিন্ন জনপ্রিয় স্পটে নির্মিত হয়েছে কাঠের ট্রেইল ও পর্যবেক্ষণ টাওয়ার।

সুন্দরবনের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে শরণখোলা রেঞ্জের অধীন সমুদ্রের তীরবর্তী এক সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র কটকা অভয়ারণ্য। এখানো প্রায় দেখা মেলে সুন্দরবনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হয়ে থাকা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের। তবে বনে বাঘের দেখা মেলা ভার। তার ওপর বাঘের দেখা মিললেও নিজের নিরাপত্তা বিষয়টিতো আছেই। তবে বাঘ দেখা ও নিরাপদে থাকা-এ দুই-ই সম্ভব সুন্দরবনের চমৎকার পর্যটন কেন্দ্র কটকা অভয়ারণ্য থেকে। যদিও আমরা বাঘের দেখা পাইনি।

কটকা বন কার্যালয়ের ঠিক ওপারে একটি ছোট খাল চলে গেছে সোজা পূর্ব দিকে। এই পথে কিছু দূর যাওয়ার পরে হাতের ডানে ছোট্র জেটি এবং ওপরে ওয়াচ টাওয়ার। কটকার ওয়াট টাওয়ারটি চারতলা বিশিষ্ট। ৪০ ফুট উচ্চ টাওয়ার থেকে উপভোগ করেছি সুন্দরবনের অপার প্রাকৃতি সৌন্দর্য। একটি সুন্দর সমুদ্র সৈকত আছে এখানে। পর্যবেক্ষণ টাওয়ার হতে ফেরার সময় হেঁটে বিচের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এছাড়া কটকার জেটির উত্তরে চরজুড়ে থাকা কেওড়ার বনেও দেখা মিললো নানা জাতের পাখ-পাখালি, বানর আর শূকরের। আবার শীতের সময় দেখা মিলে যেতে পারে রোদ পোহানো লোনা জলের কুমির।

বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী রয়েছে এই বনে। ছবি: বার্তা২৪.কম

সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল হরিণ, বন্যশুকর, বানর, কুমির, ডলফিন, কচ্ছপ, উদবিড়াল, মেছোবিড়াল ও বনবিড়ালসহ রয়েছে ৩৭৫ এর অধিক প্রজাতির বণ্যপ্রাণী। সেই সাথে সুন্দরবন জুড়ে জালের মতো থাকা প্রায় ৪৫০টি ছোট বড় নদী-খাল ভ্রমণের অপার সুযোগতো রয়েছেই ভ্রমণপিপাসুদের জন্য। ২০০৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে তীব্র আক্রোশে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় সিডর। সেই থেকে দীর্ঘ আট বছর, সময় নেহায়েত কমও নয়। কিন্তু এতো বছরেও সিডরের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। সুন্দরবনের প্রধান বনজ বৈচিত্র্যের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সুন্দরী, গোলপাতা, গেওয়া, গামারি, ঝামটি গরান এবং কেওরাসহ সর্বমোট ২৪৫টি শ্রেণি এবং ৩৩৪টি প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে।

কটকা সৈকত, হরিণের পাল, টাইগার পয়েন্ট, ঘূর্ণিঝড় সিডরে ক্ষতিগ্রস্থ বন, সুন্দরী গাছ ও গোলপাতার গাছসহ সব কিছুই উপভোগ করলাম। কটকা ভ্রমণ শেষে লঞ্চে ফিরে খিচুড়ি আর ডিমের কোর্মা দিয়ে সকালের নাস্তা সারতে সারতে দুবলারচরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। আর পথে ছয় ঘণ্টার ভ্রমনে সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাগলাম। পথে বড় বড় বক, স্বারষ, মদনটাক, চিল সহ অসংখ্য পাখির দেখা মিলল। চলতি পথে নদীতে দেখা মেলে ডলফিনের লাফঝাঁপ। কোকিল চর, তিন কোনার চর সহ অসংখ্য স্পট দেখতে মন জুড়িয়ে যাচ্ছিল।

সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে এর নিকটবর্তী অবস্থানে থাকা বহু মানুষের কর্মসংস্থানও হচ্ছে। চলার পথে দেখা যায় অসংখ্য মাছ ধরার নৌকা, নৌকায় থাকা জেলে, জ্বালানি কাঠ সংগ্রহকারী, মৌয়াল। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা নৌপথ ভ্রমণের পর বিকাল সাড়ে তিনটায় আমরা পৌছালাম দুবলারচর। দুবলারচর সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দুবলারচর। এটি হিরণ পয়েন্টের দক্ষিণ-পূর্বে কুঙ্গা ও পশুর নদীর মাঝে অবস্থিত একটি দ্বীপ বা চর, যা হিন্দুধর্মের পুন্যস্নান, রাসমেলা এবং মৌসুমী জেলেদের অস্থায়ী আবাসস্থল ও শুঁটকি উৎপাদনের জন্য বহুল পরিচিত। তার চেয়ে বেশি ভাল লাগল রাসমেলা স্থলে যাওয়ার পথে দুবলারচরের সূর্যাস্তের ছবি। এখানে লাল বুক মাছরাঙা, মদনটাক পাখি ও হরিণের দেখা মেলে।

দুবলারচরের জেলেদের মৌসুমী আবাসস্থল অর্থাৎ গোল পাতার ঘর ও ঘরের সামনে শুঁটকি শুকানোর মাচা দেখতে চমৎকার লাগছিলো। অনেকে আবার পুরো পরিবার নিয়ে আসে। এখানে তারা চার থেকে পাঁচ মাস থাকে। এই জেলেরা বেশিরভাগই দাদনদারদের নিকট দায়বন্ধ। আমাদের অনেকেই জেলেদের কাছ থেকে শুঁটকি কিনেছে। দামও অনেক কম। বিকালে সবাই মিলে রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে আয়োজিত মেলায় ঘুরেছি।

সুন্দরবন পূর্ব বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। ছবি: বার্তা২৪.কম

দেশি-বিদেশি অসংখ্য পর্যটক ও সনাতন ধর্মের পূর্ণার্থীদের সমাগমে ভরপুর ছিলো মেলাস্থল। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বাহিনী ও বনবিভাগের নিরাপত্তা কর্মীরা নিয়োজিত ছিলো। মেলায় যাওয়ার পথে পথে পূর্ণার্থীরা বিভিন্ন প্রকার মিষ্টান্ন সামগ্রী প্রসাদ হিসেবে দর্শনার্থীদের মাঝে বিলি করছিলো। এই প্রসাদ নাকি ফিরিয়ে দেয়া বা না নেয়ার কোনো নিয়ম নেই, তাই আমাদের একেকজনের হাতে অনেক প্রসাদ জমে গেছে। পূর্ণার্থীদের কাছ থেকে জেনেছি, প্রতি বছর কার্তিক মাসে রাসপূর্ণিমাকে উপলক্ষ্য করে দুবলার চরে এই রাসমেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবছর অসংখ্য পূর্ণাথী এখানে সমুদ্রস্নান করতে আসেন। পূর্ণার্থীরা ভোরে সূর্যোদয়ের আগে স্নান করেন পাপমুক্তির আশায়। দুবলার চরে সূর্যোদয় দেখে ভক্তরা সমুদ্রের জলে ফল ভাসিয়ে দেন। কেউবা আবার বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে ভজন-কীর্তন গেয়ে মুখরিত করেন চারপাশ।

রাতের বেলায় লঞ্চ চলে এলো হাড়বাড়িয়া ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রে। খুলনা থেকে ৭০ কিলোমিটার এবং মংলা বন্দর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে এই কেন্দ্রে অবস্থান। হাড়বাড়িয়া খালের পাড়ে ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রের সোনাালি নামফলক। একটু সামনে এগুলোই বন কার্যালয়। এরপরে ছোট খালের উপরে একটি ঝুলন্ত সেতু। সামনের দিকে জঙ্গলের গভীরতা ক্রমশ বেড়েছে। ঝুলন্ত সেতু পেরিয়ে সামান্য সামনে খননকৃত মিঠা পানির বিশাল একটি পুকুর।

পুকুরে শাপলা শালুক ফুটে রয়েছে দেখতে খুবই সুন্দর লাগছিলো। পুকুরের মাঝে গোলপাতার ছাউনি সমেত একটি বিশ্রামাগার। বিশ্রামাগারটির চারপাশে বসার জন্য বেঞ্চ পাতা। পুকুরের পার থেকে কাঠের তৈরি সেতু গিয়ে ঠেকেছে ঘরটিতে। হাড়বাড়িয়ায় সুন্দরবনের বিরল মায়া হরিণেরও দেখা মেলে। এখানকার ছোট ছোট খালগুলোতে আছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছরাঙাসহ নানা জাতের পাখি। হাড়বাড়িয়ার খালে পৃথিবীর বিপন্ন মাস্ক ফিনফুট বা কালোমুখ প্যারা পাখিও দেখা যায়। এখানেও বাঘ ও বন দেখার জন্য রয়েছে ৪০ ফুট উঁচু একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। অবশেষে বাঘ মামার দেখা না পেলেও হাড়বাড়িয়ায় এসে দেখা পেলাম বাঘের পায়ের ছাপ। সেখানকার বনরক্ষীরা জানালেন তিনদিন আগে সেখানে বাঘ এসেছিলো। পুরো জঙ্গলটি খুবই মনোমুগদ্ধকর ও রোমাঞ্চকর।

হাড়বাড়িয়া থেকে দুপুরের আগেই চাঁদপাই জেলেপাড়া পাড়ি দিয়ে চলে এলাম সুন্দরবনের পশুর নদীর তীরে অবস্থিত করমজল পর্যটন কেন্দ্র। বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে ৩০০ হেক্টর জমির উপর পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে। প্রকৃতির শোভা বাড়াতে এখানে রয়েছে কুমির, হরিণ, বানরসহ নানা প্রজাতির পশুপাখি। পাশাপাশি দেখা মিলল বাঘের কঙ্কাল বিভিন্ন প্রাণীর কঙ্কাল।

পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো বিকেলে করমজল এলাকায় দল বেধে বন্য চিত্রল হরিণের আগমন এবং পর্যটকদের হাত থেকে খাবার গ্রহণ। এখানকার বানরগুলো সুযোগ পেলে মানুষের মাথার ক্যাপ, হাতের মোবাইল, ক্যামেরা নিয়ে যায়। তাই সবাইকে একটু সতর্ক থাকতে হয়। করমজল গিয়ে পর্যটকগন সহজেই সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ইকোসিষ্টেম সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারেন এবং সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও বন্য প্রাণীর সাথে পরিচিত হতে পারেন। এছাড়াও নির্মিত হয়েছে কাঠের ট্রেইল, টাওয়ার এবং জেলেদের মাছ ধরার কর্মজজ্ঞ হচ্ছে অতিরিক্ত প্রাপ্তি। করমজলে বাংলাদেশের একমাত্র কুমিরের প্রাকৃতিক প্রজনন কেন্দ্র অবস্থিত। একদিনের ভ্রমণে যারা সুন্দরবন দেখতে চান তাদের জন্য আদর্শ জায়গা করমজল পর্যটন কেন্দ্র।

করমজল ভ্রমণ শেষে করে মংলা পোর্ট, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নৌ ঘাটি ও বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান ও পশুর নদীর তীর দেখতে দেখতে বিকাল চারটায় খুলনা শহরের রূপসা নদীর ঘাটে এসে আমাদের সুন্দরবন ভ্রমণ শেষ করলাম। জয় করলাম অনিন্দ্য সুন্দর, অপরূপ ও বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন।

   

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;