বাংলার প্রাণপ্রকৃতির ক্ষুদ্র পরিযায়ী তাইগা-চুটকি



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
তাইগা-চুটকির প্রজননকালে পুরুষের গলায় হলদে রঙ হয়। ছবি: ইনাম আল হক

তাইগা-চুটকির প্রজননকালে পুরুষের গলায় হলদে রঙ হয়। ছবি: ইনাম আল হক

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলার প্রাণ-প্রকৃতিতে দীর্ঘ আট-নয় মাস নেচে বেড়ানো ছোট পরিযায়ীর নাম তাইগা-চুটকি (Taiga Flycatcher)। আমাদের দেশে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে এসে একেবারে মে মাস পর্যন্ত প্রায় ৯ মাস অবস্থান করে এরা।

বাংলাদেশে দীর্ঘদিন অবস্থান করা হাতেগোনা পরিযায়ীদের তালিকায় তাইগা-চুটকি অন্যতম। যে সকল পরিযায়ী পাখি আমাদের দেশে দীর্ঘদিন অবস্থান করে তাদের মধ্যে অন্যতম তাইগা-চুটকি।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক পাখিটির নামকরণ সম্পর্কে বলেন, “এই ‘তাইগা’ নামকরণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলতে গেলে একটু ব্যাখ্যা দিতে হবে। পৃথিবীর উত্তরগোলার্ধের তীব্র শীতপ্রধান অঞ্চলগুলোকে দু’টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি ‘তুন্দ্রা’ এবং অপরটিকে ‘তাইগা’। তুন্দ্রা’র অর্থ হলো প্রচন্ড ঠান্ডা এলাকা; যেমন সাইবেরিয়া। এখানে মাত্র ৩ মাস বরফ থাকে না, বাকি ৯ মাস পুরো চারদিক বরফে আবৃত্ত থাকে। ফলে এখানে কোনো বড় গাছপালা জন্মায় না, ছোট ঝোপঝাড় হয়। মাত্র তিন মাসে মাটি গরম হতে পারে না। এটাকে বলা হয় ‘পার্মাফ্রস্ট’ অর্থাৎ চিরকালের জন্য ঠান্ডা।”

‘‘তুন্দ্রা অঞ্চল থেকে যদি দক্ষিণের দিকে আসতে থাকেন তখন দেখা যাবে গাছগুলো ধীরে ধীরে বড় বড় দেখাচ্ছে। কারণ, এখানে প্রায় ৫ মাস বরফ থাকে। এই অঞ্চলকে বলা হয় তাইগা। যেমন তুন্দ্রায় কোনো বড় গাছপালা নেই, তাইগাতে বড় গাছপালা হতে পারে এ জন্য যে মাটি কিছু দিনের জন্য গরম হবার সুযোগ পায়। মাটি থেকে রস আহরণ করে গাছগুলো বড় হবার সুযোগ পায়।’’

গাছের ডালে আপন মনে বসে রয়েছে তাইগা-চুটকি। ছবি: ইনাম আল হক

গাছের ডালে আপন মনে বসে রয়েছে তাইগা-চুটকি। ছবি: ইনাম আল হক


 

পাখিটি ডিম পাড়তে তাইগা অঞ্চলে যায় বলে এই পাখিটার নামকরণ করা হয়েছে ‘তাইগা-চুটকি’। পাখিটি একেবার তুন্দ্রায় চলে যায় না, এর আগেই তাইগাতে অবস্থান করে। যেমন ধরুন, হিমালয়ের উঁচু জায়গায়, এখানে ৫/৬ মাস এলাকাটি বরফমুক্ত থাকে। এগুলোই তাইগা। তাইগা অঞ্চল বলতে বুঝায় না যে সাইবেরিয়ায় যেতে হবে। যেমন ধরুন- সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট চিরকালের জন্যই তুন্দ্রাঞ্চল। এটা তো সাইবেরিয়ার মতো দূরে নয়, আমাদের কাছেই।”

‘তার মানে- যেসব অঞ্চল ৫/৬ মাসের জন্য বরফমুক্ত থাকে, বড় গাছ হতে পারে কিন্তু বিশেষ এক ধরণের গাছ হয়। ওটাকে বলা হয় ‘কর্নিফার’। পাতাগুলো চওড়া হয় না। খুব চিকন চিকন সুঁইয়ের মতো পাতা হয়। বরফের নিচে থাকলেও পাতাগুলো দিব্বি বেঁচে থাকতে পারে। এই কনিফার গাছে এই পাখিটি বাসা করে বলে একে তাইগা-চুটকি বলা হয়।’

পাখিটির প্রাপ্তি সম্পর্কে ইনাম আল হক বলেন, “এই পাখিটিকে আমাদের দেশে একেবারে মে মাস পর্যন্ত দেখা যায়। খুব মনোযোগ দিয়ে দেখলে এই পাখিটিকে আপনি আপনার শহরেও এখন খুঁজে পাবেন। গাছের ডালে ডালে-ঝোপঝারে বা শহরেও পাওয়া যায়। মে মাসের মাঝামাঝিতে বা শেষের দিকে ওরা উড়ে আবার তাইগা অঞ্চলে চলে যায়। আবার সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে চলে আসে। মাত্র তিন সে তাইকা অঞ্চলে থাকে। এই তিন মাসেই বাসা তৈরি করে ডিম পাড়া, ছানা ফুটানো এসব খুব দ্রুতই করে ফেলে ওরা।”

পাখিটির খাবার প্রসঙ্গ তিনি বলেন, “রাস্তার পাশে কড়ই গাছের ডালে-পাতায় যে সব পোকা হয় ওগুলো খেয়েই ওরা দিব্বি বেঁচে থাকতে পারে। ও যেহেতু একটি বিশেষ ধরণের পোকা ধরে খায়, তাই ওই গাছে সে অন্য কোনো তাইগা-চুটকিকে আসতে দেয় না। পাতাহীন ডালে বসে থাকে এবং পোকাকে দেখলেই দ্রুত উড়ে এসে ধরে কিংবা অনেক সময় পোকা নিচ থেকে খুটেও খায়। গাছের ছোট্ট ছোট্ট সাদা পোকাসহ অন্য পোকাও তার বিশেষ খাবার।”

পোকার সন্ধানে অপেক্ষমান তাইগা-চুটকি। ছবি: ইনাম আল হক

পোকার সন্ধানে অপেক্ষমান তাইগা-চুটকি। ছবি: ইনাম আল হক


 

পাখিটিকে চেনার উপায় সম্পর্কে ইনাম আল হক বলেন, “এই পাখিটি টুনটুনির চেয়ে ছোট। ‘চিরিক-চিরিক’ করে ডাকে। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১১ সেন্টিমিটার। বাদামি দেহ। মাথা, পিঠ, ডানা ও লেজ ধুসর। কোমর কালো। খাবার সময় সে দোয়েলের মতো ওর লেজটি একটু পরে পরে পিঠের উপর বারবার উঠায়। ওর চোখগুলো অপেক্ষাকৃত বড় বড়। বেশ চঞ্চলপ্রকৃতির। এর ডানা দু’টো সাধারণত লেজের নিচে নামানো থাকে। অন্যপাখির ডানা কিন্তু লেজে সমান্তরাল থাকে। ডালে বসলে ওর ডানাগুলো লেজের নিচে ঝুলিয়ে রাখে।”

‘‘আরেকটি উল্লেখযোগ ব্যাপার হলো, পুরুষ পাখিটির গলায় প্রজনন মৌসুমে হালকা কমলা রঙ হয়। আমাদের দেশে ওরা যখন আসে তখন আর সেই রঙটি থাকে না। কিন্তু আশ্বিনে আমাদের দেশে আসলেও কোনো কোনো পুরুষ পাখির গলার ওই কমলা রঙের পালকগুলো ঝরে যায় না, অনেক সময় থেকে যায়। তখন খুব সহজে বোঝা যায় এটি পুরুষ তাইগা-চুটকি। যদিও অন্য চুটকি প্রজাতির পাখির সাথে ‘তাইগা-চুটকি’র কিছুটা মিল আছে। কিন্তু অন্য প্রজাতির চুটকিগুলো খুবই কম দেখা যায়। বেশি দেখা যায় এই ‘তাইগা-চুটকি’।”

‘তাইগা-চুটকি’ আমাদের জন্য বিশেষ একটি পাখি এই জন্য যে এরা আমাদের দেশে দীর্ঘ ৯ মাস অবস্থান করে এবং এদের সংখ্যা লক্ষের উপরে। কিন্তু এই পাখিটিকে কেউই চেনে না। গ্রামে-গঞ্জে তো আছেই, প্রতিটি শহরেও এরা আছে। লোকে এ পাখিটাকে ভুল করে ‘টুনটুনি’ভেবে ধরে নেয় বলে জানান প্রখ্যাত পাখিবিদ ইনাম আল হক।

   

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;

৪ লাখ বছর আগে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

ছবি: সংগৃহীত, নিউ সায়েন্টিস্ট থেকে

  • Font increase
  • Font Decrease

৪ লাখ বছর আগে রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আদিম মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলে নতুন এক গবেষণা থেকে জানা গেছে। এখান থেকে যাত্রা শুরু করে এই গোত্রের মানুষ পরে উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায়।

নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, সাইবেরিয়ায় নতুন একটি এলাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ৪ লাখ ১৭ হাজার বছর আগে হোমিনিনস (Hominins) গোত্রের মানুষের উপস্থিতি ছিল। এই গোত্রের মানুষ ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বাস করতেন। সেখান থেকে তারা উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে যায় বলে জানিয়েছেন চেক প্রজাতন্ত্রের এক গবেষক।

১৬ এপ্রিল চেক অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক জন জেনসেন এক সংবাদ সম্মেলন করে নতুন এ তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষণাবিষয়ক সংবাদ সাময়িকী নিউ সায়েন্সটিস্ট এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জন জেনসেন বলেন, আমরা আগে যে ধারণা করতাম, তারও আগে থেকে হোমিনিনস গোত্রের মানুষ সাইবেরিয়ার ডিরিং ইউরিআখ এলাকায় বসবাস করতেন। ৪ লাখ ১৭ বছর আগে থেকেই তারা এই এলাকায় বসবাস করতে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অবস্থান ছিল উত্তর অক্ষাংশে।

তিনি বলেন, আরেকটি আদিম গোত্রের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা আর্কটিক অঞ্চলে বাস করতেন। ৪৫ হাজার বছর আগে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

;