করোনাকালের মে দিবসে বিপন্ন জীবন ও জীবিকা



ড. মাহফুজ পারভেজ
করোনাকালের মে দিবসে বিপন্ন  জীবন ও জীবিকা। সংগৃহীত

করোনাকালের মে দিবসে বিপন্ন জীবন ও জীবিকা। সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের সময় প্রাকৃতিক কারণেই বিশ্বজুড়ে বসন্তকাল বিরাজ করে। বিশ্বব্যাপী এবার ও গত বছর শ্রমিক দিবস হয়েছে করোনাকালে। ফলে বিপ্লবের তপ্ত ইতিহাস, বসন্তের হিন্দোল নয়, শ্রমজীবী মানুষের সামনে ছিল করোনার আগ্রাসনের কারণে বিপন্ন জীবন আর জীবিকার প্রসঙ্গ।

করোনার তীব্রতার কারণে লকডাউন, কারফিউ ও অন্যবিধ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় প্রথম ও প্রাথমিকভাবে আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয় শ্রমিক শ্রেণি। তাদের চাকরি চলে যায়। তারা অকাতরে কর্মচ্যুত হন। বিশেষত, প্রবাসী বা অভিবাসী লক্ষ লক্ষ শ্রমশক্তি দেশে-বিদেশে, পথে-প্রান্তরে আটকে পড়েন। করোনার দুটি বছর অবর্ণনীয় কষ্ট আর সীমাহীন আর্থিক বিপদের মধ্য দিয়ে পাড়ি দিয়েছেন শ্রমিক শ্রেণি।

ইউরোপ, আমেরিকায় করোনার ফলে মাঝারি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীদের বিপদ হয়েছে বেশি। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশ, ইউরোপ, আফ্রিকায় সর্বাপেক্ষা বিপদগ্রস্ত হয়েছেন কর্মী ও শ্রমিকরা। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে এই সমস্যা রয়েছে তীব্রতর। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মসূত্রে অবস্থান করেন। তারা চাকরি হারিয়েছেন। ভিসা বা বিমান চলাচল সমস্যায় আটকে গিয়ে সব হারিয়েছেন। 

দেশের মধ্যেও এক রাজ্য বা এক স্থান থেকে কর্মহীন হয়ে শ্রমিকরা লকডাউনের চলাচল করেছেন। করোনায় মারা গেছেন বা করোনা ছড়িয়েছেন। ভারতে মাইগ্রেট শ্রমিকদের সমস্যা ভয়ঙ্করতম আকারে দেখা গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভারতে প্রবল করোনা বিস্তারের পেছনে সরকারের রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও শ্রমনীতিকে দায়ী করেছে। বলেছে, ভারত সরকারের করোনার মধ্যে নির্বাচনী উৎসবে মেতেছিল। হিন্দু ধর্মের কুম্ভমেলায় লক্ষ লক্ষ লোকের সমাবেশ করেছে। শ্রমজীবী মানুষকে আগাম না জানিয়ে গত বছর,অকস্মাৎ লকডাউন দিয়েছে। ফলে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক পায়ে হেঁটে এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যের বাড়িতে যেতে বাধ্য হয়েছে। এতে পথে পথে বহুজন যেমন মারা গেছে, তেমনি তাদের মাধ্যমে গোচরে-অগোচরে করোনা ছড়িয়েছে।

বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তারা লকডাউন তুলে দেওয়ার দাবিতে রাস্তায় সভা-সমাবেশ করেছেন। নিম্ন আয়ের কর্মজীবী, শ্রমজীবী, দিনমজুর শ্রেণির মানুষ করোনার কারণে সীমাহীন দুর্ভোগে পতিত হয়েছেন।

ফলে চলমান করোনা পেন্ডেমিকের সঙ্কুল পরিস্থিতিতে পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে ইতিহাসের পুনরুচ্চারণ ও স্মৃতি তর্পণের বদলে বর্তমান বিপদ উত্তরণের বিষয় সর্বাধিক মনোযোগী হতে হবে। বিপন্ন মানুষকে একদিকে যেমন মহামারির কবল থেকে তাদের জীবন বাঁচাতে হবে, অন্যদিকে তেমনিভাবে তাদের আহারের সংস্থান করে জীবিকাকেও রক্ষা করতে হবে। অর্থাৎ, একই সঙ্গে মানুষের জীবন ও জীবিকার সমস্যা সমাধানের বিষয়টিই করোনাকালের  পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের মূল দাবি। 

ফলে মে দিবসে সারা দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস বা শ্রমিক দিবস হিসেবেও পালিত হওয়ার সময় অতীতের অর্জনের দিকে তাকানোর পাশাপাশি বর্তমানোর চলমান বিপদকে দূর করার বিষয়গুলোও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।  এই দিনটিতে পৃথিবী জুড়ে শ্রমিকদের অবদান এবং ঐতিহাসিক শ্রমিক আন্দোলনের কথা স্মরণের সময় আজকের করোনাকালে তাদের বিপন্ন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বিষয়টিও মনে রাখা জরুরি। 

১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগোয় হে মার্কেটের ঘটনায় মে দিবসের উৎপত্তির পর শতবর্ষ পেরিয়ে দেড়শতবর্ষ হতে চলেছে। সেদিন শ্রমিকদের সমর্থনে শান্তি মিছিলটি এক পর্যায়ে দাবি আদায়ের প্রশ্নে অদম্য ও হিংস্র চেহারা নেয়, যার জেরে ৪ জন সাধারণ মানুষ ও ৭ জন পুলিশ আধিকারিক মারা যান। বিক্ষোভকারীরা শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন, কাজের সময় বৃদ্ধি, খারাপ ধরনের কাজের পরিবেশ, কম মজুরি ও শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলেন। এদের গ্রেফতার করা হয়, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়, দেওয়া হয় মৃত্যুদণ্ডও, যারা মারা গিয়েছিলেন, তারা হে মার্কেট শহিদ হিসেবে পরিচিত।

এই ঘটনা শ্রমিক আন্দোলনে ব্যাপক শক্তি জুগিয়েছিল বলেই মনে করা হয়ে থাকে। যার প্রভাব ছিল বিশ্বব্যাপী ও সুদূরপ্রসারী। যেমন, আমেরিকা ১৮৯৪ সাল থেকে শ্রমিক দিবসকে ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করে, তারা প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিনটিকে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। কানাডাও দ্রুত সে পথে হাঁটে। ১৮৮৯ সালে, দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের সময়ে সোশালিস্ট ও লেবার পার্টি মিলে ১ মে-কে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। দীর্ঘ কয়েক বছরের বিক্ষোভ ও অভ্যুত্থানের পর ১৯১৬ সালে আমেরিকা ৮ ঘন্টা কাজের দাবি মেনে নেয়। ১৯০৪ সালে আমস্টারডামে আন্তর্জাতিক সোশালিস্ট কংগ্রেস থেকে সব দেশের সমস্ত সোশাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি সংগঠন ও ট্রেড ইউনিয়নগুলিকে মে মাসের প্রথম দিনটিতে বড় সংস্থায় ৮ ঘন্টা কাজের দাবি, প্রোলেতারিয়েতের শ্রেণি চাহিদা এবং বিশ্বশান্তির দাবিতে প্রখর সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয় এবং বলা হয়, সব দেশের সমস্ত প্রোলেতারিয় সংগঠন ১ মে শ্রমিকদের ক্ষতি না-করে কাজ করা থেকে বিরত থাকে।

১৯১৭ সালের রাশিয়ার বিপ্লবের পরে ঠান্ডা যুদ্ধের সময়কালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ইস্টার্ন ব্লক এই উদযাপনকে সাদরে গ্রহণ করা হয় – এই দেশগুলিতে ১ মে হয়ে ওঠে জাতীয় ছুটির দিন। এই উদযাপনের অন্যতম অঙ্গ ছিল কুচকাওয়াজ, মস্কোর রেড স্কোয়ারে এই দিনের কুচকাওয়াজে উপস্থিত থাকতেন শীর্ষ কমিউনিস্ট নেতারা, প্রদর্শিত হত সোভিয়েত মিলিটারি শক্তি।

ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম মে দিবস পালিত হয় ১৯২৩ সালের ১ মে। হিন্দুস্তান শ্রমিক-কিষাণ  পার্টি এবং কমরেড সিঙ্গারাভেলার (সিঙ্গারাভেলু চেট্টিয়ার) উদযাপনের আয়োজক ছিলেন। দক্ষিণ ভারতের ত্রিপলিকেন সৈকত এবং মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিপরীতে অবস্থিত সৈকতের দুটি সমাবেশে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির আত্মসম্মান আন্দোলন এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণির আন্দোলনের যোদ্ধা এই নেতা একটি প্রস্তাব পাশ করেন, যে প্রস্তাবে বলা হয়, সরকারকে শ্রমিক দিবসের দিনটিকে সকলের জন্য ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। তারপর মে দিবস ক্রমশ সমগ্র উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।

মে দিবসের উৎপত্তির পর শতাধিক বছরের সুদীর্ঘ সময়কালে শ্রমিক সমাজের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সমীকরণটি অধরাই রয়ে গেছে। শ্রমজীবীর স্বপ্ন অপূর্ণ রেখে কিংবা পূরণে ব্যর্থতা দেখিয়ে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর পতন ঘটেছে। বিশ্বায়ন ও বাজার পুঁজির একচ্ছত্রবাদী দাপটে শ্রমিক পরিণত হয়েছে আধুনিক দাসে। কর্পোরেটদের হাতে পুঞ্জিভূত হয়েছে যাবতীয় সম্পদ ও মুনাফা। সেইসব কর্পোরেটদের গোত্রীয়, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত বেলেল্লাপনা, বিকৃতি ও বেসামাল কাজ-কারবারের কারণে শুধু শ্রমজীবী শ্রেণিই নয়, মানবিক মূল্যবোধ, নারী অধিকার ও শোভনীয় সকল কিছুরই মৃত্যুঘণ্টা বাজছে। 

এহেন অশনি সঙ্কেতের ধ্বনিপুঞ্জ যখন বিশ্বময় চরম অবনতিশীল পরিস্থিতির বার্তা বহন করছে, তখনই হানা দিয়েছে প্রাণঘাতী করোনা। যার আঘাতে বিশ্বময় শুরু হয়েছে মারণযজ্ঞ। আর এতে সবার আগে আক্রান্ত হয়েছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জীবন ও জীবিকা। করোনার ফলে ঘোরতম সঙ্কুল জীবন ও অনিশ্চিত জীবিকার মধ্য দিয়ে চলছে গরিব, দুখি, শ্রমিক শ্রেণির প্রাত্যহিক-দৈনন্দিন দিনকাল।  

এবারের মে দিবসে নানাবিধ আনুষ্ঠানিকতার নামে শ্রমিক বন্দনা ও স্তুতিবাদের মুখস্ত ও লোক দেখানো উচ্চারণের বদলে করোনার ঘোরতর আঘাতে শ্রমিক শ্রেণির বিপদাক্রান্ত জীবন ও জীবিকার কল্যাণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করাই সমীচীন। এতেই শ্রমের প্রকৃত মূল্য এবং শ্রমিকের যথার্থ মর্যাদা সুনিশ্চিত হবে এবং বৈশ্বিক মহামারির প্রবল প্রকোপ থেকে শ্রমজীবী শ্রেণি বাঁচার পথ খুঁজে পাবে।

   

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;