লেবাননের ভাগ্যাকাশে কালোমেঘ



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
লেবাননের ভাগ্যাকাশে কালোমেঘ। ছবি: সংগৃহীত

লেবাননের ভাগ্যাকাশে কালোমেঘ। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্যোগে মধ্যপ্রাচ্যে আরব-ইসরায়েল মৈত্রীর সূচনা হওয়ায় সবচেয়ে নাজুক পরিস্থিতির শিকার হয়েছে ফিলিস্তিন ও লেবানন ইস্যু। ইহুদি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের অধিকার আদায়ের বিষয়টি এতে শক্তিহীন হয়েছে এবং সংঘাতে জর্জরিত লেবাননের ভবিষ্যৎ আরো অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়েছে। বিশেষত লেবাননের ভাগ্যাকাশে দেখা দিয়েছে কালোমেঘ।

সাম্প্রতিক সময়ে আরব-বিশ্বের একটি অংশের সঙ্গে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের মৈত্রীর ফলে বিপন্ন ও বিপর্যস্ত লেবাননের ভাগ্যাকাশে নেমে এসেছে কালো ছায়া। ইসরায়েল পাশের দেশ লেবাননের ভূমি বার বার দখল করেছে। ইসরায়েল থেকে লক্ষ লক্ষ আরব মুসলিমকে ঠেলে দিয়েছে লেবাননে। আর একমাত্র লেবানন থেকেই ইরান সমর্থিত যে শিয়া মিলিশিয়ারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে, তারাও কোণঠাসা হয়ে গেছে। ফলে লেবাননকে শায়েস্তা করতে ইসরায়েল এবার ভিন্ন পথে এগুবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। নানা মত ও পথে বিভক্ত লেবাননকে ভাগাভাগি করার ফর্মুলা দিচ্ছে ইসরায়েলপন্থী বিশেষজ্ঞরা।  

প্রতিবাদী কবি কাহলিল জিবরানের মাধ্যমে পরিচিত হলেও লেবানন হলো এমন এক প্রাচীন জনপদ, যার কথা ৭১ বার ওল্ড সেস্টামেন্টে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বর্তমানে যে খণ্ডিত দেশটি লেবানন নামে পরিচিত, তার জন্ম ১৯২০ সালে ফরাসি ঔপনিবেশিক শক্তির তত্ত্বাবধানে। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পশ্চিমা শক্তিগুলো বিজয়ীর আসনে এসে বিশ্বের বহু দেশ ও জনপদকে খণ্ড-বিখণ্ড ও ভাগভাগি করে নেয়। এশিয়া, আফ্রিকার বহু দেশ এভাবে ইউরোপের নানা বৃহৎ শক্তির দখলে আসে। 

কিন্তু গত ১০০ বছরে লেবানন ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতার মুখ দেখলেও শান্তি ও স্থিতিশীলতার দেখা পায় নি। পুরো দেশ তো বটেই, রাজধানী বৈরুতও পরিণত হয়েছে সংঘাতময়, রক্তাক্ত ও জ্বলন্ত শহরে। ইসরায়েলি হামলা ও দখলদারিত্ব এবং নিজেদের মধ্যে লড়াই ও আন্তঃকলহ দেশটিকে বিশ্বের সবচেয়ে নাজুক, ভঙ্গুর, অস্থিতিশীল ও বিপজ্জনক স্থানে পরিণত করেছে।

লেবাননের অনেকটা ভূমিই ইসরায়েলের জবরদখলে। বাকিটা খ্রিস্টান, দ্রুজ, সুন্নি ও শিয়া মুসলিম গ্রুপগুলোর মধ্যে বিভক্ত। সবাইকে নিয়ে ফেডারেল ধরনের সরকার চালানোর বহু চেষ্টা করা হয়েছে লেবাননে। খ্রিস্টান ও মুসলিমদের মধ্যে ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের ভাগাভাগিও করা হয়েছে। কখনো প্রেসিডেন্ট খ্রিস্টান হলে প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছে মুসলিম কাউকে। তথাপি শান্তি, স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্য রক্ষিত হয়নি দেশটিতে। নিজেদের বিভেদের কারণে ইহুদি আগ্রাসন ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধের একাট্টা হয়ে রাজনৈতিক বা সামরিক লড়াই করাও সম্ভব হয়নি লেবাননের পক্ষে। সম্ভব হয়নি অর্থনীতিকে বাঁচানো। ফলে লেবানন পরিণত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি উদ্বাস্ত, গৃহহীন, দরিদ্র ও আক্রান্ত মানুষের দেশে।

আর এই সুযোগটিই নিতে চাচ্ছে ইসরায়েল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আরবের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দেশকে পাশে পাওয়ায় ইসরায়েলের বিশেষজ্ঞরা লেবাননকে ভাগ করার ফর্মুলা দিচ্ছেন। এতে কয়েকভাগে বিভক্ত লেবানন আরো শক্তিহীন হবে এবং ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আর কিছুই করতে পারবে না।

২০২০ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা জার্নাল ‘ফরেন পলিসি’তে জোসেফ কেচিয়ান এক প্রবন্ধে লেবাননের সমস্যা সমাধনের জন্য ‘পার্টিশান ইজ ওনলি সলিউশান’ বলে যুক্তি দাঁড় করিয়েছেন। লেবাননের দীর্ঘ ইতিহাস পযালোচনা করে এই গবেষক, যিনি প্রত্যক্ষভাবেই পশ্চিমা জোট ও ইসরায়েলের প্রতি সহানুভীতিশীল, ভাগাভাগির যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন। বলেছেন, বিভিন্ন ধর্ম ও জাতি গোষ্ঠীর পক্ষে লেবাননে একসঙ্গে থাকা অসম্ভব। ফলে সঙ্কট উত্তরণ ও শান্তির জন্য লেবাননকে বিভিন্ন অংশে ভাগ করে দেওয়াই ভালো, যাতে বিভিন্ন গ্রুপ ও গোষ্ঠী নিজেদেরকে শাসন ও পরিচালনা করতে পারে।

পাশ্চাত্যের পণ্ডিতদের পক্ষে থেকে উত্থাপিত ভাগাভাগির এই ফর্মুলা মোটেও নতুন নয়। অতীতে বার বার ভাগ-বোটোয়ারা করে নানা দেশ ও জাতিকে খণ্ড-বিখণ্ড করা হয়েছে। এতে শান্তি তো আসেই নি, বরং সংঘাত ও সঙ্কট আরো বেড়েছে। ভারত উপমহাদেশ ভাগ করার ঘটনাটি একটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। গত ৭৩ বছরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শান্তির চেয়ে সংঘাতের অভিজ্ঞতাই বেশি।পূর্ব ইউরোপের বলকান রাষ্ট্রগুলোর কিংবা আফ্রিকার দেশগুলোকে ভাগ করার পরিণাম এখনো বিভিন্ন ধরনের আন্তঃসম্প্রদায়, জাতিগত ও নৃতাত্ত্বিক সশস্ত্র-রক্তাক্ত লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে দেখতে পাওয়া যায়।

ঐতিহাসিকভাবেই ১৯৪৮ সাল থেকে ইসরায়েল স্থানীয় আরবদের জায়গা দখল করে মধ্যপ্রাচ্যে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে বিভেদ ও সংঘাতের বীজ রূপে কাজ করছে, যা এখনো চলমান। মার্কিন ছত্রছায়ায় এবং মার্কিনপন্থী আরব রাষ্ট্রগুলোর মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে যে মৈত্রী ও শান্তির কথা বলা হচ্ছে, তার প্রকৃত স্বরূপ এখনো অজানা। ইসরায়েল যদি আরবের নব্য-বন্ধুদের কাঁধে বন্দুক রেখে লেবানন ও অন্যান্যদের শায়েস্তা করতে বা বিভক্ত করতে কাজ করে এবং মার্কিনিরা অস্ত্র বিক্রি বাড়ানোর কাজটি করে, তাহলে শান্তি নয়, মধ্যপ্রাচ্য আরো অশান্ত ও রক্তাক্তই হবে।

মিশর, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর বাইরাইণও ইসরায়েলের মিত্রে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব নেপথ্যে এ মৈত্রীর পৃষ্ঠপোষক। প্রথমবারের মতো কোনো ইসরায়েলি শীর্ষ নেতার সৌদি আরবে রাষ্ট্রীয় সফরের ঘটনাও ঘটেছে। ফলে আরব-ইসরায়েল সম্পর্ক বৈরিতা থেকে মৈত্রীর পথে চলেছে। এতে লেবানন, ফিলিস্তিন ইস্যুসহ ইসরায়েলের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে জোরালো দেন-দরবারের পথ সীমিত হচ্ছে এবং ইসরায়েলের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ও জাতিগুলোর অধিকার আদায়ের জায়গাটুকুও ক্রমেই সঙ্কুচিত হচ্ছে, যার প্রভাব দুর্ভাগ্যগ্রস্ত লেবাননে আরো চরমভাবে দেখতে পাওয়ার আশঙ্কাই করছেন বিশ্লেষকরা।

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;