প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে পুলিশ!
প্রখর রোদের মাঝেও দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ সদস্য
চলছে জৈষ্ঠ মাস। জৈষ্ঠের ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। একটু সুশীতল ছায়ার জন্য যখন মানুষ দ্বিগ্বিদিক ছুঁটাছুঁটি করছে ঠিক সেই মুহূর্তে প্রখর রোদে পিচঢালা মহাসড়কে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠা ও সততার সাথে পালন করছেন ট্রাফিক পুলিশ।
রৌদ্রের তাপদাহ থেকে বাঁচতে একহাত দিয়ে মাথার উপর ধরে রেখেছেন ছাতা। আর অন্য আরেকটি হাত দিয়ে কখনো প্রখর রৌদ্রের তাপে গা থেকে ঝরা ঘাম মুছছেন। আবার কখনো ওই হাতটি দিয়েই ফেরাচ্ছেন শৃঙ্খলা।
এ রকম চিত্রই দেখা যায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে। শত কষ্টের মাঝেও রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে তারা পুলিশের ইউনিফর্ম পড়ে একাগ্র চিত্তে পালন করছেন দায়িত্ব। ঘন্টার পর ঘন্টা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে দাঁড়িয়ে তারা ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষগুলোকে কর্মস্থলে সুশৃঙ্খল ভাবে ফিরতে সহযোগিতা ও তাদের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যস্ত রয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৮মে) সকালে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে কর্মমুখী মানুষ নদী পার হচ্ছেন। এ সকল মানুষের নিরাপত্তা ও ঘাটের শৃঙ্খলায় কাজ করছেন একাধিক পুলিশ। আবার কেউ করোনারোধে ঘাটের বাইবাস সড়ক ও গোয়ালন্দ মোড়ে বসিয়েছেন চেকপোস্ট। নিরাপত্তার পাশাপাশি তারা মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছেন মাস্ক ব্যবহারেও।
ঢাকা থেকে আসা পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, এই গরমে আমরা ঘাট পার হতে গিয়েই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। শার্ট ভিজে গেছে। একটু শান্তির জন্য ছায়া খুঁজছি। কিন্তু এরা (পুলিশ) প্রচন্ড রোদের মধ্যে কিভাবে দাঁড়িয়ে আছে এটাই বুঝতে পারছিনা। সত্যি এরা প্রশংসার দাবিদার। স্যালুট জানায় রাজবাড়ীর এসকল ট্রাফিক পুলিশকে।
ঘাটে দায়িত্বরত একাধিক ট্রাফিক পুলিশ বার্তা২৪.কমকে বলেন, গরমে গায়ের পোশাক ভিজে যাচ্ছে। কিন্তু কিছুই করার নেই। ঘাটে এখন অনেক যাত্রীর চাপ। তাদের সার্বিক নিরাপত্তার কাজে এখন আমরা ব্যস্ত। মাঝে মাঝে আমরা ওরস্যালাইন খাচ্ছি। যাতে শরীরটা সুস্থ থাকে।
রাজবাড়ী ট্রাফিক ইন্সেপেক্টর তারক চন্দ্র পাল বার্তা২৪.কমকে বলেন, রাজবাড়ী ট্রাফিক পুলিশ সব সময়ই চেষ্টা করে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে। সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের যত কষ্টই হোক না কেন আমরা দায়িত্বপালনে সর্বদা সচেষ্ট থাকব। এখন যে গরম পড়ছে এরমধ্যে ১২ ঘন্টা সড়কে দাঁড়িয়ে থেকে দায়িত্ব পালন করাটা সত্যি অনেক কষ্টের। এরপরেও করার কিছু নেই। দায়িত্ব পালন করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
রাজবাড়ী জেলা ট্রাফিক অফিস সূত্রে জানা যায়, ঈদের আগের থেকেই দৌলতদিয়া ঘাটে ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তা ও ঘাট এলাকাতে শৃঙ্খলা বজায়ে রাখতে দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা কাজ করছে পুলিশ। প্রতিদিন ৪০-৫০ জন পুলিশ সদস্য পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮ টা ও রাত ৮ টা থেকে সকাল ৮ টা পর্যন্ত টানা ১২ ঘন্টা করে দায়িত্ব পালন করে থাকেন এ সকল পুলিশ সদস্যরা।
